নীলিমা ইব্রাহিম আত্মজীবনী

নীলিমা ইব্রাহিম কে

নীলিমা ইব্রাহিম ছিলেন একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও সমাজকর্মী। তিনি ১৯২১ সালের ১১ অক্টোবর বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার মূলঘর গ্রামে এক জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ ডিগ্রি লাভ করেন।

১৯৫৬ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ও সংস্কৃত বিভাগে যোগদান করেন এবং ১৯৭২ সালে অধ্যাপক পদে উন্নীত হন। ১৯৭৪-৭৫ সালে তিনি বাংলা একাডেমির অবৈতনিক মহাপরিচালক ছিলেন।

নীলিমা ইব্রাহিমের কর্মজীবন ছিল অত্যন্ত সমৃদ্ধ। তিনি একজন মেধাবী শিক্ষক, একজন দক্ষ গবেষক এবং একজন সমাজ-সচেতন মানুষ ছিলেন। তিনি তার ছাত্রদের মধ্যে শিক্ষার প্রতি আগ্রহ ও প্রবণতা জাগ্রত করতে সক্ষম হন।

তিনি তার গবেষণায় বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোকপাত করেন। তিনি একজন সমাজকর্মী হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি নারী অধিকার ও নারী উন্নয়নের জন্য কাজ করেছেন।

নীলিমা ইব্রাহিমের উল্লেখযোগ্য রচনাবলীর মধ্যে রয়েছে:

  • সামাজিক ও রাজনৈতিক পটভূমিকায় ঊনবিংশ শতাব্দীর বাংলা নাটক (১৯৫৯)
  • বাংলা কথাসাহিত্যে নারী (১৯৬৯)
  • আমি বীরাঙ্গনা বলছি (১৯৭২)
  • বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস (১৯৮৬)
  • বাংলা সাহিত্যে নারীবাদী চেতনা (২০০২)

নীলিমা ইব্রাহিমের কর্ম ও অবদানের জন্য তিনি বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হন। ১৯৭৫ সালে তিনি একুশে পদক লাভ করেন। ১৯৯৭ সালে তিনি স্বাধীনতা পদক লাভ করেন।

নীলিমা ইব্রাহিম ছিলেন একজন অসামান্য ব্যক্তিত্ব। তিনি তার মেধা, সাহস ও দৃঢ়চেতা মনোবলের মাধ্যমে বাংলাদেশের শিক্ষা, সাহিত্য ও সমাজব্যবস্থায় গভীর প্রভাব ফেলেছেন। তিনি একজন আদর্শ নারী ও একজন জাতীয় স্তরের ব্যক্তিত্ব হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

নীলিমা ইব্রাহিমের মৃত্যুর পর তার স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ও সংস্কৃত বিভাগে একটি স্মৃতিচারণসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তারা নীলিমা ইব্রাহিমের কর্ম ও অবদানের প্রশংসা করেন।

তারা বলেন, নীলিমা ইব্রাহিম ছিলেন একজন সত্যিকারের শিক্ষাবিদ, একজন দক্ষ গবেষক এবং একজন সমাজসেবী। তার মৃত্যু বাংলাদেশের শিক্ষা, সাহিত্য ও সমাজব্যবস্থার জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।

নীলিমা ইব্রাহিমের জীবন ও কর্ম আমাদের জন্য একটি অনুপ্রেরণা। তিনি আমাদের দেখিয়ে দিয়েছেন যে, একজন নারী যেকোনো ক্ষেত্রে সফল হতে পারে। তিনি একজন আদর্শ নারী ও একজন জাতীয় স্তরের ব্যক্তিত্ব হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *