বাংলাদেশ প্রাচীনতরে গরীবায় সারা বিশ্বের পরিচিত। একটি দেশের পুরাকৃতি সেই দেশের গর্বের সাক্ষ্য বহন করে । এমনই একটি পুরাকৃতি সমৃদ্ধ প্রত্নস্থল বাংলাদেশের নরসিংদী জেলার ওয়ারি বটেশ্বর।
অবস্থানঃ টাঙ্গাইল গাজীপুর নরসিংদী অধিকাংশ জায়গা জুড়ে মধুপুর গড়ে উঠেছে। নরসিংদী জেলায় পাশ দিয়ে বয়ে গেছে পুরাতন ব্রক্ষপুত্র নদ । ময়মনসিংহ পেরিয়ে বেলাব ও শিবপুর উপজেলায় অবস্থিত উয়ারী বটেশ্বর।এ গ্রন্থতান্ত্রিক স্থানটি ঢাকা থেকে সোদপুর কিলোমিটার উত্তর পূর্বে অবস্থিত ।
প্রাচীন ইতিহাসঃ হাল আমলে ওয়ারী বটেশ্বরের উত্তরে মনোহরদী ও বেলাব, পূর্বের রায়পুরা দক্ষিণের শীতলক্ষা নদী। এই বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে ছিল সুসভ্য মানুষজনের বসবাস , ছিল নগর সভ্যতা। পূর্ব দক্ষিণ দিক দিয়ে বেরোবের মেঘনা হয়ে এখানকার ব্যবসা-বাণিজ্য সুদূর জনপদ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। ব্যবসা-বাণিজ্য চলত। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে শুরু করে ভূমধ্যসাগর অঞ্চলের সুদূর রোমান সাম্রাজ্য পর্যন্ত ঈশ্বরের সুখ্যাতি ছড়িয়ে ছিল ।
মাটির নিচে হওয়ার কারণঃ ভূমিকম্প বন্যা প্লাবন আর নদী ভাঙ্গনের কারণে কোন সময়ে এসব অঞ্চলে ভূপ্রকৃতির বড় রকমের ওলট-পালট ঘটে । এসবের ফলে এ মাটির নিচে সভ্যতা । মাটি খুরে আজ পাওয়া গেছে এ নগর যৌনপদের সন্ধান।
উয়ারী বটেশ্বরে প্রাচীন মুদ্রাঃ১৯৩৩ সালে ওয়ারী গ্রামের শ্রমিকরা মাটি খনন করার সময় পাত্রে জমানো কিছু মুদ্রা পায়। স্থানীয় স্কুল শিক্ষক হানিফ পাঠান সেখান থেকে ২০-৩০ টি মুদ্রা সংগ্রহ করেন। এগুলোও ছিল বঙ্গদেশের ও ভারতের প্রাচীনতম রৌপ্যমুদ্রা।
ছাপাস্কিত মুদ্রা ও অন্যান্য প্রান্ত নিদর্শনঃ ১৯৫৬ সালে ওয়ারী গ্রামে পাওয়া যায় চাপাস্কিত মুদ্রার ভান্ডার। তাতে ৪ হাজার এর মত মুদ্রা ছিল।২০০০ সালে খনন করে বেশ কিছু প্রত্ন নিদর্শন পাওয়া যায়। এগুলো হলো প্রাচীন দুর্গ নগর, ইটের স্থাপত্য, বন্দর , রাস্তা, গলি, পোড়া মাটির ফলক, মূল্যবান পাথর, কাচের পুতি মুদ্রা ভান্ডার প্রকৃতি।
দুর্গ নগর ওয়ারী বটেশ্বরঃ ওয়ারী বটেশ্বর এলাকার মাটির নিচে দুর্গ নগরী। এই দুর্গ নগর টির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের আয়তন প্রায় ৬০০ মিটার।
প্রাপ্ত বৌদ্ধবিহারঃ শিবপুর উপজেলার মন্দিরভিটার একটি বৈধ পদ্ম মন্দির আবিষ্কৃত হয়েছে। জানখানটেকে আরো একটি বৌদ্ধ বিহার পাওয়া গেছে।
উপসংহার
অতীতের স্থাপত্য নিদর্শন বুকে ধারণ করে আছে ওয়ারী বটেশ্বর। অনুসন্ধিৎসু মানুষ খুঁজে বের করেছে মাটির নিচে এ শহরকে। দে দেশের প্রাচীন ঐতিহ্যকে লালন করছে মাটির নিচে এ শহরটি।