সুকান্ত ভট্টাচার্যের জন্ম ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই আগস্ট। তার ভিত্তিক নিবাস গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়ায়। তার পিতার নাম নিবারণ চন্দ্র ভট্টাচার্য ,মায়ের নাম সুনিতি দেবী।
ছোটবেলা থেকে সুক্রান্ত ছিলেন অত্যন্ত রাজনীতি সচেতন ইনি দৈনিক স্বাধীনতার কিশোর সভা অংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন এবং মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত এর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
সুকান্ত তার কাব্য অন্যায় অবিচার শোষণ বঞ্চনার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ বিপ্লব ও মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে তার কবিতা মুক্তিরকামী বাঙালির মনে বিশেষ শক্তি ও সাহস যুগিয়েছে।
ছাড়ছাত্র তার বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ। তার অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ ঘুম নেই, পূর্বাভাস।
অন্যান্য রচনাঃ অভিযান মিঠেকরা, হরতাল ইত্যাদি। তিনি মেসি বিরোধী লেখক শিল্পী সংঘের পক্ষে আকাল নামে একটি কাব্যগ্রন্থ সম্পাদনা করেন।
১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৩ই মে মাত্র ২১ বছর বয়সে প্রতিভাবান এ কোভিদ অকাল মৃত্যু হয়।
১৮ বছর বয়স কি দুঃসহ স্পর্দায় নেয় মাথা তুলবার ঝুঁকি, ১৮ বছর বয়সে গ্রহ বিরাট দুধসাহসেরা দেয় যে উকিল। ১৮ বছর বয়সের সেই ভয় পদাঘাতে চার ভাংতে পাথর বাধা, এর বয়সে কেউ মাথা নোয়াবার নয় ১৮ বছর বয়স জানে না কাদা ।
এর বয়সে জানে রক্তদানের পূণ্য পাম্পের বেগে স্টিমারের মতো চলে প্রাণ দেওয়া-নেওয়া ভুলি টা থাকে না শূন্য শপে আত্মাকে শপথের কোলাহলে ।
১৮ বছর বয়স ভয়ংকর তাজা তাজা প্রাণে অসহ্য যন্ত্রণা এ বয়সে প্রান তীব্র আর প্রখর এ বয়সে কানে আসে কত মন্ত্রনা ১৮ বছর বয়স যে দুর্বার পথে প্রান্তরে ছুটায় বহু তুফান।
দুর্যোগে হাল ঠিক মত রাখা ভার , কত বিক্ষত হয় সহস্র প্রাণ ১৮ বছর বয়স আঘাত আসে অভিশ্রান্ত একে একে ছয় জড়ো, এ বয়স কালো লক্ষ দীর্ঘশ্বাসে এ বয়স কাঁপে বেদনায় তবুও আঠারোর শুনেছি ছয় ধবনি এ বয়সে বাসে দুর্যোগে আর ঝড়ে বিপদের মুখে এ বয়স অগ্রণী এর বয়স তবু নতুন কিছু তো করে।
যেন ভীরু কাপুরুষ নয়। পথ চলতে এর বয়স যায় না থেমে এস বয়সে তাই নেই কোন সংশয়– এ দেশের বুকে ১৮ আসুক নেমে। আঠারো বছর বয়স কী দুঃসহ এ বয়স মানব জীবনের এক উত্তোলনকালীন পর্যায়।
কৈশোর থেকে যৌবনের পদার্পণ করে মানুষকে বয়সে। অন্যদের ওপর নির্ভরশীলতা পরিহার করে নিজের পায়ে দাঁড়া নোর প্রস্তুতি নিতে হয় তাকে।
এ সময় থেকে থাকে তাকে এক কঠিন ও দুঃখ সহ অবস্থায় পড়তে হয়। স্পর্ধায় নেয় মাথা তুলোবার ঝুঁকি অন্যের ওপর নির্ভরশীলতা পরিহার করে।
মাথা উঁচু করে স্বাধীন ভাবে চলার ঝুঁকি এর বয়সে মানুষ নিয়ে থাকে। বিরাট দুঃসাহসেরা দেয় যে উকি নানা দুঃসাহসী স্বপ্ন কল্পনা ও উদ্যোগ এ বয়সে তরুণদের মনকে ঘিরে ধরে। আঠারো বছর বয়স জানে না কাদা যৌবনের পদার্পণ করে এ বয়সে মানুষ আত্মপ্রত্যয়ী হয়।
জীবনের মুখোমুখি দাঁড়ায় স্বাধীনভাবে। শৈশব কৈশোরের পরনির্ভরতার দিনগুলোতে যে কান্না ছিল এ বয়সে স্বভাব বৈশিষ্ট্য থাকে সচেতন সচেতনভাবে মুছে ফেলতে উদ্যোগী হয়।
এ বল জানে রক্তদানের শূন্য যে জাতি ও মানবতার জন্য যুগে যুগে সবচেয়ে বেশি। জীবনে ঝুঁকি নিয়ে দাঁড়িয়েছে সমস্ত বিপদ মোকাবেলায়।
প্রাণ দিয়েছে অজানাকে জান বার জন্য, দেশ ও জনগণের মুক্তি ও কল্যাণের সংগ্রামে । তাই এই বল সুন্দর শুভ ও কল্যাণের জন্য রক্ত মূল্য দিতে জানে।
সপে আত্মাকে শপথের কোলাহলে তারুণ্য স্বপ্ন দেখে নতুন জীবনের নব নব অগ্রগতি সাধনের। তাই এইসব স্বপ্ন বাস্ত বায়নের নিত্য নতুন করণীয় সম্পাদনের জন্য নব নব শপথের বলিয়ান হয়ে তরুণ প্রাণ এগিয়ে যায় দঢ় পদক্ষেপে।
তা জাতাজা প্রাণে অসহ্য যন্ত্রণা চারপাশের অন্যায় অত্যাচার শোষণ কিরণ সামাজিক বৈষম্য ও ভেদাভেদ ইত্যাদি দেখে প্রাণ বন্ত তরুণ্যেরা শুদ্ধ হয়ে ওঠে।
পাঠ পরিচিতি
সুকান্ত ভট্টাচার্যের ১৮ বছর বয়স কবিতাটি ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত তার ছাড়পত্র কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে। এ কবিতায় কবি নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে বয়ানসন্ধিকালের বৈশিষ্ট্যকে তুলে ধরেছেন।
কৈশোর থেকে যৌবনে পদার্প ণের এ বয়স কি উত্তেজনার প্রবল আবেগ ও উচ্ছ্বাসে জীবনের ঝুঁকি নেবার উপযোগী ।
এ বয়স অদম্য দুঃসাহ সে সকল বাধা বিপদকে পেরিয়ে যাওয়ার এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার জন্য প্রস্তুত । এদের ধর্মই হল আত্মত্যা গের মহান মন্ত্রী উজ্জীবিত হওয়া।
আঘাত সংঘাতের মধ্যে রক্ত শপথ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া পাশাপাশি সমাজ জীবনের নানা বিকার অসুস্থতা ও সর্বনাশের অভিজ্ঞতে হয়ে উঠতে পারে এরা ভয়ংকর।
কিন্তু এ বয়সে আছে সমস্ত দুর্যোগ আর দুবিপাক মোকাবেলা করার অদম্য প্রানশক্তি। ফলের তারুণ্য ও যৌবন শক্তি দুর্বার বেগে এগিয়ে যায় প্রগতির পথে।
যৌবনের উদ্দীপনা সাহসিকতা দুর্বার গতি নতুন জীবন রচনার স্বপ্ন এবং কল্যাণ ব্রত এসব বৈশিষ্ট্যের জন্য কবি প্রত্যাশা করেছেন নানা সমস্যা পীড়িত দেশে তারুণ্য ও যৌবন শক্তি যেন জাতীয় জীবনে চালি তাশক্তি হয়ে দাঁড়ায় 18 বছর বয়স কবিতাটির মাএাবৃত ছন্দে রচিত