কম্পিউটার সিস্টেম হল একটি যন্ত্র যা তথ্য প্রক্রিয়াকরণ, তথ্য সংরক্ষণ এবং তথ্য আউটপুট করতে ব্যবহৃত হয়। একটি কম্পিউটার সিস্টেম সাধারণত দুটি প্রধান উপাদান নিয়ে গঠিত: হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার।
হার্ডওয়্যার হল কম্পিউটারের শারীরিক উপাদানগুলি, যেমন কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট (CPU), মেমরি, ইনপুট/আউটপুট ডিভাইস এবং স্টোরেজ ডিভাইস।
সফটওয়্যার হল কম্পিউটারের নির্দেশাবলী এবং তথ্যগুলির একটি সেট যা হার্ডওয়্যারকে কী করতে হবে তা বলে।
কম্পিউটার সিস্টেমগুলি বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমন:
- ব্যক্তিগত ব্যবহার: কম্পিউটারগুলি ব্যক্তিগত কাজ, যেমন লেখার, গেম খেলার এবং ইন্টারনেট ব্রাউজ করার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।
- পেশাদার ব্যবহার: কম্পিউটারগুলি ব্যবসা, শিক্ষা এবং গবেষণার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।
- শিল্প: কম্পিউটারগুলি সঙ্গীত, চলচ্চিত্র এবং ভিডিও গেম তৈরির জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।
কম্পিউটার সিস্টেমগুলির কিছু সাধারণ ব্যবহার হল:
- ডেটা প্রক্রিয়াকরণ: কম্পিউটারগুলি ডেটা সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং বিশ্লেষণ করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
- তথ্য প্রদান: কম্পিউটারগুলি তথ্য প্রদর্শন এবং ভাগ করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
- নিয়ন্ত্রণ: কম্পিউটারগুলি মেশিন এবং প্রক্রিয়াগুলি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
- সৃজনশীলতা: কম্পিউটারগুলি শিল্প, সঙ্গীত এবং চলচ্চিত্র তৈরি করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
কম্পিউটার সিস্টেমগুলি আমাদের জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। তারা আমাদের কাজ, শিক্ষা এবং বিনোদনকে সহজ এবং আরও দক্ষ করে তোলে।
কম্পিউটারের ঘোড়ার ইতিহাস
অত্যাধুনিক যন্ত্র কম্পিউটার কোনো ব্যক্তিবিশেষ আবিস্কার নয় । বিগত প্রায় দেড় শ বছর ধরে অসংখ্য মানুষের ভাবনা চিন্তা ফল আছে এখানে । যোগ- বিয়োগ করতে সক্ষম গণনা যন্ত্র প্রথম তৈরি করে গণিতবিদ প্যাসকেল ১৬৪২সালে ।
১৮২০ সালে মেমরি সংরক্ষণ পদ্ধতি সংবলিত ক্যালকুলেটর আবিষ্কারে সক্ষম হলো চার্লস জেভিয়ার থমাস । ১৮২২ সালে চার্লস ব্যাবেজ একটি স্বয়ংক্রিয় ক্যালকুলেটিং মেশিনের কাঠামো আবিষ্কার করেন ।
কিন্তু এ কাঠামোকে বাস্তবে রূপ দিতে না পেরে ১৮৩৩ সালে নতুন চিন্তাধারা শুরু করেন । ১৮৩৪-৩৫সালে তিনি প্রথম অটোমেটিক মেকানিক্যাল ডিজিটাল কম্পিউটার মডেল তৈরি করেন ।
এর নাম তিনি দেন ,এনালাইটিক্যাল ইঞ্জিন, । এরই পথ ধরে ১৯৩৯ সালে বাইনারি গণিতভিত্তিক ইলেকট্রনিক ডিজিটাল ABC কম্পিউটার তৈরি হয় । ১৯৪৪ সালে হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় ও আই , বি ,এম কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে ইলেকট্রো মেকানিক্যাল কম্পিউটার তৈরি হয় ।
এর পরের ইতিহাস আরও বিস্তৃত । তবে এটুকু বলা যায় ১৯৫৭ সালের পর থেকে কম্পিউটারের ব্যাপক ব্যবহার শুরু হয় । কম্পিউটারের ইতিহাস বিশ্লেষণে তাই এর জনক বলা হয় চার্লস ব্যাবেজকে ।
কম্পিউটার জেনারেশন
কম্পিউটারে জেনারেশনকে পাঁচ ভাগে বিভক্ত করা যায় । যথাঃ
ক)প্রথম জেনারেশন (১৯৫১-১৯৫৯)ঃ ৫০ দশকের কম্পিউটারকেই প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটার বলা হয় । বায়ুশূন্য কিউব দ্বারা এ কম্পিউটার প্রস্তুত হতো । কয়েকটি ঘরজুড়ে থাকত এই সুবিশাল কম্পিউটার । এর গতি ছিল মন্থর ।
উদাহরণঃ UNIVAC l, lMB 620
দ্বিতীয় জেনারেশন (১৯৫২-১৯৫৯)ঃ ১৯৫৯ সাল থেকে কম্পিউটারে ভালভের পরিবর্তে ট্রানজিস্টর ব্যবহৃত হতে শুরু করে । ট্রানজিস্টরের কারণে নতুন এ কম্পিউটারগুলোর আকার ছোট হয় ।
আর আগের চেয়ে বিশ্বাসযোগ্য ও দ্রুতগতিসম্পন্নও হয় । কম্পিউটারের এ প্রজন্মেই সর্বপ্রথম কম্পিউটারে হাইলেবেল ভাষার ব্যবহার শুরু হয় । এ প্রজন্মের একটি কম্পিউটার lMB 1620 দিয়ে ১৯৬৪ সালে বাংলাদেশে কম্পিউটার ব্যবহারের সূচনা হয় ।
উদাহরণঃ UNIVAC l, lMB 1620 , RCA 301.
তৃতীয় জেনারেশন (১৯৬৫-১৯৭১)ঃ এর প্রজন্মে কম্পিউটারের আকার আরো ছোট হয় । ফলে বাদ থেকে শুরু করে সবক্ষেত্রে সাশ্রয় হয়। পাশাপাশি কাজের গতি ও নির্ভরশীলতা বহুগুণে বেড়ে যায় । এ প্রজন্মেই কম্পিউটারে মনিটরের ব্যবহার শুরু হয় ।
উদাহরণঃ lMB 360 , lMB 370
চতুর্থ জেনরেশন ( ১৯৭১ – বর্তমান কাল )ঃ এ সময়ে কম্পিউটার আর ও আধুনিক হয় । এ সময়েই মাইক্রো প্রসেসরের ব্যবহার শুরু হয় । মূলত কম্পিউটারের চতুর্থ প্রজন্ম বলতে বর্তমান পার্সোনাল কম্পিউটারকেই বোঝায় ।
উদাহরণঃ lMB 3033 ,HP 3000.
পঞ্চম জেনারেশন ( ভবিষ্যৎ)ঃ বর্তমানে আমেরিকা ও জাপান পঞ্চম প্রজন্মের কম্পিউটার চালুর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে । Super VLSI চিপ ও অপটিক্যাল ফাইবারের সমন্বয়ে তা তা সৃষ্টি হবে । এ কম্পিউটারের প্রধান বৈশিষ্ট্য হবে মানুষের কণ্ঠস্বরের নির্দেশ অনুধাবনের ক্ষমতা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ।