মঙ্গলকাব্য হল বাংলা সাহিত্যের একটি বিশেষ ধরনের কাব্য। এই কাব্যগুলি সাধারণত কোনো স্থানীয় দেবতা বা দেবীর মাহাত্ম্য বর্ণনা করে লেখা হয়। মঙ্গলকাব্যগুলির প্রধান উদ্দেশ্য হল সেই দেবতা বা দেবীর পূজা-অর্চনাকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করা।
মঙ্গলকাব্যগুলির সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলি হল:
- এই কাব্যগুলি সাধারণত পদ্য আকারে লেখা হয়।
- এই কাব্যগুলির প্রধান চরিত্র হল কোনো স্থানীয় দেবতা বা দেবী।
- এই কাব্যগুলির কাহিনী সাধারণত অতিপ্রাকৃতিক।
- এই কাব্যগুলিতে রয়েছে প্রচুর লোককথা ও লোকসংস্কৃতির উপাদান।
মঙ্গলকাব্যগুলির প্রধান তিনটি ধারা হল:
- মনসামঙ্গল: এই কাব্যগুলিতে বাংলার স্থানীয় দেবী মনসার মাহাত্ম্য বর্ণনা করা হয়।
- চন্ডীমঙ্গল: এই কাব্যগুলিতে দেবী দুর্গার মাহাত্ম্য বর্ণনা করা হয়।
- ধর্মমঙ্গল: এই কাব্যগুলিতে ধর্মঠাকুরের মাহাত্ম্য বর্ণনা করা হয়।
মঙ্গলকাব্যগুলি বাংলা সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই কাব্যগুলি বাংলার লোকসংস্কৃতি ও ধর্মীয় বিশ্বাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল।
মঙ্গলকাব্যের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হল:
- মনসামঙ্গল:
- চন্দ্রশেখর ভট্টের “চন্দ্রাবতী”
- কেতকাদাসের “মনসামঙ্গল”
- কালিদাস রায়ের “চন্ডীমঙ্গল”
- চন্ডীমঙ্গল:
- কবিকঙ্কন মুকুন্দ রামের “চন্ডীমঙ্গল”
- কৃষ্ণরাম দাসের “চন্ডীমঙ্গল”
- ধর্মমঙ্গল:
- রূপরাম চক্রবর্তী ও ঘনরাম চক্রবর্তীর “ধর্মমঙ্গল”
মঙ্গলকাব্যগুলি বাংলা সাহিত্যের একটি অনন্য সম্পদ। এই কাব্যগুলি বাংলার লোকসংস্কৃতি, ধর্মীয় বিশ্বাস ও ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল।