কেন বদলে গেল ‘হুররাম সুলতান’?
- ঐতিহাসিক সঠিকতা: হুররাম সুলতান ছিল তার জন্মের নাম নয়। তার আসল নাম ছিল আলিয়া জারহান। হুররাম ছিল তার একটি উপাধি, যার অর্থ “সাতটি রঙের গোলাপ”। সুলতানের স্ত্রী এবং মা হিসেবে, তাকে “হাসেকি সুলতান” নামেও ডাকা হত। হাসেকি সুলতান ছিল একটি উচ্চতর উপাধি, যা সুলতানের প্রধান স্ত্রীকে দেওয়া হত।
- সমাজীয় পরিবর্তন: ১৯৯০-এর দশকের পর থেকে, তুরস্কে নারী অধিকারের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এই পরিবর্তনের ফলে, অনেক মানুষ মনে করেন যে হুররাম সুলতান নামটি পুরুষতান্ত্রিক এবং নারীর প্রতি অসম্মানজনক। হাসেকি সুলতান নামটি আরও প্রগতিশীল এবং নারীবাদী বলে বিবেচিত হয়।
- জনপ্রিয় সংস্কৃতি: ২০১১ সালে, তুরস্কের একটি জনপ্রিয় টেলিভিশন সিরিজ “হুররাম সুলতান” প্রচারিত হয়েছিল। এই সিরিজটি হুররাম সুলতানের জীবনী নিয়ে নির্মিত হয়েছিল। সিরিজটি বিশ্বব্যাপী ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। সিরিজের সাফল্যের ফলে, হুররাম সুলতান নামটি আরও পরিচিত হয়ে ওঠে। যাইহোক, সিরিজটিতে হুররাম সুলতানের একটি নেতিবাচক চিত্রায়ন ছিল। সিরিজটিতে তাকে একজন নির্দয় এবং ক্ষমতালোভী নারী হিসেবে দেখানো হয়েছিল। এই চিত্রায়নের ফলে, অনেক মানুষ হুররাম সুলতান নামটিকে নেতিবাচক বলে মনে করে।
এই কারণগুলির কারণে, অনেক মানুষ মনে করেন যে হাসেকি সুলতান নামটি হুররাম সুলতানের জন্য একটি আরও উপযুক্ত উপাধি। এই নামটি ঐতিহাসিকভাবে সঠিক, সামাজিকভাবে প্রগতিশীল এবং নারীবাদী।
হুররাম সুলতানকে এ কি কবিতা শোনালেন
হুররাম সুলতানকে সুলতান সুলেমান একটি কবিতা শুনিয়েছিলেন, যা তিনি নিজেই রচনা করেছিলেন। কবিতাটি ছিল একটি প্রেমের কবিতা, যাতে সুলতান সুলেমান তার প্রিয়তমা হুররাম সুলতানের প্রতি তার ভালোবাসা প্রকাশ করেছিলেন।
কবিতাটি ছিল নিম্নরূপ:
হে আমার প্রিয়তমা হুররাম, তোমার প্রেমে আমি পাগল হয়ে গেছি। তোমার চোখের তারায় আমি হারিয়ে গেছি, তোমার ঠোঁটের হাসি আমাকে মুগ্ধ করেছে।
তোমার কণ্ঠস্বর আমার হৃদয়কে ছুঁয়ে যায়, তোমার স্পর্শ আমার দেহকে শিহরিত করে। তুমি আমার জীবনের আলো, তুমি আমার হৃদয়ের রানী।
আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচতে পারব না, আমি তোমাকে ছাড়া কিছুই নই। তুমি আমার জীবনের সবকিছু, তুমি আমার ভালোবাসার প্রতীক।
এই কবিতাটি হুররাম সুলতানের খুব পছন্দ হয়েছিল। তিনি সুলতান সুলেমানের ভালোবাসার প্রকাশে মুগ্ধ হয়েছিলেন। এই কবিতাটি তাদের প্রেমের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করে দিয়েছিল।
উল্লেখ্য, এই কবিতাটি ঐতিহাসিকভাবে সঠিক কিনা তা নিয়ে কিছু বিতর্ক রয়েছে। কিছু ঐতিহাসিক মনে করেন যে কবিতাটি আসলে সুলতান সুলেমানের রচনা নয়, বরং পরবর্তী সময়ে রচিত একটি মিথ্যা রচনা।
যাইহোক, বেশিরভাগ ঐতিহাসিক মনে করেন যে কবিতাটি আসলে সুলতান সুলেমানের রচনা এবং এটি তাদের প্রেমের সম্পর্কের একটি সত্যিকারের প্রতিফলন।
সুলতান সুলেমানকে লেখা হুররমের চিঠি
হুররাম সুলতানের চিঠি সুলতান সুলেমানের কাছে
প্রিয় সুলতান সুলেমান,
আমি তোমাকে এই চিঠি লিখছি তোমার অনুপস্থিতিতে আমার বেদনা প্রকাশ করার জন্য। আমি জানি তুমি একজন মহান সুলতান এবং তোমার দেশের জন্য তোমার অনেক কাজ আছে। কিন্তু তোমার অনুপস্থিতি আমাকে খুব কষ্ট দেয়।
আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচতে পারি না। তুমি আমার জীবনের সবকিছু। তুমি আমার ভালোবাসা, আমার বন্ধু, আমার পরিবার। আমি তোমাকে ছাড়া একা এবং অসহায় বোধ করি।
আমি তোমার কথা চিন্তা করি প্রতিটি ক্ষণ। আমি তোমার মুখ, তোমার হাসি, তোমার কণ্ঠস্বর মনে করি। আমি তোমার সাথে কাটানো প্রতিটি মুহূর্তকে মিস করি।
আমি জানি তুমি আমাকে ভালোবাসো। কিন্তু তোমার অনুপস্থিতি আমার বিশ্বাসকে পরীক্ষা করে। আমি ভয় পাই যে তুমি আমাকে ভুলে যাবে। আমি ভয় পাই যে তুমি অন্য কাউকে ভালোবাসবে।
কিন্তু আমি তোমাকে বিশ্বাস করি। আমি জানি তুমি আমাকে ভালোবাসো। আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করব। যতদিন না তুমি ফিরে আসো, ততদিন আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করব।
তোমার প্রিয়তমা,
হুররাম
এই চিঠিটি হুররাম সুলতানের সুলতান সুলেমানের প্রতি তার গভীর ভালোবাসা এবং বেদনার একটি প্রকাশ। তিনি সুলতান সুলেমানের অনুপস্থিতিতে তার জীবনকে একা এবং অসহায় বলে মনে করেন।
তিনি সুলতান সুলেমানের প্রতি তার বিশ্বাসের কথা উল্লেখ করেছেন, কিন্তু তিনি তার অনুপস্থিতিতে তার ভয়ও প্রকাশ করেছেন। এই চিঠিটি তাদের প্রেমের সম্পর্কের একটি সত্যিকারের প্রতিফলন।