দরিদ্রতম রাজ্য বিহার, কেমন আছে যোগী রাজ্য উত্তরপ্রদেশ?

বিহার কী

বিহার ভারতের একটি রাজ্য। এটি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত। বিহারের আয়তন ৯৪,১৬৩ বর্গকিলোমিটার (৩৬,৩৫৭ বর্গমাইল) এবং জনসংখ্যা ১২.৫ কোটিরও বেশি। বিহারের রাজধানী পাটনা।

বিহারের ইতিহাস প্রাচীন। এটি প্রাচীন ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল। বিহারের রাজধানী ছিল রাজগৃহ, যা মহাবীর এবং গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান ছিল। বিহারের নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল বিশ্বের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে একটি।

বিহারের অর্থনীতি কৃষি নির্ভর। বিহারের প্রধান ফসলগুলি হল ধান, গম, ডাল এবং ভুট্টা। বিহারের প্রধান শিল্পগুলি হল টেক্সটাইল, রাসায়নিক, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং ধাতুবিদ্যা।

বিহার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় কেন্দ্র। বিহারের গয়া হল হিন্দুদের জন্য একটি পবিত্র স্থান। বিহারের বুদ্ধগয় হল বৌদ্ধধর্মের জন্মস্থান।

বিহারের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল:

  • সমতল ভূমি
  • উর্বর মাটি
  • প্রচুর বৃষ্টিপাত
  • প্রাচীন ইতিহাস এবং সংস্কৃতি
  • গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় কেন্দ্র

বিহারের কিছু উল্লেখযোগ্য স্থান হল:

  • রাজগৃহ
  • নালন্দা
  • বুদ্ধগয়
  • সারনাথ
  • গয়া

বিহার একটি বৈচিত্র্যময় রাজ্য যা সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং সংস্কৃতি নিয়ে গর্বিত।

বিহারের সংস্কৃতি

বিহারের সংস্কৃতি বৈচিত্র্যময় এবং সমৃদ্ধ। এটি প্রাচীন ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল এবং এর সংস্কৃতি ভারতীয় সংস্কৃতির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

বিহারের সংস্কৃতির প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল:

  • ধর্ম: বিহার একটি ধর্মীয়ভাবে বৈচিত্র্যময় রাজ্য। হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন এবং ইসলামের মতো বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীরা এখানে বাস করে।
  • ভাষা: বিহারের প্রধান ভাষাগুলি হল হিন্দি, উর্দু, মৈথিলী, বাংলা এবং ভোজপুরি। প্রতিটি ভাষার নিজস্ব অনন্য সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য রয়েছে।
  • শিল্প: বিহারের শিল্প তার বৈচিত্র্য এবং সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত। বিহারের শিল্পীদের দ্বারা তৈরি কাঠের খোদাই, ধাতুনির্মিত শিল্পকর্ম, এবং কাগজের শিল্পকর্মগুলি বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত।
  • সঙ্গীত: বিহারের সঙ্গীত তার সুর এবং ছন্দের জন্য পরিচিত। বিহারের সঙ্গীতীদের দ্বারা তৈরি লোকসঙ্গীত, শাস্ত্রীয় সঙ্গীত, এবং ধর্মীয় সঙ্গীতগুলি বিহারের সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
  • নৃত্য: বিহারের নৃত্য তার ঐতিহ্য এবং উৎসাহের জন্য পরিচিত। বিহারের নৃত্যীদের দ্বারা পরিবেশিত লোকনৃত্য, শাস্ত্রীয় নৃত্য, এবং ধর্মীয় নৃত্যগুলি বিহারের সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
  • খাবার: বিহারের খাবার তার স্বাদ এবং সুগন্ধের জন্য পরিচিত। বিহারের খাবারগুলিতে বিভিন্ন উপাদান এবং মশলা ব্যবহার করা হয়।
  • উৎসব: বিহারে অনেকগুলি উৎসব উদযাপিত হয়। এই উৎসবগুলি বিহারের সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

বিহারের কিছু উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক স্থান হল:

  • রাজগৃহ: রাজগৃহ ছিল প্রাচীন ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজধানী। এটি মহাবীর এবং গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থানও ছিল।
  • নালন্দা: নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল বিশ্বের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে একটি। এটি বৌদ্ধ শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল।
  • বুদ্ধগয়: বুদ্ধগয় হল বৌদ্ধধর্মের জন্মস্থান। এখানে মহাবুদ্ধকে বোধিজ্ঞান লাভ হয়েছিল।
  • সারনাথ: সারনাথ হল বৌদ্ধধর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এখানে মহাবুদ্ধ তার প্রথম ধর্মপ্রচার করেছিলেন।
  • গয়া: গয়া হল হিন্দুদের জন্য একটি পবিত্র স্থান। এখানে হিন্দুরা তাদের মৃত প্রিয়জনদের শেষকৃত্য সম্পন্ন করে।

বিহারের সংস্কৃতি একটি সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্র্যময় ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্ব করে। এটি ভারতীয় সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং এটি বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত।

বিহারের পূর্ব নাম কি ছিল?

বিহারের পূর্ব নাম ছিল মগধ। খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে মগধ রাজ্য গঠিত হয় এবং এটি ভারতীয় উপমহা দেশের একটি শক্তিশালী রাজ্য হিসেবে আবির্ভূত হয়। মগধ রাজ্যের রাজধানী ছিল রাজগৃহ। মগধ রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন বিম্বিসার।

তিনি ছিলেন একজন দক্ষ শাসক এবং তার শাসনামলে মগধ রাজ্য একটি শক্তিশালী সাম্রাজ্যে পরিণত হয়। মগধ রাজ্যের সবচেয়ে বিখ্যাত শাসক ছিলেন অশোক। তিনি ছিলেন একজন মহান সম্রাট এবং তার শাসনামলে মগধ সাম্রাজ্য তার সর্বোচ্চ উৎকর্ষে পৌঁছায়।

মগধ রাজ্য ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে বিহার নামে পরিচিতি লাভ করে। ১৯১২ সালে ব্রিটিশ ভারতের বঙ্গ প্রদেশ থেকে বিহার এবং ওড়িশা প্রদেশ গঠিত হয়। ১৯৩৬ সালে ওড়িশা প্রদেশ বিহার থেকে পৃথক হয়ে যায় এবং বিহার প্রদেশ বর্তমান রূপ লাভ করে।

সুতরাং, বিহারের পূর্ব নাম ছিল মগধ

বিহারের কি বিখ্যাত?

Draft A

  • বৌদ্ধ ধর্মের জন্মস্থান: বিহার বৌদ্ধ ধর্মের জন্মস্থান হিসাবে বিখ্যাত। মহাত্মা বুদ্ধের জন্ম, শিক্ষা এবং মৃত্যু সবই বিহারের বিভিন্ন স্থানে ঘটেছিল। বিহারের বৌদ্ধ স্থাপত্য এবং শিল্প বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত।
    বিহারের বুদ্ধের মূর্তি
  • হিন্দু ধর্মের ইতিহাস: বিহার হিন্দু ধর্মের ইতিহাসের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এখানে অনেক হিন্দু মন্দির এবং তীর্থস্থান রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বারাণসী, বিহারের সবচেয়ে পবিত্র শহর।
    বারাণসী, বিহার
  • মগধ সাম্রাজ্য: বিহার মগধ সাম্রাজ্যের আবাসস্থল ছিল, যা খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতাব্দী থেকে খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতাব্দী পর্যন্ত ভারতীয় উপমহাদেশের একটি শক্তিশালী সাম্রাজ্য ছিল। মগধ সাম্রাজ্য বৌদ্ধধর্ম এবং হিন্দুধর্মের উত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
    মগধ সাম্রাজ্য
  • বিহারের খাবার: বিহারের খাবার তার সুস্বাদু এবং সুগন্ধের জন্য বিখ্যাত। বিহারের কিছু জনপ্রিয় খাবারের মধ্যে রয়েছে লস্যি, বিরিয়ানি, এবং চপ।

    বিরিয়ানি, বিহারের একটি জনপ্রিয় খাবার

বিহার একটি সুন্দর এবং সমৃদ্ধ রাজ্য। এটি একটি অনন্য সংস্কৃতি এবং ইতিহাসের সাথে একটি বৈচিত্র্যময় জনসংখ্যার আবাসস্থল।

Draft B

  • হিন্দু ধর্মের জন্য ঐতিহাসিক গুরুত্ব: বিহার হল হিন্দু ধর্মের জন্মস্থান। এখানেই বুদ্ধ, মহাবীর, গৌতম বুদ্ধ এবং কৃষ্ণের মতো ধর্মীয় নেতা জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বিহারের অনেক মন্দির এবং ধর্মীয় স্থান হিন্দু ধর্মের জন্য পবিত্র।
    বিহারের বিখ্যাত মন্দির
  • ভ্রমণের জন্য আকর্ষণীয় স্থান: বিহারের অনেক আকর্ষণীয় ভ্রমণ স্থান রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রাজগৃহ, নালন্দা, বুদ্ধগয়, সারনাথ, পাটনা এবং গয়া। এই স্থানগুলি প্রাচীন ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের সাক্ষ্য বহন করে।

    বুদ্ধগয়, বিহার

  • প্রাকৃতিক সৌন্দর্য: বিহার তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যও বিখ্যাত। এর মধ্যে রয়েছে কোশি নদী, গঙ্গা নদী, সোন নদী এবং বিহারের বন। এই স্থানগুলি পর্যটকদের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য।

    গঙ্গা নদী, বিহার

বিহার একটি সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্র্যময় রাজ্য যা ভারতীয় সংস্কৃতি এবং ইতিহাসের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ভারতের বিহারের আয়তন কত?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *