ড্রাইভিং লাইসেন্স হয়েছে কিনা তা জানতে দুটি উপায় রয়েছে।
প্রথম উপায়:
আপনি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ওয়েবসাইট থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্ট্যাটাস চেক করতে পারেন। এজন্য আপনাকে নিম্নলিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে:
- বিআরটিএ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন (http://www.brta.gov.bd/)।
- “ড্রাইভিং লাইসেন্স স্ট্যাটাস” অপশনে ক্লিক করুন।
- আপনার রেফারেন্স নাম্বার বা ড্রাইভিং লাইসেন্স নাম্বার এবং জন্ম তারিখ প্রদান করুন।
- “সত্যায়ন করুন” বাটনে ক্লিক করুন।
এতে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্ট্যাটাস দেখানো হবে। যদি লাইসেন্সের স্ট্যাটাস “প্রস্তুত” হয়, তাহলে বুঝতে হবে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স হয়ে গেছে।
দ্বিতীয় উপায়:
আপনি আপনার মোবাইল থেকে একটি এসএমএস পাঠিয়েও ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্ট্যাটাস চেক করতে পারেন। এজন্য আপনাকে নিম্নলিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে:
- আপনার মোবাইলের মেসেজ অপশনে যান।
- “DL V [ড্রাইভিং লাইসেন্স নাম্বার]” লিখে 26969 নম্বরে পাঠিয়ে দিন।
এতে আপনাকে একটি এসএমএস ফিরিয়ে দেওয়া হবে, যাতে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্ট্যাটাস উল্লেখ থাকবে।
উল্লেখ্য, ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্ট্যাটাস চেক করার জন্য আপনাকে অবশ্যই আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্সের রেফারেন্স নাম্বার বা ড্রাইভিং লাইসেন্স নাম্বার এবং জন্ম তারিখ জানা থাকতে হবে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকলে কত টাকা জরিমানা হয়?
বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ অনুসারে, ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া মোটরযান চালালে জরিমানার পরিমাণ অনধিক ২৫,০০০ টাকা।
এছাড়াও, ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া মোটরযান চালানোর অপরাধে ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। তবে, আদালতের বিবেচনায় এই শাস্তি কমানো বা মাফ করা যেতে পারে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া মোটরযান চালানো একটি গুরুতর অপরাধ। এটি দুর্ঘটনার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে এবং নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে। তাই, সবাইকে ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে মোটরযান চালানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য কি কি প্রয়োজন?
বাংলাদেশে ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য নিম্নলিখিত কাগজপত্র এবং যোগ্যতা প্রয়োজন:
কাগজপত্র:
- জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা জন্ম নিবন্ধন সনদ বা পাসপোর্ট
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ (৮ম শ্রেণী পাশ)
- ছবি (পাসপোর্ট সাইজের ৩ কপি)
- মেডিকেল সার্টিফিকেট (রেজিস্টার্ড ডাক্তার দ্বারা প্রদত্ত)
যোগ্যতা:
- ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর
- মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ
প্রক্রিয়া:
ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য প্রথমে আপনাকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। আবেদন করার সময় আপনাকে উপরে উল্লেখিত কাগজপত্র আপলোড করতে হবে। আবেদন ফি জমা দেওয়ার পর আপনার আবেদনটি বিআরটিএ-তে গৃহীত হবে।
পরবর্তীতে, আপনাকে বিআরটিএ-র নির্ধারিত কেন্দ্রে গিয়ে লিখিত, মৌখিক এবং ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে আপনাকে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করা হবে।
ফি:
ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফি নিম্নরূপ:
- লার্নার লাইসেন্সের ফিঃ ১০০ টাকা
- ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফিঃ ৫১৮ টাকা
নবায়ন ফি:
- ৫ বছরের জন্যঃ ১০৩৬ টাকা
- ১০ বছরের জন্যঃ ২০৭২ টাকা
বাংলাদেশে ড্রাইভিং লাইসেন্সের ধরণ ও প্রকারভেদ
বাংলাদেশে ড্রাইভিং লাইসেন্সের ধরন ও প্রকারভেদ নিম্নরূপ:
ধরন:
- লার্নার লাইসেন্স: লার্নার লাইসেন্স হল একটি প্রাথমিক লাইসেন্স যা একজন ব্যক্তিকে শিক্ষানবিশ হিসেবে মোটরযান চালানোর অনুমতি প্রদান করে। লার্নার লাইসেন্সের মেয়াদ ৬ মাস।
- অপেশাদার লাইসেন্স: অপেশাদার লাইসেন্স হল একটি সাধারণ লাইসেন্স যা একজন ব্যক্তিকে ব্যক্তিগত বা পারিবারিক কাজে মোটরযান চালানোর অনুমতি প্রদান করে। অপেশাদার লাইসেন্সের মেয়াদ ৫ বছর।
- পেশাদার লাইসেন্স: পেশাদার লাইসেন্স হল একটি বিশেষ লাইসেন্স যা একজন ব্যক্তিকে পেশাদারভাবে মোটরযান চালানোর অনুমতি প্রদান করে। পেশাদার লাইসেন্সের মেয়াদ ৫ বছর।
প্রকারভেদ:
- মোটরযানের ধরন অনুসারে:
- মোটরসাইকেল লাইসেন্স: মোটরসাইকেল চালানোর জন্য এই লাইসেন্স প্রয়োজন।
- মোটরগাড়ি লাইসেন্স: মোটরগাড়ি চালানোর জন্য এই লাইসেন্স প্রয়োজন।
- বাস লাইসেন্স: বাস চালানোর জন্য এই লাইসেন্স প্রয়োজন।
- ট্রাক লাইসেন্স: ট্রাক চালানোর জন্য এই লাইসেন্স প্রয়োজন।
- ট্রাক্টর লাইসেন্স: ট্রাক্টর চালানোর জন্য এই লাইসেন্স প্রয়োজন।
- অন্যান্য মোটরযানের জন্য লাইসেন্স: অন্যান্য মোটরযান, যেমন: রিকশা, অটোরিকশা, ট্রলি, ইত্যাদি চালানোর জন্যও লাইসেন্স প্রয়োজন।
অন্যান্য লাইসেন্স:
- প্রশিক্ষণ লাইসেন্স: প্রশিক্ষণ লাইসেন্স হল একটি বিশেষ লাইসেন্স যা একজন ব্যক্তিকে মোটরযান চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়ার অনুমতি প্রদান করে। প্রশিক্ষণ লাইসেন্সের মেয়াদ ৬ মাস।
- অভিবাসী লাইসেন্স: অভিবাসী লাইসেন্স হল একটি বিশেষ লাইসেন্স যা একজন বিদেশী নাগরিককে বাংলাদেশে মোটরযান চালানোর অনুমতি প্রদান করে। অভিবাসী লাইসেন্সের মেয়াদ ১ বছর।
লাইসেন্সের মেয়াদ:
- লার্নার লাইসেন্স: ৬ মাস
- অপেশাদার লাইসেন্স: ৫ বছর
- পেশাদার লাইসেন্স: ৫ বছর
- প্রশিক্ষণ লাইসেন্স: ৬ মাস
- অভিবাসী লাইসেন্স: ১ বছর
লাইসেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা:
- ন্যূনতম বয়স: ১৮ বছর (পেশাদার লাইসেন্সের জন্য ২১ বছর)
- শিক্ষাগত যোগ্যতা: ৮ম শ্রেণী পাশ
- মেডিকেল সার্টিফিকেট: রেজিষ্টার্ড ডাক্তার দ্বারা প্রদত্ত
লাইসেন্সের জন্য আবেদন প্রক্রিয়া:
- আবেদন ফরম পূরণ: বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ওয়েবসাইট থেকে আবেদন ফরম ডাউনলোড করে পূরণ করতে হবে।
- কাগজপত্র জমা দেওয়া: আবেদন ফরমসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বিআরটিএ-তে জমা দিতে হবে।
- পরীক্ষায় অংশগ্রহণ: লার্নার লাইসেন্সের জন্য কোন পরীক্ষা নেই। অপেশাদার ও পেশাদার লাইসেন্সের জন্য লিখিত, মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।
- লাইসেন্স গ্রহণ: পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে বিআরটিএ থেকে লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে।
বিআরটিএ এর কাজ কি?
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন খাত ও সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বিআরটিএ মোটর যান অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করছে।
বিআরটিএর প্রধান কাজগুলো হল:
- সড়ক পরিবহন আইন, বিধিমালা ও নির্দেশাবলী প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা।
- মোটরযান নিবন্ধন, ফিটনেস ও অনুমোদন প্রদান করা।
- ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান ও নবায়ন করা।
- সড়ক দুর্ঘটনা তদন্ত করা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
- সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা।
বিআরটিএ এর কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে:
- মোটরযান নিবন্ধন: বিআরটিএ মোটরযান নিবন্ধন, ফিটনেস ও অনুমোদন প্রদান করে। মোটরযান নিবন্ধন করা হলে মোটরযানটি আইনত বৈধ বলে গণ্য হয়।
- ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান ও নবায়ন: বিআরটিএ ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান ও নবায়ন করে। ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া মোটরযান চালানো আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
- সড়ক দুর্ঘটনা তদন্ত: বিআরটিএ সড়ক দুর্ঘটনা তদন্ত করে এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধের জন্য বিআরটিএ বিভিন্ন প্রচারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে।
- সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি: বিআরটিএ সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। এছাড়াও, বিআরটিএ সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে বিভিন্ন গবেষণা ও কর্মশালা পরিচালনা করে।
বিআরটিএ এর কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশে সড়ক পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতি ও সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
লাইসেন্স কত প্রকার ও কি কি?
বাংলাদেশে লাইসেন্সের প্রকারভেদ নিম্নরূপ:
ড্রাইভিং লাইসেন্স: ড্রাইভিং লাইসেন্স হল একটি সরকারি অনুমতিপত্র যা একজন ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট শ্রেণীর মোটরযান চালানোর অধিকার প্রদান করে। বাংলাদেশে ড্রাইভিং লাইসেন্সের শ্রেণীবিভাগ নিম্নরূপ:
- লার্নার লাইসেন্স: লার্নার লাইসেন্স হল একটি প্রাথমিক লাইসেন্স যা একজন ব্যক্তিকে শিক্ষানবিশ হিসেবে মোটরযান চালানোর অনুমতি প্রদান করে। লার্নার লাইসেন্সের মেয়াদ ৬ মাস।
- অপেশাদার লাইসেন্স: অপেশাদার লাইসেন্স হল একটি সাধারণ লাইসেন্স যা একজন ব্যক্তিকে ব্যক্তিগত বা পারিবারিক কাজে মোটরযান চালানোর অনুমতি প্রদান করে। অপেশাদার লাইসেন্সের মেয়াদ ৫ বছর।
- পেশাদার লাইসেন্স: পেশাদার লাইসেন্স হল একটি বিশেষ লাইসেন্স যা একজন ব্যক্তিকে পেশাদারভাবে মোটরযান চালানোর অনুমতি প্রদান করে। পেশাদার লাইসেন্সের মেয়াদ ৫ বছর।
প্রশিক্ষণ লাইসেন্স: প্রশিক্ষণ লাইসেন্স হল একটি বিশেষ লাইসেন্স যা একজন ব্যক্তিকে মোটরযান চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়ার অনুমতি প্রদান করে। প্রশিক্ষণ লাইসেন্সের মেয়াদ ৬ মাস।
অভিবাসী লাইসেন্স: অভিবাসী লাইসেন্স হল একটি বিশেষ লাইসেন্স যা একজন বিদেশী নাগরিককে বাংলাদেশে মোটরযান চালানোর অনুমতি প্রদান করে। অভিবাসী লাইসেন্সের মেয়াদ ১ বছর।
নৌযান লাইসেন্স: নৌযান লাইসেন্স হল একটি সরকারি অনুমতিপত্র যা একজন ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট শ্রেণীর নৌযান চালানোর অধিকার প্রদান করে। বাংলাদেশে নৌযান লাইসেন্সের শ্রেণীবিভাগ নিম্নরূপ:
- নৌযান চালক লাইসেন্স: নৌযান চালক লাইসেন্স হল একটি সাধারণ লাইসেন্স যা একজন ব্যক্তিকে নৌযান চালানোর অনুমতি প্রদান করে। নৌযান চালক লাইসেন্সের মেয়াদ ৫ বছর।
- নৌযান মালিক লাইসেন্স: নৌযান মালিক লাইসেন্স হল একটি বিশেষ লাইসেন্স যা একজন ব্যক্তিকে নৌযান মালিকানা ও পরিচালনার অনুমতি প্রদান করে। নৌযান মালিক লাইসেন্সের মেয়াদ ৫ বছর।
অন্যান্য লাইসেন্স: এছাড়াও, বাংলাদেশে অন্যান্য কিছু লাইসেন্স রয়েছে, যেমন:
- অগ্নিনির্বাপক লাইসেন্স: অগ্নিনির্বাপক লাইসেন্স হল একটি বিশেষ লাইসেন্স যা একজন ব্যক্তিকে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি পরিচালনার অনুমতি প্রদান করে।
- পুলিশ লাইসেন্স: পুলিশ লাইসেন্স হল একটি বিশেষ লাইসেন্স যা একজন ব্যক্তিকে পুলিশ বাহিনীর সদস্য হিসেবে মোটরযান চালানোর অনুমতি প্রদান করে।
- সামরিক লাইসেন্স: সামরিক লাইসেন্স হল একটি বিশেষ লাইসেন্স যা একজন ব্যক্তিকে সামরিক বাহিনীর সদস্য হিসেবে মোটরযান চালানোর অনুমতি প্রদান করে।