গৃহদাহ কি ধরনের উপন্যাস?
গৃহদাহ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত একটি কালজয়ী বাংলা উপন্যাস। উপন্যাসটি ১৯২০ সালে প্রকাশিত হয়। গৃহদাহ একটি ত্রিভুজ প্রেমের উপন্যাস। উপন্যাসের তিনটি প্রধান চরিত্র হল অচলা, মহিম এবং সুরেশ। অচলা একজন সুন্দরী ও বুদ্ধিমতী তরুণী। মহিম একজন আদর্শবাদী যুবক। সুরেশ একজন ধনী ও বিত্তশালী ব্যক্তি।
গৃহদাহ উপন্যাসটিকে বিভিন্ন ধরনের উপন্যাসের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। এটি একটি প্রণয় উপন্যাস, কারণ এর মূল উপজীব্য হল প্রেম। এটি একটি সামাজিক উপন্যাস, কারণ এটি সমাজের বিভিন্ন দিক, যেমন প্রেম, বিবাহ, পরিবার, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি ইত্যাদির চিত্রায়ন করে।
এটি একটি মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস, কারণ এটি চরিত্রদের মানসিক দ্বন্দ্ব ও সংঘাতের চিত্রায়ন করে।
গৃহদাহ উপন্যাসটি বাংলা সাহিত্যের একটি অমূল্য সম্পদ। এটি বাংলা সাহিত্যে প্রেম ও সামাজিক বাস্তবতার এক অনবদ্য নিদর্শন।
নির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে, গৃহদাহ উপন্যাসটিকে প্রণয়-সামাজিক উপন্যাস বলা যেতে পারে।
গৃহদাহ উপন্যাসের প্রধান দুটি চরিত্রের নাম কি?
গৃহদাহ উপন্যাসের প্রধান দুটি চরিত্র হল অচলা ও সুরেশ। অচলা একজন সুন্দরী ও বুদ্ধিমতী তরুণী। তিনি একজন আদর্শবাদী যুবক মহিমের প্রেমে পড়েন। কিন্তু তাদের প্রেম বিবাহে পরিণত হয় না।
সুরেশ একজন ধনী ও বিত্তশালী ব্যক্তি। তিনি অচলাকে বিয়ে করেন। অচলার মন কিন্তু মহিমের কাছেই থাকে। এই দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে অচলার জীবন ধ্বংস হয়ে যায়।
অতএব, গৃহদাহ উপন্যাসের প্রধান দুটি চরিত্র হল অচলা ও সুরেশ।
গৃহদাহ উপন্যাসের লেখকের রচনা কোনটি?
গৃহদাহ উপন্যাসের লেখক হলেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিক। তার রচিত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলির মধ্যে রয়েছে দেবদাস, বিসর্জন, পথের পাঁচালী, চোখের বালি, রামের সুমতি ইত্যাদি।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের রচনাগুলি প্রেম, বিরহ, সংসার, সামাজিক বাস্তবতা ইত্যাদি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে রচিত। তার রচনাগুলি বাংলা সাহিত্যে এক অনন্য স্থান দখল করে আছে।
গৃহদাহ উপন্যাসের প্রকাশকাল
গৃহদাহ উপন্যাসটি ১৯২০ সালের মার্চ মাসে প্রকাশিত হয়। এটি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের রচিত একটি কালজয়ী উপন্যাস। উপন্যাসটিতে প্রেম, বিরহ, সংসার, সামাজিক বাস্তবতা ইত্যাদি বিষয়গুলির উপর আলোকপাত করা হয়েছে।
উপন্যাসটির প্রধান চরিত্র অচলা একজন সুন্দরী ও বুদ্ধিমতী তরুণী। তিনি একজন আদর্শবাদী যুবক মহিমের প্রেমে পড়েন। কিন্তু তাদের প্রেম বিবাহে পরিণত হয় না।
সুরেশ একজন ধনী ও বিত্তশালী ব্যক্তি। তিনি অচলাকে বিয়ে করেন। অচলার মন কিন্তু মহিমের কাছেই থাকে। এই দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে অচলার জীবন ধ্বংস হয়ে যায়।
গৃহদাহ উপন্যাসের চরিত্র বিশ্লেষণ
গৃহদাহ উপন্যাসের তিনটি প্রধান চরিত্র হল অচলা, মহিম এবং সুরেশ।
অচলা একজন সুন্দরী ও বুদ্ধিমতী তরুণী। তিনি একজন আদর্শবাদী যুবক মহিমের প্রেমে পড়েন। কিন্তু তাদের প্রেম বিবাহে পরিণত হয় না। সুরেশ একজন ধনী ও বিত্তশালী ব্যক্তি। তিনি অচলাকে বিয়ে করেন। অচলার মন কিন্তু মহিমের কাছেই থাকে। এই দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে অচলার জীবন ধ্বংস হয়ে যায়।
অচলা একজন সৎ, নীতিবান ও সংবেদনশীল নারী। তিনি নিজের মনের কথাকে সঠিক বলে মনে করেন। কিন্তু সামাজিক নিয়মনীতির কাছে তিনি পরাস্ত হন। অচলার চরিত্রে শরৎচন্দ্র নারীর দ্বন্দ্ব ও সংগ্রামের চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন।
মহিম একজন আদর্শবাদী যুবক। তিনি একজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি অচলার প্রেমে পড়েন। কিন্তু তাদের প্রেম বিবাহে পরিণত হয় না। মহিম অচলার জন্য অনেক কিছু করেন। কিন্তু তার আবেগ ও নীতিবোধের সংঘাতের কারণে তিনি অচলাকে হারিয়ে ফেলেন।
মহিমের চরিত্রে শরৎচন্দ্র প্রেমিকের আদর্শ চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন। মহিম একজন ত্যাগী ও নিবেদিতপ্রাণ প্রেমিক। কিন্তু তার নীতিবোধের কারণে তিনি অচলাকে হারিয়ে ফেলেন।
সুরেশ একজন ধনী ও বিত্তশালী ব্যক্তি। তিনি অচলাকে বিয়ে করেন। কিন্তু অচলার মন কিন্তু মহিমের কাছেই থাকে। এই দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে অচলার জীবন ধ্বংস হয়ে যায়।
সুরেশ একজন স্বার্থপর ও অসংযত ব্যক্তি। তিনি অচলাকে ভালোবাসেন না। কিন্তু তার অর্থ ও ক্ষমতার কারণে তিনি অচলাকে বিয়ে করেন। সুরেশের চরিত্রে শরৎচন্দ্র সমাজের ধনী ও ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের অমানবিকতা ও স্বার্থপরতার চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন।
গৃহদাহ উপন্যাসের চরিত্রগুলি বাংলা সাহিত্যে এক অনন্য স্থান দখল করে আছে। এই চরিত্রগুলির মাধ্যমে শরৎচন্দ্র প্রেম, বিরহ, সংসার, সামাজিক বাস্তবতা ইত্যাদি বিষয়গুলির উপর গভীর দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন।
গৃহদাহ উপন্যাসের প্রধান তিনটি চরিত্রের নাম কী?
গৃহদাহ উপন্যাসের প্রধান তিনটি চরিত্র হল:
- অচলা: একজন সুন্দরী ও বুদ্ধিমতী তরুণী। তিনি একজন আদর্শবাদী যুবক মহিমের প্রেমে পড়েন। কিন্তু তাদের প্রেম বিবাহে পরিণত হয় না। সুরেশ একজন ধনী ও বিত্তশালী ব্যক্তি। তিনি অচলাকে বিয়ে করেন। অচলার মন কিন্তু মহিমের কাছেই থাকে। এই দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে অচলার জীবন ধ্বংস হয়ে যায়।
- মহিম: একজন আদর্শবাদী যুবক। তিনি একজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি অচলার প্রেমে পড়েন। কিন্তু তাদের প্রেম বিবাহে পরিণত হয় না। মহিম অচলার জন্য অনেক কিছু করেন। কিন্তু তার আবেগ ও নীতিবোধের সংঘাতের কারণে তিনি অচলাকে হারিয়ে ফেলেন।
- সুরেশ: একজন ধনী ও বিত্তশালী ব্যক্তি। তিনি অচলাকে বিয়ে করেন। কিন্তু অচলার মন কিন্তু মহিমের কাছেই থাকে। এই দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে অচলার জীবন ধ্বংস হয়ে যায়।
এই তিনটি চরিত্রের মাধ্যমে শরৎচন্দ্র প্রেম, বিরহ, সংসার, সামাজিক বাস্তবতা ইত্যাদি বিষয়গুলির উপর গভীর দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন।
গৃহদাহ উপন্যাসের নামকরণের সার্থকতা
গৃহদাহ উপন্যাসের নামকরণের সার্থকতা নিম্নরূপ:
প্রথমত, উপন্যাসের নাম “গৃহদাহ” দ্বারা উপন্যাসের মূল উপজীব্য প্রেম ও বিরহের দ্বন্দ্বকেই বোঝানো হয়েছে। উপন্যাসের প্রধান চরিত্র অচলা একজন সুন্দরী ও বুদ্ধিমতী তরুণী।
তিনি একজন আদর্শবাদী যুবক মহিমের প্রেমে পড়েন। কিন্তু তাদের প্রেম বিবাহে পরিণত হয় না। সুরেশ একজন ধনী ও বিত্তশালী ব্যক্তি। তিনি অচলাকে বিয়ে করেন। অচলার মন কিন্তু মহিমের কাছেই থাকে। এই দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে অচলার জীবন ধ্বংস হয়ে যায়।
দ্বিতীয়ত, “গৃহদাহ” শব্দটি দ্বারা উপন্যাসের সামাজিক বাস্তবতাকেও বোঝানো হয়েছে। উপন্যাসে দেখানো হয়েছে যে, প্রেমের মতো মহৎ অনুভূতিও সমাজের কুসংস্কার ও নিয়মনীতির কাছে পরাজিত হতে পারে। অচলা ও মহিমের প্রেমকে সমাজের কুসংস্কার ও নিয়মনীতি ধ্বংস করে দেয়।
তৃতীয়ত, “গৃহদাহ” শব্দটি দ্বারা উপন্যাসের উপসংহারকেও বোঝানো হয়েছে। উপন্যাসের শেষে দেখানো হয়েছে যে, অচলার জীবন ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর মহিম ও সুরেশও দুঃখ ও অনুশোচনায় ভোগেন। তারা বুঝতে পারেন যে, তারা তাদের আবেগ ও নীতিবোধের সংঘাতের কারণে অচলার জীবন ধ্বংস করে দিয়েছেন।
সুতরাং, গৃহদাহ উপন্যাসের নাম “গৃহদাহ” উপন্যাসের মূল উপজীব্য, সামাজিক বাস্তবতা ও উপসংহারকেই সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছে।
গৃহদাহ উপন্যাসের সমাজ বাস্তবতা
গৃহদাহ উপন্যাসে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বাঙালি সমাজের একাধিক সামাজিক বাস্তবতা তুলে ধরেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:
- সামাজিক কুসংস্কার: উপন্যাসে দেখানো হয়েছে যে, সমাজের কুসংস্কার ও নিয়মনীতি প্রেমের মতো মহৎ অনুভূতিকেও ধ্বংস করতে পারে। অচলা ও মহিমের প্রেমকে সমাজের কুসংস্কার ও নিয়মনীতি ধ্বংস করে দেয়।
- সম্পদ ও ক্ষমতার দাপট: উপন্যাসে দেখানো হয়েছে যে, সমাজে সম্পদ ও ক্ষমতার দাপট মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করে। সুরেশের সম্পদ ও ক্ষমতার দাপটে অচলাকে বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়।
- নারীর দ্বন্দ্ব ও সংগ্রাম: উপন্যাসে অচলার চরিত্রের মাধ্যমে নারীর দ্বন্দ্ব ও সংগ্রামের চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। অচলা একজন সৎ, নীতিবান ও সংবেদনশীল নারী। কিন্তু সামাজিক নিয়মনীতির কাছে তিনি পরাস্ত হন।
- বিবাহের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি: উপন্যাসে দেখানো হয়েছে যে, সমাজে বিবাহকে একটি আর্থিক ও সামাজিক চুক্তি হিসেবে দেখা হয়। অচলা ও সুরেশের বিবাহটিও একটি আর্থিক ও সামাজিক চুক্তির ভিত্তিতে হয়।
গৃহদাহ উপন্যাসের মাধ্যমে শরৎচন্দ্র বাঙালি সমাজের একাধিক সামাজিক বাস্তবতার চিত্র ফুটিয়ে তুলে দিয়েছেন। এই উপন্যাসটি আজও প্রাসঙ্গিক কারণ এটি আজও সমাজের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে।