ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) শব্দটা বর্তমান বাংলাদেশের মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয় একটি শব্দ। বর্তমানে ঘরে বাহিরে অনেকেই ফ্রিল্যান্সিং পেশার সাথে যু্ক্ত । অনেকে তো লাখ লাখ টাকাও ইনকাম করছে ফ্রিল্যান্সিং করে। বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যেখানে ১৭-১৮ বছর পড়াশোনা করে ডিগ্রী অর্জন করেও মামা চাচা ছাড়া ২৫-৩০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি যোগার করাটাও অনেকটা অসাধ্য হাসিল করার মত একটি কাজ, সেখানে ঘরে বসে লাখ লাখ টাকার ইনকামের ব্যাপারটা তো আলাদিনের চেরাগের সমতুল্য।
আলাদিনের চেরাগ ভাবুন আর যাই ভাবুন ব্যাপারটা কিন্তু শতভাগ সত্য। আর তাই এখন অনেকেই পড়াশোনা শেষ করে বেশিদিন গতানুগতিক চাকরির পিছে না ঘুরে ফ্রিল্যান্সিংয়ের দিকে ঝুকে পড়ছে। বিশেষ করে তরুনদের মাঝে ফ্রিল্যান্সিংয়ের আগ্রহটা সবচেয়ে বেশি। তবে ফ্রিল্যান্সিংয়ে যেমন সফলতা রয়েছে তেমনিই ব্যর্থতার হারও কিন্তু নিহাতই কম নয়। নতুন অবস্থায় অনেক তরুনেরই ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ের উপর বেশ কিছু কমন প্রশ্ন থাকে, এবং সাথে তাদের দরকার হয় একটা ছোট গাইডলাইন যার মাধ্যমে তারা তাদের ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে এবং সফল হতে পারবে।
আর তাই আজকে আমরা আমাদের এই আটির্কেলটি এমনভাবে সাজিয়েছি যাতে ফ্রিল্যান্সিং কি, এবং ফ্রিল্যান্সিংয়ের উপর নতুনদের জন্য একটি পরিপূর্ণ গাইডলাইনের পাশাপাশি তাদের যে কমন প্রশ্ন গুলো থাকে সেগুলোর উত্তরও পেয়ে যায়। তাই একটু সময় নিয়ে হলেও পুরো আটির্কেলটি পড়ার চেষ্টা করবেন।
ফ্রিল্যান্সিং কি? (What is Freelancing)
মূলত কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহার করে নির্দিষ্ট পারিশ্রমিকের বিনিময়ে অন্যের কাজ করে দেওয়াকেই ফ্রিল্যান্সিং বলে। যেটি প্রথম শুরু হয়েছিল ১৯৯৮ সালের দিকে। প্রথম একটি মার্কেটপ্লেস(marketplace) চালু হয়েছিল যেখান থেকেই ফ্রিল্যান্সিংয়ের সূচনা হয়। ফ্রিল্যান্সিং এ দুটি পক্ষ থাকে একটি ক্লায়েন্ট(client) বা বায়ার পক্ষ আর অন্যটি সেলার বা ফ্রিল্যান্সার পক্ষ। যারা কাজ দিয়ে থাকে তাদেরকে ক্লায়েন্ট বা বায়ার বলে। আর যারা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কাজ করে দেয় তাদেরকে সেলার বা ফ্রিল্যান্সার (freelancer) বলে।
এখানে ধরা বাধা কোন টাইম বা রুলস নেই। আপনার ইচ্ছা হলে কাজ করবেন না হলে করবেন না। ক্লায়েন্ট আপনাকে কাজ দিবে, তার আগে সেই কাজের জন্য নির্ধারিত সময় ও টাকার পরিমাণ দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা মাফিক নির্ধারণ হয়ে থাকে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আপনি কাজ শেষ করে দিবেন এবং ক্লায়েন্ট আপনাকে সেই কাজের জন্য প্রাপ্য টাকা বুজিয়ে দিবে ব্যস কাজ শেষ। আশার করি আপনারা ফ্রিল্যান্সিং কি এই বিষয়টা ক্লিয়ার হয়েছেন।
ফ্রিল্যান্সিং এ কি কি কাজ করা যায়
ফ্রিল্যান্সিং কি এই বিষয়টা আমরা বুঝতে পারলাম, এখন এই ফ্রিল্যান্সিং করে কি কি কাজ করা যায় সেই সম্পর্কে আলোচনা করব। ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য হাজারও কাজ রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:-
- এন্ডয়েট ডেভেলপমেন্ট
- কন্টেন্ট রাইটার
- ডাটা এন্ট্রি
- ইমেইল মার্কেটিং
- গ্রাফিক্স ডিজাইন
- ওয়েব ডিজাইন
- লগো ডিজাইন
- মোবাইল এপ ডেভেলপমেন্ট
- এসইও
- ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
- টেকনিক্যাল রাইটিং
- ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপমেন্ট
- সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট
- ডিজিটাল মার্কেটিং
- ফেসবুক মার্কেটিং
- কপি রাইটার
- প্রোগ্রামিং
- ভিডিও ইডিটিং
ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) শুরু করতে চাইলে
ফ্রিল্যান্সিং(Freelancing) শুরু করার মূলমন্ত হলো ইচ্ছা শক্তি ও ধৈর্য্য এবং নিজে নিজে বিভিন্ন বিষয় রিসার্চ করে বুজে নেওয়ার ক্ষমতা । ফ্রিল্যান্সিং এ শুরুর দিকেই আপনাকে বেশ কিছু বাধার সম্মুখিন হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকে। তখন ভেঙে না পরে লেগে থাকার মানসিকতা এবং বার বার চেষ্টা ও চর্চার মাধ্যমে সফলতা অর্জনের মনমানসিকতা থাকতে হবে। শুরুতেই হাজার হাজার টাকা আয় করার মন মানসিকতা বর্জন করতে হবে।
যে যে যোগ্যতা লাগবে?
- অনলাইনে করা যায় এমন একটি কাজে পরিপূর্ণ জ্ঞান ও দক্ষতা থাকতে হবে।
- কমিউনিকেশন স্কিল অর্থাৎ ইংরেজি ভাষায় যোগাযোগ করার মত দক্ষতা থাকতে হবে।
- ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান বের করার দক্ষতা থাকতে হবে।
- একটানা লেগে থাকার মনমানসিকতা থাকতে হবে।
- এডুকেশন ব্যাকগ্রাউন্ড থাকলে ভালো। (অবশনাল)
সবার প্রথমে আপনাকে অনলাইনে করা যায় ও মার্কেটপ্লেসে চাহিদা রয়েছে এমন একটি কাজে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। তার জন্য আপনি কোন বিশ্বস্ত টেনিং সেন্টারে ভর্তি হতে পারেন অথবা আপনার ইচ্ছা শক্তি প্রখর হলে ইন্টারনেট ব্যবহার করে গুগল ও ইউটিউব থেকে টিউটোরিয়াল দেখেও যে কোন একটি কাজে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন। এর জন্য ৩-৬মাস সময় ইনভেস্ট করতে হবে। আর ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে বেশিবভাগ কাজগুলো দিয়ে থাকে অবাঙ্গালীরা তবে তাদের বেশিরভাগই ইংরেজি বুজে। তাই আপনাকে কাজ শিখার পাশাপাশি ইংরেজিতে যোগাযোগ করার দক্ষতাটাও কিছুটা আয়েত্তে নিয়ে আসতে হবে।
যে কোন একটি কাজে ও ইংরেজি ভাষার উপর যদি আপনার আয়ত্ত চলে আসে তখন আপনি কাজ করার জন্য বা ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করার জন্য প্রস্তুত। তখন আপনি যে কোন একটি মার্কেটপ্লেসে আপনার নিজের নামে একাউন্ট তৈরি করে আপনার প্রোফাইল প্রস্তুত করতে পারেন এবং অপেক্ষা করতে পারেন আপনার প্রথম কাজটির জন্য। কাজ পাওয়ার পর আপনি নানান সমস্যার সম্মুখিন হতে পারেন এমনও কিছু কাজ আপনি পেয়ে যেতে পারেন যেগুলো সম্পর্কে আপনার ধারণা কিছুটা কম ছিল তখন সেই সকল সমস্যা গুলোর সমাধান আপনার নিজেকেই বের করতে হবে ইন্টারনেট ব্যবহার করে গুগল ও ইউটিউব থেকে।
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস (Freelancing Marketplace)
এতক্ষণ পর্যন্ত হয়ত অনেকেই মার্কেটপ্লেস (marketplace) শব্দটা শুনতে শুনতে থিতু হয়ে গেছেন কিন্তু আপনি এখনো পর্যন্ত জানেনই না যে মার্কেটপ্লেস আসলে কি?
মার্কেটপ্লেস হলো ঐসমস্ত ওয়েবসাইট যেখানে ক্লাইয়েন্টরা তাদের কাজ করানোর জন্য ফ্রিল্যান্সার খুজে পায় এবং ফ্রিল্যান্সারাও ক্লায়েন্ট খুজে পায় কাজ করে দেওয়ার জন্য। এসব মার্কেটপ্লেসের কোন সীমারেখা নেই । এখানে পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত বা দেশ থেকে মানুষ কাজ করাতে আসতে পারে আবার যে কোন প্রান্ত বা দেশ থেকে মানুষ কাজ করতেও আসতে পারে।
সাধারণত একজন ক্লায়েন্ট যে কোন একটি মার্কেটপ্লেসে তার প্রয়োজনীয় একটি জব পোস্ট করে কিছু সময়ের জন্য, তারপর সেই সময়ের মধ্যে সেখানে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সারা বিট করে আগ্রহ প্রকাশ করে তার কাজটি করে দেওয়ার জন্য। তখন সেই ক্লায়েন্ট সেখানে থেকে তার পছন্দ মত যেকোন একজনের সাথে কথা বলে কাজ করানোর জন্য হায়ার করে। আর এসব ক্ষেত্রে ক্লায়েন্টরা ফ্রিল্যান্সার বাছাইয়ে সময় তাদের অভিজ্ঞতা ও প্রোফাইল কেমন সেই দিকটি নজর দিয়ে থাকে।
ফ্রিল্যান্সিং জব করার জন্য কিছু জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস
ফিল্যান্সিং জব করার জন্য হাজার হাজার মার্কেটপ্লেস রয়েছে তাদের মধ্যে সেরা কয়েকটি মার্কেটপ্লেস হলো :-
- আপওয়ার্ক – upwork
- ফ্রিল্যান্সার – freelancer
- পিপলপারআওয়ার – peopleperhour
- ফাইবার – fiverr
- নাইনটিনাইনডিজাইন – 99designs
- আইরাইটার – iwriter
কাজ শেষে এইসকল মার্কেটপ্লেসগুলো কিছু অর্থ কেটে রাখে ।
কোন কাজটা শিখবো? কোনটা শিখে সহজে আয় করা যায়
নতুন অবস্থায় প্রায় সকলেই এই ধররেন প্রশ্ন করে থাকে। প্রশ্ন আসাটাই স্বাভাবিক কারণ আমাদের মধ্যে বেশিরভাগেরই ফ্রিল্যান্সিং করার প্রধান ইনটেনশন থাকে টাকা আয় করা। আর সবাই চায় খুব সহজে টাকা আয় কিভাবে করা যায়।
তবে একটা কথা বলে রাখা উচিত যে আপনি যদি ভেবে থাকেন ফ্রিল্যান্সিং মানেই সহজ তেমন কোন কষ্ট নাই, বসে বসে লাখ লাখ টাকা ইত্যাদি ইত্যাদি তাহলে আপনি সম্পূর্ণই ভুল ভেবেছেন। অন্য আট-দশটা পেশার মতই ফ্রিল্যান্সিংও আপনাকে কষ্ট করে কাজ করে টাকা আয় করতে হবে। এখানে সহজ তেমন কিছুই নেই।
তবে আপনি যদি অভিজ্ঞ কাউকে জিজ্ঞেস করেন যে, ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য সবচেয়ে সহজ কাজ কোনটি খুব স্বাভাবিকই সেই অভিজ্ঞ ব্যাক্তি যে কাজটি করেন বা পারেন সেটিই আপনাকে সাজেস্ট করবে। কারণ তার কাছে সেই কাজই এখন সবচেয়ে সহজ বলে মনে হবে। কিন্তু আপনার জন্য সেটা যথেস্ট সহজ নাও হতে পারে।
তাই আপনি কিছুদিন সময় নিয়ে বেশ কয়েকটা ফ্রিল্যান্সিং কাজ সম্পর্কে কিছুটা ধারণা নিতে পারেন তারপর আপনি নিজেই বুজে যাবেন আসলে কোন কাজটা আপনার জন্য সবচেয়ে সহজ ।
এখন আসা যাক দ্বিতীয় প্রশ্নে, যে কোন কাজটা করে সহজে আয় করা যায়?
উপরে উল্লিখিত উপায়ে আপনার কাছে যে কাজটা সবচেয়ে সহজ মনে হবে প্রকৃতপক্ষে সেই কাজটি করেই আপনার জন্য সবচেয়ে সহজে আয় করা সম্ভব হবে।
সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়া কিংবা সহজে কাজ পাওয়ার উপায়
এমন অনেক ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন যারা মাত্র ১-২বছর ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে ১-২হাজার কিংবা তারও বেশি ডলার আয় করছেন । আবার এমন ফ্রিল্যান্সারও রয়েছেন যারা অনেক বছর ধরে কাজ করেও মাসে দুই -তিনটি প্রজেক্ট পেতেই হিমসীম খাচ্ছে। এমন ফ্রিল্যান্সার হলে কিন্তু চলবে না।
তাই আপনাকে কিছু বিষয় খেয়াল রেখে ফ্রিল্যান্সিং করতে হবে।
১/ অবশ্যই ভালোভাবে কাজ শিখে তারপর ফ্রিল্যান্সিং করা আরম্ভ করতে হবে । বাংলাদেশে এমন অনেক কোচিং সেন্টার রয়েছেন যারা স্টুন্টেডদের ভালো ভাবে কাজ না শিখিয়েই মার্কেটপ্লেসে জয়েন হতে বলেন ফলে তারা কোন কাজ পায় না বা পেলেও সঠিক অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান না থাকার ফলে কাজগুলো কম্পিলিট করতে পারে না।
২/ পোর্টফলিও তৈরি করে রাখুন। আপনি যে একটি কাজে দক্ষ তার প্রমাণস্বরূপ আপনি আগে থেকেই কিছু ডেমো কাজ করে রাখুন এবং সেগুলো আপনার ক্লায়েন্টকে দেখান এতে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যাবে।
৩/ ফ্রিল্যান্সার মার্কেটপ্লেগুলোতে সঠিক ও সুন্দরভাবে নিজের প্রোফাইল তৈরি করুন।
৪/ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনার প্রোফাইলের লিংকটি শেয়ার করুন এতে করে আপনি বেশ কিছু ক্লায়েন্ট ও জব অফার পেয়ে যেতে পারেন ।
কিভাবে আয় করা টাকা হাতে পাবেন?
বাস্তব জগৎতের মত ইন্টারনেটেও ভালো মন্দ লোক রয়েছে তাই আপনি যদি আপনার প্রারিশ্রমিক নিজের কাছে বুঝে পাওয়ার প্রক্রিয়াটা না জানেন তাহলে মাঝে মাঝেই আপনি বোকা বনে যেতে পারেন। সাধারণত তিনটি উপায়ে সব ধররেন মার্কেটপ্লেস থেকে প্রাপ্য টাকা তোলা যায়।
- ব্যাংক ট্রান্সফার
- পাইনিওর
- পেপাল
এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো পেপাল তবে দুঃখ এটা বাংলাদেশে এখনো অনুমধিত নয়। হতাশ হওয়ার কিছু নেই বাকি দুটি উপায় তো রয়েছে । আপনি চাইলে সরাসরি আপনার বাংক একাউন্টে ট্রান্সফার করার মাধ্যমে টাকা হাতে পেতে পারেন। অনেক মার্কেটপ্লেসে এই সুবিধাটা নাও থাকতে পারে তখন আপনাকে পাইনিওর এর মাধ্যমে আপনার ব্যাংক একাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করে নিতে হবে।
কাদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং নয়
- যারা ১-২মাসের মধ্যে লাখ লাখ টাকা ইনকাম করতে চান।
- যারা সহজে আয় করার কথা ভাবছেন।
- যাদের কাছে টাকাই মুখ্য কাজ নয়।
- যারা প্ররিশ্রম করতে চায় না।
- যারা বসে বসে লাখ লাখ টাকা ইনকামের স্বপ্ন দেখছেন।
- যারা ভাবছেন ফ্রিল্যান্সিং মানেই সহজ কিছু, আর কারিকারি টাকার খেলা।
কারা ফ্রিল্যান্সিং করে ভালো করতে পারবেন।
- যারা সৎ পথে প্ররিশ্রম করে টাকা আয় করতে চান।
- অতিরিক্ত লোভ নেই যাদের।
- যারা প্রচুর ধৈর্য্যশীল এবং অল্পতেই ভেঙে পরে না বা হাল ছেড়ে দেয় না।
- নতুন কিছু শিখার প্রতি যাদের প্রবল আগ্রহ রয়েছে।
- যারা শর্টকাট খুজে না বরং কষ্ট করে জীবনে কিছু অর্জন করতে চায়।
- যারা ফ্রিল্যান্সিংকে আসলেই সিরিয়াস পেশা হিসেবে নিবেন।
ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে কিছু ভুল ধারণা
- লোভনীয় বিজ্ঞাপন দেখে ১-২মাস কোর্স করলেই সফল হওয়া সম্ভব বা লাখ লাখ টাকা ইনকাম করা সম্ভব।
- ফ্রিল্যান্সিং মানেই তেমন কঠিন কিছু না ।
- ফ্রিল্যান্সিং মানেই টাকা আর টাকা।
- ফ্রিল্যান্সিং মানেই কম্পিউটার ব্যাকগ্রাউন্ড বা আইটি ব্রাকগ্রাউন্ডের হতে হবে।
- দিনে মাত্র ২ঘন্টা সময় দিলেই ফ্রিল্যান্সিং করা সম্ভব বা সফল হওয়া সম্ভব।
ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং এর মধ্যে পার্থক্য
অনেকেই ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং(outsourcing) এর মধ্যে পার্থক্য খুজেন । কারণ আমাদের চারপাশে নানান প্রতিষ্ঠানের লোভনীয় সব বিজ্ঞাপন, যেখানে লেখা থাকে ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং (outsourcing) এর কাজ শিখানো হবে। তাই অনেকেই কিছুটা কনফিউস হয়ে যায়।
আমরা এই আটির্কেলের শুরুতেই আলোচনা করেছি যে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে দুটি পক্ষ থাকে একটি ক্লায়েন্ট পক্ষ অর্থাৎ যিনি কাজ দিবেন । আর একটি সেলার বা ফ্রিল্যান্সার পক্ষ অর্থাৎ যারা কাজ করে দিবে।
- এখানেই যারা কাজ করে দেয় তাদেরকে ফ্রিল্যান্সার বলা হয় অর্থাৎ তারাই ফ্রিল্যান্সিং করছে। তারমানে ফ্রিল্যান্সাররাই ফ্রিল্যান্সিং করে ।
- আর যারা কাজ করিয়ে নিচ্ছে তারাই আউটসোর্সিং করছেন । অর্থাৎ যারা ক্লায়েন্ট তারাই আউটসোর্সিং করছেন।
সর্বশেষ কিছু পরামর্শ
একজন সফল ফ্রিলান্সার হতে হলে আপনাকে অনেকটা ডেডিকেটেড হতে হবে। কাজ শেখার পিছনে প্রচুর সময় দিতে হবে । আপনি যত সময় দিতে পারবেন আপনার সফলতার হার তত বেশি থাকবে।
লোভনীয় বিজ্ঞাপনের কোচিং সেন্টারগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। কোনো কোচিং সেন্টারে ভর্তি হওয়ার আগে তাদের রেপুটেশন দেখে নিন।
যারা অতিরিক্ত লোভ দেখায় তাদেরকে এড়িয়ে চলুন। অথবা যারা অল্প দিনে অনেক টাকা আয় করার কথা বলে তাদেরকে পরিত্যাগ করুন। আপনার প্রধান এনটেনশন থাকবে কাজ শিখার প্রতি। মনে রাখবেন আপনি যত ভালো কাজ করতে পারবেন আপনার সফল হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি।
যতটুকু সম্ভব নিজে নিজে শেখার চেষ্টা করুন । বর্তমানে গুগল ইউটিউবে ফ্রিল্যান্সিং শিখার রিসোর্সের কোন কমতি নেই তাই আপনি একটু ঘাটাঘাটি করলে প্রচুর রিসোর্স পেয়ে যাবেন। সেখান থেকে শিখার চেষ্টা করুন এতে আপনার কাজের দক্ষতার পাশাপাশি ইন্টারনেট চালোনায় বা ইন্টারনেট থেকে কোন কিছু খুজে বের করার মত চমৎকার একটি স্কিল ডেভেলপ হয়ে যাবে। আশা করি আপনারা ফ্রিল্যান্সিং কি তা ভালভাবে বুঝতে পেরেছেন। আপনাদের যদি ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে কোন মতামত থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।