সিরাজউদ্দৌলা ছিলেন বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন নবাব। তিনি ১৭৫৬ থেকে ১৭৫৭ সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেছিলেন। তার রাজত্বের সমাপ্তির পর বাংলা এবং পরবর্তীতে প্রায় সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশের উপর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের সূচনা হয়।
সিরাজউদ্দৌলা ১৭৩২ সালে মুর্শিদাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন নবাব আলীবর্দী খানের নাতি। ১৭৫৬ সালে আলীবর্দী খানের মৃত্যুর পর সিরাজউদ্দৌলা মাত্র ২৩ বছর বয়সে বাংলার নবাব হন।
সিরাজউদ্দৌলা ছিলেন একজন সাহসী এবং দক্ষ শাসক। তিনি বাংলার অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার জন্য অনেক পদক্ষেপ নেন। তিনি বাংলার সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নের জন্যও কাজ করেন।
১৭৫৭ সালে সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে পলাশীর যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধে সিরাজউদ্দৌলা ইংরেজদের কাছে পরাজিত হন। পরাজয়ের পর সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করা হয়।
সিরাজউদ্দৌলা ছিলেন একজন বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব। অনেকে তাকে একজন দেশপ্রেমিক হিসেবে মনে করেন, আবার অনেকে তাকে একজন স্বৈরাচারী হিসেবে মনে করেন। তবে তার রাজত্ব ভারতীয় ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
সিরাজউদ্দৌলা মাত্র ২৩ বছর বয়সে সিংহাসনে বসেন। তিনি ১৭৫৬ সালের ১০ জুলাই তার নানা নবাব আলীবর্দী খানের মৃত্যুর পর সিংহাসনে আরোহণ করেন।
সিরাজউদ্দৌলার পুরো নাম কি
তিনি ছিলেন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব। তার রাজত্বকাল ১৭৫৬ থেকে ১৭৫৭ সাল পর্যন্ত। পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজদের কাছে তার পরাজয়ের পর বাংলায় ইংরেজ শাসনের সূচনা হয়।
সিরাজউদ্দৌলার জন্ম ১৭৩৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর। তিনি ছিলেন বাংলার নবাব আলীবর্দী খানের নাতি। আলীবর্দী খানের কোন পুত্র সন্তান ছিল না। তার ছিল তিন কন্যা। সিরাজউদ্দৌলা আলীবর্দী খানের তৃতীয়া কন্যা আমেনা বেগমের গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন।
সিরাজউদ্দৌলা ছিলেন একজন উচ্চাভিলাষী এবং দক্ষ শাসক। তিনি বাংলার অর্থনীতি এবং সামরিক শক্তিকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করেন। তিনি বাংলার জনগণের জন্য অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেন।
পলাশীর যুদ্ধে সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় ছিল বাংলার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই যুদ্ধের ফলে বাংলায় ইংরেজ শাসনের সূচনা হয় এবং বাংলার স্বাধীনতা হারিয়ে যায়।
সিরাজউদ্দৌলার পক্ষে কারা ছিল?
তিনি বাংলার অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার জন্য অনেক পদক্ষেপ নেন। তিনি বাংলার সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নের জন্যও কাজ করেন। এইসব কারণে বাংলার জনগণ তার পক্ষে ছিল।
সিরাজউদ্দৌলার প্রধান সেনাপতি মীর মদন ছিলেন একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ সেনাপতি। তিনি পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজদের বিরুদ্ধে বীরোচিতভাবে লড়াই করেছিলেন।
মোহন লাল ছিলেন একজন সাহসী ও বুদ্ধিমান সেনাপতি। তিনিও পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজদের বিরুদ্ধে বীরোচিতভাবে লড়াই করেছিলেন।
পলাশীর যুদ্ধে সিরাজউদ্দৌলার পক্ষে ছিল প্রায় ৬৫,০০০ সৈন্য। ইংরেজদের পক্ষে ছিল মাত্র ৩,০০০ সৈন্য।
কিন্তু সিরাজউদ্দৌলার প্রধান সেনাপতি মীর মদন যুদ্ধের মাঝখানে নিহত হন। এছাড়াও সিরাজউদ্দৌলার আরেকজন প্রধান সেনাপতি মীর জাফর ইংরেজদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেন।
এইসব কারণে সিরাজউদ্দৌলা পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজদের কাছে পরাজিত হন।
সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের ফলে বাংলার স্বাধীনতা হারিয়ে যায়। বাংলার শাসনভার ইংরেজদের হাতে চলে যায়।
সিরাজউদ্দৌলার কবে কলকাতা আক্রমণ করেন?
সিরাজউদ্দৌলা ১৭৫৬ সালের ২০ জুন কলকাতা আক্রমণ করেন। এই আক্রমণে কলকাতা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দখল থেকে মুক্ত হয়।
কলকাতা আক্রমণের ফলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ভারতে ঔপনিবেশিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরিকল্পনা ব্যাহত হয়।
সিরাজউদ্দৌলা কলকাতা আক্রমণের কারণ ছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অসদাচরণ। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার অর্থনীতিতে হস্তক্ষেপ করছিল এবং বাংলার জনগণের ওপর শোষণ চালাচ্ছিল।
সিরাজউদ্দৌলা এই অসদাচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর জন্য কলকাতা আক্রমণ করেন।
কলকাতা আক্রমণে সিরাজউদ্দৌলার সেনাবাহিনী ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাবাহিনীকে পরাজিত করে। কলকাতা শহর দখল করে নেওয়া হয়। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদেরকে বন্দী করা হয়।
কলকাতা আক্রমণ সিরাজউদ্দৌলার একটি সাহসী পদক্ষেপ ছিল। এই আক্রমণ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিরুদ্ধে ভারতীয়দের প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে ওঠে।