বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদগুলি হল:
- জল: বাংলাদেশ একটি সমতল দেশ এবং এর উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীগুলি এটিকে একটি সমৃদ্ধ জল সম্পদের দেশ করে তুলেছে। বাংলাদেশের প্রধান নদীগুলি হল পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র এবং গঙ্গা।
- বন: বাংলাদেশের মোট ভূখণ্ডের প্রায় ২১% বনভূমিতে আবৃত। সুন্দরবন বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন এবং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্যপ্রাণী আবাসস্থল।
- খনিজ সম্পদ: বাংলাদেশে তেল, গ্যাস, কয়লা, চুনাপাথর, লোহা, জিঙ্ক, তামা এবং অন্যান্য খনিজ সম্পদ পাওয়া যায়।
- কৃষি: বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ এবং এর জলবায়ু এবং মাটি বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষের জন্য উপযুক্ত।
- জীববৈচিত্র্য: বাংলাদেশ একটি জীববৈচিত্র্যপূর্ণ দেশ এবং এর বন্যপ্রাণী এবং উদ্ভিদ আবাসস্থলগুলি বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদগুলি দেশের অর্থনীতি এবং জনজীবনের জন্য অপরিহার্য। তবে, এই সম্পদগুলি অবক্ষয়ের হুমকির মধ্যে রয়েছে। প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করা যেতে পারে:
- জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা করা: জলবায়ু পরিবর্তন বনভূমি, জল সম্পদ এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা করার জন্য, আমাদের অবশ্যই জীবাশ্ম জ্বালানী ব্যবহার কমাতে এবং নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসগুলিতে স্যুইচ করতে হবে।
- বন উজাড় রোধ করা: বন উজাড় জীববৈচিত্র্য হ্রাস এবং জলবায়ু পরিবর্তনকে ত্বরান্বিত করে। বন উজাড় রোধ করার জন্য, আমাদের অবশ্যই বন রক্ষার জন্য আইন প্রয়োগ করতে হবে এবং জনসাধারণকে বন রক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করতে হবে।
- খনিজ সম্পদ উত্তোলন নিয়ন্ত্রণ করা: খনিজ সম্পদ উত্তোলন পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। খনিজ সম্পদ উত্তোলন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য, আমাদের অবশ্যই পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন (ইআইএ) প্রয়োজন এবং খনিজ সম্পদ উত্তোলনের জন্য কঠোর নিয়ম ও বিধিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
- কৃষিক্ষেত্রে টেকসই কৃষি অনুশীলন প্রচার করা: কৃষিক্ষেত্রে টেকসই কৃষি অনুশীলন অনুসরণ করে, আমরা মাটির ক্ষয় রোধ করতে পারি এবং জল সম্পদ সংরক্ষণ করতে পারি। টেকসই কৃষি অনুশীলন প্রচারের জন্য, আমাদের অবশ্যই কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে এবং কৃষিক্ষেত্রে টেকসই কৃষি পদ্ধতি প্রচার করতে হবে।
- জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ: জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য, আমাদের অবশ্যই বন্যপ্রাণী এবং উদ্ভিদ আবাসস্থলগুলি রক্ষা করতে হবে। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য, আমরা জাতীয় উদ্যান, বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য এবং অন্যান্য সংরক্ষিত এলাকাগুলি প্রতিষ্ঠা করতে পারি।
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদগুলি আমাদের দেশের জন্য একটি মূল্যবান সম্পদ। এই সম্পদগুলি সংরক্ষণ করা আমাদের দায়িত্ব।
বাংলাদেশের বহু প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে কিন্তু আমরা অর্থনৈতিক কারণে এসব প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলন ও ব্যবহার করতে পারি নি । একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঐ দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহারের উপর নির্ভর করে ।
বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে আধুনিক বিশ্ব পরিচিত লাভ করতে হলে, এ দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের যথাযথ ব্যবহার করতে হবে । নিচে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদের একটি তালিকা দেওয়া হল-
১। খনিজ সম্পদঃ বাংলাদেশ খনিজ সম্পদ সমৃদ্ধ নয় । ভূতান্ত্রিক জরিপ ও খনিজ অনুসন্ধানের প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায় এ দেশের মাটির নিচে কিছু খুনির সম্পদ রয়েছে ।
বাংলাদেশের খনিজর সম্পদের মধ্যে রয়েছে কয়লা প্রাকৃতিক গ্যাস, চুনাপাথর , কঠিন শিলা , শিলিকা বালু , চিনামাটি , গন্ধক , তামা , নুড়ি পাথর , আকরিক লোহা , খনিজ লবণ , সাদা মাটি , ইউরেনিয়াম ।
২। বনজ সম্পদঃ প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যে বনজ সম্পদ অন্যতম । প্রত্যেক দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্পদের ভূমিকা অনস্বীকার্য । পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে বনজ সম্পদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে । বাংলাদেশের বনাম সম্পদের মধ্যে রয়েছে –
(ক) সুন্দরবন
(খ) চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বনভূমি
(গ) মধুপুর ও ভাওয়ালের বনভূমি
(ঘ) সিলেটের বনভূমি
(ঙ) দিনাজপুর ও রংপুরের বনভূমি ।
৩। খুনিজ সম্পদঃ একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাবিকাঠি হলো শক্তি সম্পদ । আধুনিক অর্থনীতিতে শক্তি সম্পদের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ । শক্তি সম্পদ ছাড়া কোন দেশের শিল্পোন্নয়ন ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয় ।
বাংলাদেশের যুক্তি সম্পদগুলো হল- পানি বিদ্যুৎ তাপ বিদ্যুৎ কয়লা খনিজ তেল প্রাকৃতিক গ্যাস আণবিক শক্তি সৌর শক্তি ।
৪। পানি সম্পদঃ প্রাণিসম্পদ বাংলাদেশের একটি মৌলিক প্রাকৃতিক সম্পদ । বাংলাদেশের শিল্পোন্নয় ও কৃষি কাজে পানি সম্পদের গুরুত্ব অনস্বীকার্য । পানি সম্পদে উৎস হল- নদ-নদী ও সমুদ্রখাল বিল, কুকু্র , হাওড় , বৃষ্টিপাত , ভুগর্ভস্থ পানি ।
৫। কৃষিজ সম্পদঃ বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ । বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষির গুরুত্ব অপরিসীম । জাতীয় আয়ের মোট ৪০ ভাগ এবং রপ্তানি আয়ের ৭০ ভাগ কৃষি হতে আসে ।
কৃষিজাত দ্রব্য প্রদানত আমাদের খাদ্য যোগায় । বাংলাদেশে প্রধান প্রধান কৃষিজ সম্পদ হলো ধান , পাঠ , তুলা , মৎস্য , চামড়া , গম , আলু , চা ,বাদাম ,তামাক , আখ ,সবজি , রেশম , পশম , রেয়ন , বাঁশ ,পাতা ,বেত , কাঠ ,ইত্যাদি।
৬। মৎস্য সম্পদঃ মৎস্য বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ । মৎস্য বাংলাদেশের অন্যতম জাতীয় সম্পদ । এর সম্পদ বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বধুসিক মুদ্রা অর্জন করি ।
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আধুনিক পদ্ধতিতে মৎস্যচাষ শুরু হয়েছে । রুই কাতলা মিগেল পাংগাস কারপু চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ছাড়াও সামুদ্রিক মাছও আছে ।
৭। প্রাণীজ সম্পদঃ প্রকৃতির দান গৃহপালিত প্রাণী এবং বন্যপ্রাণী উভয়ই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের যথেষ্ট অবদান রাখে । প্রচুর সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ প্রাণীর সম্পদের খুব সমৃদ্ধ নয় ।
বাংলাদেশের উল্লেখ্যযোগ্য প্রাণিসম্পদ গৃহপালিত প্রাণী হল–গরু মহিষ ছাগল ভেড়া হাঁস মুরগি আর বন্যপ্রাণীর মধ্যে বাঘ হরিণ হাতি সাপ বানর বিভিন্ন পাখি ইত্যাদি ।
উপরোক্ত প্রাকৃতিক সম্পদ ছাড়াও আবহাওয়া উর্বর ভূমি জলবায়ু ইত্যাদি প্রাকৃতিক সম্পদ হিসেবে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে ।
খনিজ, বনজ ও পানি সম্পদের গুরুত্ব এবং সহংক্রিয় উন্নয়ন
(ক) খনিজ সম্পদে গুরুত্বঃ বাংলাদেশ খনিজ সম্পদে যথেষ্ট সমৃদ্ধ নয় । এদেশের উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক কাজে খনিজ সম্পদ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে ।
বাংলাদেশে যে সব খনিজ সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে তার মধ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস , কয়লা , খনি তেল , চুনাপাথর ,আকরিক লৌহ , তামা , চীনামাটি প্রভৃতি । নিম্নে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হল–
১ । কৃষি উন্নয়নঃ বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ । এ দেশের অর্থনীতির মূলত কৃষিভিত্তিক । গ্যাসভিত্তিক সার ও বিদ্যুৎ কৃষি উন্নয়নের বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে ।
২ । শিল্পায়নেঃ এদেশের শিল্পক্ষেত্রেও বিভিন্ন ধরনের পনির সম্পদ ব্যবহার করা হয় । যেমন- চুনাপাথর মৃত্তিকা , গ্যাস , বালু ইত্যাদি বিভিন্ন শিল্পের ব্যবহৃত হয়ে শিল্পায়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
৩। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেঃ দেশে যে পরিমাণ গ্যাস আছে তার উপর ভিত্তি করে যদি আরও সারকারখানা গড়ে ওঠে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ করা হয় তাহলে দেশে চাহিদা মিটিয়ে বিশ্ব বাজারে রপ্তানি করে ব্যাপক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব ।
৪। সামরিক উন্নয়নঃ এদেশ প্রাপ্ত খনিজ সম্পদ ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রশস্ত্র নির্মাণ করতে পারে । এতে এদেশের সামরিক বাহিনী শক্তিশালী হবে ।
৫। কর্মসংস্থান সৃষ্টিঃ বাংলাদেশে অসংখ্য লোক বেকার । এ বেকার লোকের কর্মসংস্থানের জন্য শিল্পায়ন আবশ্যক । আর শিল্পায়ন ঘটলে কর্মসংস্থানের সুযোগ ঘটবে । যেহেতু শিল্পায়নের জন্য গণিত সম্পদ বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে ।
৬। পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নঃ বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থার আরোও উন্নয়ন করতে হলে শক্ত পাথরের ব্যবহার আরো বাড়াতে হবে ।
৭। জীবনযাত্রা মান উন্নয়নঃ খনিজ সম্পদের যথাযথ ব্যবহার করে আমাদের দেশের মানুষের সঠিক জীবন যাত্রার মান আরো ত্বরান্বিত করা সম্ভব । তাই এক্ষেত্রে গণিত সম্পদ বিশেষ অবদান রাখতে পারে ।
পরিবেশে উপরোক্ত আলোচনা পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে ,বাংলাদেশের অর্থনীতিতে খনিজ সম্পদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে । এদেশে প্রাপ্ত খনিজ সম্পদের আরো যথাযথ ব্যবহার করতে পারলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক গতিধারা আরো ত্বরান্বিত করা সম্ভব ।
(খ) বাংলাদেশের খনিজ সম্পদঃ বাংলাদেশ খনিজ সম্পদেজ যথেষ্ট সমৃদ্ধ নয় । এদেশের উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক কাজে খনিজ সম্পদ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে ।
বাংলাদেশে যেসব খনিজ সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে তার মধ্যে প্রাকৃতিক কয়লা খনিজ তেল চুনাপাথর আকরিক লৌহ তামা চীনামাটি প্রভৃতি । নিম্নে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হল–
১। প্রাকৃতিক গ্যাসঃ এ দেশের খনিজ সম্পদের মধ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস অন্যতম । প্রাকৃতিক শক্তির অন্যতম উৎস প্রাকৃতিক গ্যাস । এটি দেশের বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে । এদেশের প্রায় ২২টি গ্যাস ক্ষেত্র রয়েছে ।
২। কয়লাঃ কয়লা বাংলাদেশের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদ । রাজশাহী সিলেট ও বগুড়ায় উৎকৃষ্ট কয়লার সন্ধান পাওয়া গেছে ।
৩। খনিজ তেলঃ১৯৮৭ সালে এদেশের সিলেটের হরিপুর এবং মৌলভীবাজারে দুটি তেল খনি আবিষ্কৃত হয়েছে । এখানে প্রতিদিন প্রায় ১৯৮৭ ব্যারেল তেল উৎপাদন করা হয় ।
৪। চুনাপাথরঃ চুনাপাথর বাংলাদেশের একটি বিশেষ প্রয়োজনীয় সম্পদ । এ দেশ চুনাপাথরের সমৃদ্ধ । সিলেট সুনামগঞ্জ বগুড়া ও সেন্টমার্টিন দ্বীপে চুনাপাথরের সন্ধান পাওয়া গেছে ।
৫। তামঃ বাংলাদেশের রংপুর জেলায় রানিপুকুরে এবং দিনাজপুর জেলায় মধ্যপাড়ায় তামার সন্ধান পাওয়া গেছে ।
৫। চীনামাটিঃ ময়মনসিংহ জেলার বিজয়পুর নওগাঁ জেলার পন্তীতলায় চীনামাটি সন্ধান পাওয়া গেছে ।
৬।নুড়ি পাথরঃ এদেশের সিলেট দিনাজপুর লালমনিরহাট প্রবৃত্তির স্থানে নুড়ি পাথরের সন্ধান পাওয়া গেছে । রাস্তাঘাট পুল মেরামত প্রভৃতি কাজে এটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে ।
৭। গন্ধকঃ চট্টগ্রাম জেলার কুতুবদিয়া দ্বীপে গন্ধকের সন্ধান পাওয়া গেছে । বারুদ ওষুধও দিয়াশলাই প্রভৃতি কাজে এটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে ।
৮ । কঠিন শিলাঃ এটি বাংলাদেশের রংপুর দিনাজপুর ও সিলেট জেলায় প্রচুর পরিমাণে পাওয়া গেছে । রেললাইন রাস্তাঘাট ইত্যাদি উন্নয়নমূলক কাজে কঠিন শিলা ব্যবহৃত হয়ে থাকে ।
৯। সাদামাটিঃ ময়মনসিংহ জেলার বিজয়পুরে সাদামাটির সন্ধান পাওয়া গেছে । বাণিজ্যিক কাজে এটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে । পরিশেষে বলা পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলাদেশে খনিজ সম্পদে সম্পূর্ণ স্বয়ংসম্পূর্ণ না হলেও মোটামুটি সমৃদ্ধ ।
এগুলোর যথাযথ ব্যবহার করা হলে দেশের অর্থনীতিকে আরও উন্নয়ন করা সম্ভব ।
(গ) বনজ সম্পদের গুরুত্ব এবং ব্যবহারের সম্ভাবনাঃ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গণ সম্পদের গুরুত্ব অপরিসীম । বলদ সম্পদ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে অপরদিকে ও শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে ।
বাংলাদেশের বলদ সম্পদের পরিমাণ সীমিত তবুও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বনভূমির ভূমিকা একেবারেই করা যায় না । বাংলাদেশের বনভূমি দেশের উন্নয়নে মোট জাতীয় আয়ের শতকরা ৫ ভাগ অবদান রাখে ।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সম্পদের ভূমিকা নিম্নে বর্ণনা করা হল-
১। দৈনন্দিন পণ্যসামগ্রী সংগ্রহঃ মানুষ তার দৈনন্দিন প্রয়োজনে জ্বালানি কাঠ, বাঁশ , বেত , মধু , মোম ,ফলমূল , পশু পাখির মাংস প্রবৃত্তি বন থেকে সংগ্রহ করে থাকে । এছাড়াও জীবজন্তু চামড়াও ভেষজ দ্রব্য বনভূমি হতে সংগ্রহ করে থাকে ।
২। নির্মাণের উপকরণঃ মানুষ বনভূমি থেকে তার ঘরবাড়ি ও আসবাবপত্র নির্মাণের জন্য কাঠ বাঁশ , বেত প্রভৃতি যাবতীয় উপকরণ সংগ্রহ করে ।
বাড়িঘর ও আসবাবপত্র নির্মাণের জন্য মানুষ বনভূমি থেকে শাল , সেগুন , মেহগনি , গর্জন , গামার , কড়ই গাছের মূল্যবান কাঠ সংগ্রহ করে ।
৩। কৃষি উন্নয়নঃ এ দেশের বনভূমি দেশের আবহাওয়াকে আদ্র রাখে ।ফলে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটে যা কৃষি উন্নয়নে সহায়ক । এ ছাড়া বনভূমি মাটির ক্ষয়রোধ ও বন্য নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে থাকে ।
৪। শিল্পাোন্নয়নে সহায়তাঃবাংলাদেশে কাগজ রেয়ন গিয়াশলাই ফাইবার বোর্ড খেলনার সরঞ্জাম প্রভৃতির উৎপাদন কাজে বনজ সম্পদ ব্যবহৃত হয়ে শিল্পের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করেছে ।
কর্ণফুলী কাগজ কল , খুলনা নিউজ প্রিন্ট কারখানা বাবার হার্ডবোর্ড মিল ম্যাচ ফ্যাক্টরি ও ওষুধশিল্প গনত সম্পদের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে ।
৫। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষাঃ প্রাণীরা অক্সিজেন গ্রহণ করে এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড ত্যাগ করে । আবার উদ্ভিদ কার্বন-ডাইড অক্সাইড গ্রহণ করে এবং অক্সিজেন ত্যাগ করে । এই যে প্রাণী ও উদ্ভিদে মধ্যে বিনিময় এতে ভারসাম্য রক্ষা হয় ।
৬। পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিঃ বনভূমি থেকে কাঠ সংগ্রহ করে তা দিয়ে রেললাইনের স্লিপার মোটরগাড়ি নৌকা লঞ্চ জাহাজ ইত্যাদির কাঠামো বৈদ্যুতিক খুটি রাস্তার মূল প্রভৃতি নির্মাণ করে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতি করা হয় ।
৭। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনঃবনের বিভিন্ন প্রাণীর চামড়া , দাঁত , শিং , পশম এবং কিছু জীবন্ত বর্ণ জন্তু রপ্তানি করে বাংলাদেশ বডি শিখ মুদ্রা অর্জন করছে ।
৮। সরকারের আয়ের উৎসঃ বনদ সম্পদ সরকারের আয়ের একটি উৎস । যেমন- বনজ সম্পদ বিক্রি এবং এর উপর কর ধার্য করে সরকার রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করে থাকে ।
৯। প্রাকৃতিক পরিবেশঃ বনের গাছপালা আবহাওয়ার আদ্রতা রক্ষা করে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বৃদ্ধি করে । মাটি ক্ষয় রোধ করে , বন্যা নিয়ন্ত্রণে সায়তা করে , ঝড় ও প্লাবনজনিত দুর্যোগ রোধ করে ।
১০। ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রেঃ কবিরাজি হেকিমি আয়ুর্বেদীক ও অ্যালোপ্যাথি ওষুধের কাঁচামাল হিসেবে বনের লতাপাতা গাছের ছাল মূল এবং মধু ইত্যাদি সংগৃহীত হয়ে থাকে ।
১১। কর্মসংস্থানঃ বনজ সম্পদ আহরণের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত থেকে অনেকেই কর্মসংস্থানের সুযোগ লাভ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে ।
পরিশেষে বলা যায় যে, বনজ সম্পদ শুধু আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নই ঘটায় না, এটি আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে আমাদেরকে পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে সহায়তা করে ।
তাই বাংলাদেশ সরকার ‘’একটা কার্টুন একটা লাগান’’ এই স্লোগানে গাছ লাগান কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন ।
(ঘ) অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার জন্য বন সংরক্ষণের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তাঃ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বনজ সম্পদের ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে । বনভূমি (১)আমাদের জনগণের দৈনন্দিন জ্বালানির প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে;
(২) দেশজ শিল্প যেমন- কাগজ বাঁশ ও বেত বিড়ি আসবাবপত্র দিয়াশলাই ইত্যাদি শিল্পের কাঁচামালের যোগান দেয় । (৩) গবাদি পশুর খাদ্যবস্তুর এবং ওষুধপত্রের কাঁচামালেরও যোগান দেয়;
(৪) মোম মধু এবং ফলমূলের উৎস । এ ছাড়াও আমাদের বনভূমি রেলওয়ে স্লিপার নৌকা লঞ্চ পুল বাসগৃহ ইত্যাদি নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় কাঠ বাস বৃক্ষপত্রের উৎস । বনভূমি সরকারের রাজস্বের একটি উৎস বটে ।
বাংলাদেশের বেকার সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রেও বন এবং বনজ সম্পদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে । জনগণের একটি উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ হতে গোলপাতা মধু মোম ওষুধপত্রের উপাদান ইত্যাদি সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করে ।
বনভূমি পর্যটকদের আকর্ষণ করে । ফলে বনভূমি বধুসিক মুদ্রা আয়ের উৎস হিসেবে ও বিবেচিত হয় । প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে বনভূমি একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান । আমাদের বনভূমি
(১) ভূমির উর্বরাশক্তি বৃদ্ধি করে;(২) বন্যা ঘূর্ণিঝড় নদীর ভাঙ্গন প্রবৃত্তি বিপর্যয় হতে দেশকে রক্ষা করে (৩) আবহাওয়ার আদ্রতা রক্ষা করে এবং বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে । (৪) মাটির ক্ষয় নিবারণ করে ।
বনভূমি জন্তু-জানোয়ার বন্যপ্রাণী কীটপতঙ্গ সরীসৃপ ও নানা প্রজাতির পাখি ইত্যাদির আবাসস্থল ও কারণক্ষেত্র । পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় মানুষের পাশাপাশি এসব পশু পাখির অস্তিত্ব অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ।
এছাড়া বনভূমি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেরও উৎস । দেখা যাচ্ছে যে বনভূমি আমাদের অর্থনীতি উন্নয়নে এবং রক্ষার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাখে । তাই বন সংরক্ষণে প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য ।
(ঙ)বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পানি সম্পদের গুরুত্বঃ বাংলাদেশে পানির প্রধান উৎস নদনদী । উপকূলীয় অঞ্চলে সমুদ্র এবং সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য খাল বিল হাওর বাঁওড় ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলাশয় থেকেও এ দেশের জনগণের পানির চাহিদা পূরণ হয়ে থাকে ।
এছাড়াও রয়েছে গর্ভস্থল পানি । বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত এই পানি সম্পদের বহুবিধ ব্যবহার হয়েছে ।
১। দৈনন্দিন জীবনযাপনঃ জনগণের প্রতাহিক প্রয়োজনে বাসগৃহে এবং অফিসে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ পানি প্রয়োজন হয় । শহরাঞ্চলে শহর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পানি সরবরাহ করা হয় । গ্রামাঞ্চলে নদনদী জলাশয় টিউবওলের কূপ ইত্যাদি পানি সরবরাহের উৎস ।
২ । শিল্পকারখানাঃ শিল্পকারখানায় বিভিন্ন প্রয়োজনে পানির প্রয়োজন হয় । কোন কোন শিল্পে পানি কাঁচামাল হিসাবেও ব্যবহৃত হয় ।
৩।যাতায়াত ব্যবস্থাঃ নদনদী খালবিলের দেশ বাংলাদেশে পানিপথ যাতায়াত ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান উপায় । দেশের জল পরিবহন ব্যবস্থা, দেশের ব্যবসায় বাণিজ্য এবং জনশক্তির গতিশীলতার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ।
৪। পানি বিদ্যুৎ উৎপাদনঃ আমাদের পানির সম্পদ শক্তি সম্পদ উৎপাদনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে । দেশের খরস্রোতা নদী সমূহে বাঁধধ দিয়ে উৎপাদিত বিদ্যুৎ আমাদের শিল্প কারখানায় এবং বাণিজ্যের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি সম্পদের যোগান দেয় ।
দেশের অন্যান্য নদীর পানির সাহায্যে পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করে আমাদের বিদ্যুৎশক্তির ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করা সম্ভব ।
৫। মৎস্য সম্পদের উন্নয়নঃ বাণী সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারের উপর মৎস্য সম্পদের উন্নয়ন নির্ভর করে । সঠিক পরিকল্পনার সাহায্যে দেশের নদনদী ও জলাশয়সমূহে মৎস্যচাষের ব্যবস্থা নিয়ে মৎস্য সম্পদের সমৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব ।
৬। কৃষি উৎপাদনঃ বাংলাদেশের পানি সম্পদের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার ঘটে কৃষিক্ষেত্রে । কৃষি কাজের একটি প্রধান উপকরণ হিসেবে পানির পরিমিত ও নিয়মিত ব্যবহার কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য ।
অতিরিক্ত পানি সংরক্ষণ এবং পরিকল্পিতভাবে কৃষিক্ষেত্রে পানি সরবরাহের মাধ্যমে কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদনে বড় রকমের পরিবর্তন আনায়ন করা সম্ভব ।
পানি সম্পদ ব্যবহার দ্বারা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিপুল অগ্রগতি অর্জন করা সম্ভব , তাই পানি সম্পদের সুযোগ ব্যবহারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন ।
(চ)বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মৎস্য সম্পদের গুরুত্বঃ বাংলাদেশের অর্থনীতির মাত্র সম্পদের গুরুত্ব অপরিসীম । বাংলাদেশের মোট জাতীয় আয়ের শতকরা ৩.০৯ মৎস্যখাতট হতে আসে । অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে মৎস্য সম্পদের গুরুত্ব সম্বন্ধে আলোচনা করা হল –
১। খাদ্য হিসেবেঃ মাছ বাংলাদেশের অধিবাসীদের অন্যতম প্রধান খাদ্য । মাপ একটি প্রোটিন যুক্ত পুষ্টিকর খাদ্য । বাংলাদেশের জনগণের অতি প্রয়োজনীয় প্রাণী খাদ্য সিংহভাগ আসে মাছ হতে । সুতরাং মাছ পুষ্টিকর খাদ্যর যোগান দিয়ে বাংলাদেশের জনশক্তির গুণগত মান উন্নয়নের সহায়তা করে ।
২। শিল্পের কাঁচামালঃ মাছ বিভিন্ন ধরনের শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয় । মাছের চামড়া আর চর্বি তেল প্রভৃতি মৎস্য উপজাত দ্রব্যদি বিভিন্ন শিল্পে যেমন– সাবান গ্লিসারিন মোম চামড়া শোধন প্রভৃতি শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয় ।
৩। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনঃ মাছ বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের অন্যতম উৎস । বর্তমানে বাংলাদেশ মাছ ও মাছজাত দ্রব্য রপ্তানি করে প্রচুর বধুসিক মুদ্রা উপার্জন করে । ২০০৩-০৪ অর্থ বছরের মৎস্যখাত থেকে রপ্তানি আয়ের ৫.৭১% আয় হয় ।
৪। কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধিঃ বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা সমাধানেও মৎস্য সম্পদের গুরুত্ব অনস্বীকার্য । বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা প্রায় ৯ ভাগ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মৎস্য ও সংশ্লিষ্ট শিল্পের উপর নির্ভরশীল ।
৫। আনুষঙ্গিক শিল্পের প্রসারঃ মৎস্য সম্পদকে কেন্দ্র করে দেশে আনুষঙ্গিক শিল্প গড়ে উঠেছে । যেমন- মৎস্য শিল্পকে কেন্দ্র করে দেশে নৌকা , লঞ্চ , ট্রলার , হিমাগার , বরফকল , লবণ শিল্প প্রবৃত্তির বিভিন্ন ধরনের শিল্প গড়ে উঠেছে ।
৬। কৃষি উন্নয়নে সহায়তাঃ মৎস্য সম্পদ পরোক্ষভাবে কৃষি উন্নয়নের সহায়তা করে । মাছের হাড় কাটা পচা মাছ প্রকৃতি হতে সার তৈরি করা হয় । এসব সার জমির উর্বরতা বৃদ্ধি সহায়তা করে ।
৭। সৌখিন দ্রব্য উৎপাদনঃ মাছের পরিত্যক্ত অংশ দ্বারা অনেক সতীন্দ্র্রব্য তৈরি করা হয় । মাছ আর দাঁত লেজ প্রভৃতি সাহায্য চুরি আংটি নানা ধরনের দ্রব্য প্রস্তুত করা হয় । এসব দ্রব্য মানুষ সৌখিন দ্রব্য হিসেবে ব্যবহার করে থাকে ।
৮। সরকারি আয়ের উৎসঃ মৎস্য সম্পদ সরকারি আয়ের উৎস হিসাবে কাজ করে । মৎস খাত হতে সরকার প্রতি বছর উল্লেখ্যযোগ্য পরিমাণ আয় করে থাকে ।
(ছ) শক্তি সম্পদের বর্ণনাঃ কোন দেশের শিল্পায়নের জন্য শক্তি সম্পদের একান্ত প্রয়োজন । শিল্পকারখানার মেশিন ইঞ্জিন শক্তি দ্বারা চালিত হয় । চুক্তি হল অর্থনৈতিক উন্নতির চাবিকাঠি ।
বাংলাদেশ শক্তি সম্পদের সমৃদ্ধ নয় । প্রাকৃতিক গ্যাস , কয়লা , তেল , বিদ্যুৎ , আণবিক শক্তি , সৌর শক্তি সম্পদের প্রধান উৎস ।
নিচে শক্তি সম্পদের বিবরণ দেয়া হল
১। প্রাকৃতিক গ্যাসঃ শক্তির উৎস হিসেবে প্রাকৃতিক গ্যাসের গুরুত্ব অপরিসীম । বাংলাদেশ প্রাকৃতিক গ্যাস সম্পদের অপেক্ষাকৃত সমৃদ্ধ । বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের প্রায় ২৮.৪০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ রয়েছে ।
গ্যাসক্ষেত্রগুলোর মধ্যে সিলেটের হরিপুর কৈলাটিল্য ,তিতাস ,বাখরাবাদ সাঙ্গু ছাত্রক উল্লেখ্যযোগ্য ।
২। কয়লাঃ শক্তির অন্যতম উৎস কয়লা । কয়লা সম্পদে বাংলাদেশ তত উন্নত নয় । এ দেশের ফরিদপুরে বাঘিয়া ও চান্দা বিল খুলনার কোলা বিল রাজশাহী বগুড়া নওগাঁ জয়পুরহাট , দিনাজপুরের বড় পুকুরিয়া এবং সিলেট জেলায় উত্তপ্ত মানের বিটুমিনাস ও লিগনাইট কয়লার সন্ধান পাওয়া গেছে ।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা দেশে যে পরিমাণ কয়লা সঞ্চিত আছে উত্তোলন করলে আগামী ২০০ বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা সম্ভব হবে ।
৩। খনিজ তেলঃ বাংলাদেশের উপকূল অঞ্চলে খনিজ তেল আছে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা । ১৯৮৬ সালে সিলেট জেলার হরিপুরে প্রাকৃতিক গ্যাসের সপ্তম কূপের তেল পাওয়া যায় । এপ্রুফ থেকে দৈনিক প্রায় ৬০০ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল তোলা হয় ।
অসোধিত তেল হতে পেট্রোল কেরোসিন বিটুমিন ও অন্যান্য দ্রব্য পাওয়া যায় । মৌলভীবাজার জেলার বরমচালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় তেলক্ষেত্র । এ থেকে দৈনিক প্রায় ১২০০ ব্যারেল তেল উত্তোলিত হয় ।