কারক ও বিভক্তি মনে রাখার কৌশল

কারক কাকে বলে ?

মূলত ক্লিয়ার সঙ্গে বাক্যর  বিশেষ্য ও সর্বনামের যে সম্পর্ক, তাকে কারক বলে। কারো সম্পর্ক বোঝাতে বিশেষ্য ওসর্বনাম এর সঙ্গে সাধারণত বিভক্তি ও অনুসর্গ যুক্ত হয়ে থাকে।

 কারক  ছয় প্রকারঃ কর্তা কারক, কর্ম কারক ,করণ কারক অপাদান কারক অধিকরণ কারক ও সম্বন্ধ কারক।

 কর্তা কারক

 ক্লিয়ার যা দ্বারা সম্পাদিত হয়, তাকে কর্তা কারক বলে। বাক্যের কর্তা উদ্দেশ্যেই কর্তা কারক। কারকে সাধারণত বিভক্তি যুক্ত হয় না যেমন-

 আমরা নদী ঘাট থেকে রিক্সা নিয়েছিলাম। অনেকগুলো বন্যা হাতিবাগান নষ্ট করে দিল। যেমন- 

•  কর্তা কারকে কখনো কখনো বিভক্তি যুক্ত হয় । 
• পাগলে কিনা  বলে, ছাগলে কিনা খায়।

 কর্মকারক

যাকে আশ্রয় করে কর্তা ক্রিয়া সম্পাদন করে, তাকে কর্মকারক বলে। মুখ্য কর্ম ও  গৌণ কর্ম- উভয় ধরনের কর্ম কর্ম কারক হিসেবে গণ্য হয়।

সাধারণত মুখ্য কর্ম কারকে বিভক্তি হয় না, তবে কোন কর্ম কারকে- কে বিভক্তি হয়।

সাধারণত মুখ্য কর্ম কারকে বিভক্তি হয় না তবে গৌণ কর্ম কারকে কে বিভক্তি হয়। যেমন:

•  সে রোজ সকালে এক প্লেট ভাত খায়।
•  শিক্ষককে জানাও।
•  অসহায় কে সাহায্য করো।

 বেগম রোকিয়া সমাজের নানা রকম  অন্ধতা,  গোঁড়ামি ও কুসংস্কার কে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করে গেছেন। যেমন-

•  বাক্য ভাষায় কর্মকারকে রে বিভক্তি হয় ।
•  আমারে তুমি করিবে ত্রাণ এ নহে মোর প্রার্থনা।

 করণ কারক

যার তারাবাজে উপায় তোর কর্তা ক্রিয়া সম্পাদন করে, তাকে করণ কারক বলে। এই কারকে সাধারণত তারা দিয়ে কর্তিক ইত্যাদি  অনুসর্গ যুক্ত হয় । যেমন-

•  ভেড়া দিয়ে চাষ করা সম্ভব নয়।
• চাষিরা ধারালো কাস্তে দিয়ে ধান কাটছে।
• অপাদান কারক

যে কারকে ক্রিয়া উৎস নির্দেশ করা হয় তাকে অপাদান কারক বলে। এই কারকে সাধারণত হতে থেকে ইত্যাদি অনুস্বর্গ সবচেয়ে পরে বসে। যেমন-

•  জমি থেকে ফসল পাই। 
•  কাপটা উঁচু টেবিল থেকে পড়ে ভেঙ্গে গেল।

অধিকরণ কারক

 যে কারকে স্থান-কাল বিষয় নির্দেশিত হয় তাকে অধিকরণ কারক বলে। এই কারকে সাধারণত  । যেমন-

• এ, য়, -ইয়ে,-তে  ইত্যাদি বিভক্তি শব্দের সঙ্গে যুক্ত হয়।
•  বাবা বাড়িতে আছেন।
•  রাজিব বাংলা ব্যাকরণে ভালো।

সম্বন্ধ কারক  

যেকারো কারকে বিশেষ্য  ও সর্বনামের সঙ্গে  বিশেষ্য ও সর্বনামের সম্পর্ক নির্দেশিত হয়, তাকে সম্বন্ধ কারক বলে।

এই কারক ক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক পরোক্ষ। এই কারকে শব্দের সঙ্গে  -র, -এর,   -,য়ের   কার  কের  ইত্যাদি বিভক্তি যুক্ত হয়। যেমন-

•  ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না।
•  আমার জামার বোতাম গুলো একটু অন্যরকম।
• তখনকার দিনে পায়ে হেঁটে চলতে হতো  মাইলের পর মাইল।
  

বিভক্তি কাকে বলে?

 বাক্যের মধ্যে অন্য শব্দের সাথে সম্পর্ক বোঝাতে বিশেষ্য ও সর্বনাম এর সঙ্গে অর্থহীন কিছু নগ্ন ক যুক্ত হয় সেগুলো কে কি বলে । যেমনঃ- এ, ,তে য় য়ে কে  কে  র  এর, য়ের ইত্যাদি।

• লোকে কি না বলে!- এই বাক্য ,লোক, শব্দের সঙ্গে জুড়ে আছ  এ,  বিভক্তি।
• সে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে গরু চালাতে গেছে। এই বাক্য ,ছেলে , শব্দের সঙ্গে জুড়ে আছে ,কে,  বিভক্তি।

বাড়ির পুকুরের পাড়ে বড় ভাইয়ের কলাবাগান। – এই বাক্য বাড়ি পুকুর এবং ভাই শব্দের সঙ্গে জুড়ে আছে ্‌র , এর এবং ,-য়ের,  বিভক্তি।

• বিভক্তি গুলো কে তিন ভাগে বিভক্ত করে দেওয়া দেখানো যায়।

ক)   এ -তে -য় -য়ে বিভক্তি

 সাধারণ সাধারণত কি বিয়ার খান ক্রিয়ার কাল বোঝাতে এ -তে -য় -য়ে  ইত্যাদি ব্যবহার হয়। কখনো কখনো বাক্য বাক্যের কর্তার সঙ্গে এসব বিভক্তি  বসে ।

যেসব শব্দের শেষে কার চিহ্ন নেই সেসব শব্দের সঙ্গে এ বিভক্তি যুক্ত হয়। যেমন সকালে দিনাজপুরে ই-মেইলে কম্পিউটারে ছাগলে ইত্যাদি ।

• শব্দের শেষে এ-কার ও-কার থাকলে তে বিভক্তি হয়। যেমন- হাতিতে ,রাত্রিতে ;মধুতে ,রামুতে ,ইত্যাদি।
• আ- কারাস্ত শব্দের শেষে  দ্বিস্বর  থাকলে যে বিভক্তি হয়। যেমন-  ঘোড়ায়  সন্ধ্যায় ঢাকা ইত্যাদি।
• শব্দের শেষে  দ্বিস্বর থাকলে যে বিভক্তি হয়। যেমন- শুয়ে ভাইয় ,বউয়,।

ই-কারান্ত সবচেয়ে শেষে-য়ে বিভক্তি হয়। যেমন- ছইয়ে  ভাইয়ে বউয়ে।

খ) -কে, -রে  বিভক্তি

 বাক কর্মের সঙ্গে সাধারণত কে শব্দ বিভক্তি বসে। প্রিয়াকে কাকে কাকে প্রশ্ন করলে যে শব্দ পাওয়া যায় তার সঙ্গে এই বিভক্তি যুক্ত হয়। যেমন- শিশুকে  তার আমার আমারে  ইত্যাদি।

গ)  -র, -এর , বিভক্তি

বাক্যের মধ্যে পরবর্তী শব্দের সঙ্গে সম্বন্ধ পূজাতে পূর্ববর্তী শব্দের সঙ্গে র এর এবং য়ের, বিভক্তি যুক্ত হয়।

সাধারণত  আ-  কারান্ত,  ই/ঈ- কারণ তো ও  উ / ঊ  কারান্ত, শব্দের শেষে -র বিভক্তি বসে। যেমন- নজরুলের  সাতাশের ইত্যাদি।

 শব্দের শেষে দ্বিস্বর থাকলে-য়ের বিভক্তি হয়। যেমন- ভাইয়ের  বইয়ের  লাউয়ের  মৌয়ের ইত্যাদি।