হুমায়ুন ফরিদী কে ছিলেন
হুমায়ুন ফরিদী ছিলেন একজন বাংলাদেশী অভিনেতা। তিনি মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে ফরীদি চলচ্চিত্র জগতে আগমন করেন। তাকে বাংলা চলচ্চিত্রের একজন কিংবদন্তি অভিনেতা হিসেবে বিভিন্ন মাধ্যমে উল্লেখ করা হয়।
হুমায়ুন ফরিদী ১৯৫২ সালের ২৯ মে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৫ সালে পিতার চাকুরীর সুবাদে মাদারীপুরের ইউনাইটেড ইসলামিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন।
এ সময় মাদারীপুর থেকেই নাট্য জগতে প্রবেশ করেন। তার নাট্যঙ্গনের গুরু বাশার মাহমুদ। তখন নাট্যকার বাশার মাহমুদের শিল্পী নাট্যগোষ্ঠী নামের একটি সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়ে কল্যাণ মিত্রের ‘ত্রিরত্ন’ নাটকে ‘রত্ন’ চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তিনি সর্বপ্রথম দর্শকদের সামনে আত্মপ্রকাশ করেন।
ফরীদি ১৯৭০ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হন এবং ১৯৭৩ সালে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় তিনি ‘নাট্যচক্র’ নামে একটি নাট্যদলের প্রতিষ্ঠা করেন। এই দলের হয়ে তিনি বেশ কয়েকটি নাটকে অভিনয় করেন।
১৯৭৪ সালে ফরীদি থিয়েটার জগতে আত্মপ্রকাশ করেন। তার অভিনীত প্রথম থিয়েটার নাটক ছিল ‘দূরবীন’। এই নাটকে তার অভিনয় দর্শক ও সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করে।
এরপর তিনি আরও অনেক জনপ্রিয় নাটকে অভিনয় করেন, যার মধ্যে রয়েছে ‘আজ রবিবার’, ‘একদিন’, ‘সূর্য তুমি সাথী’, ‘সূর্যের মতো তুমি’, ‘রক্তাক্ত প্রান্তর’, ‘এক মুঠো ভূমি’, ‘হৃদয়ের বাঁশি’, ‘আজকের মানুষ’, ‘একদিন আসবে’ ইত্যাদি।
১৯৮৪ সালে ফরীদি চলচ্চিত্রে অভিষেক করেন। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ছিল ‘ভাঙ্গনের শব্দ শুনি’। এই চলচ্চিত্রে তার অভিনয় দর্শক ও সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করে।
এরপর তিনি আরও অনেক জনপ্রিয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, যার মধ্যে রয়েছে ‘সংশপ্তক’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘মাতৃত্ব’, ‘শঙ্খচিল’, ‘মহানগর’, ‘নয়নমনি’, ‘আম্মাজান’, ‘অমর একুশে’, ‘আয়না’, ‘আয়না বিনোদিনী’, ‘আজ রবিবার’ ইত্যাদি।
হুমায়ুন ফরিদী তার অভিনয়ের জন্য অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা অর্জন করেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (মাতৃত্ব), বাচসাস পুরস্কার (সংশপ্তক, শ্যামল ছায়া, মাতৃত্ব), ফিল্মফেয়ার পুরস্কার (সংশপ্তক, শ্যামল ছায়া, মাতৃত্ব), এবং আনন্দলোক পুরস্কার (সংশপ্তক, শ্যামল ছায়া, মাতৃত্ব)।
২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ফরীদি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতে এক বিরাট শূন্যতা তৈরি হয়।
হুমায়ুন ফরিদী একজন সফল ও জনপ্রিয় অভিনেতা ছিলেন। তিনি তার অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের মনে দীর্ঘদিন ধরে বেঁচে থাকবেন।
কিংবদন্তি অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি
হুমায়ুন ফরীদি ছিলেন একজন বাংলাদেশী অভিনেতা। তিনি মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে ফরীদি চলচ্চিত্র জগতে আগমন করেন। তাকে বাংলা চলচ্চিত্রের একজন কিংবদন্তি অভিনেতা হিসেবে বিভিন্ন মাধ্যমে উল্লেখ করা হয়।
ফরীদি ১৯৫২ সালের ২৯ মে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
ফরীদি তার অভিনয় জীবন শুরু করেন মঞ্চে। ১৯৭৮ সালে তিনি ঢাকা থিয়েটারে যোগ দেন এবং বেশ কয়েকটি নাটকে অভিনয় করেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকগুলির মধ্যে রয়েছে “আত্মস্থ ও হিরন্ময়ীদের বৃত্তান্ত”, “মুনতাসীর ফ্যান্টাসি”, “কীত্তনখোলা”, “কেরামত মঙ্গল” ইত্যাদি।
১৯৮৪ সালে ফরীদি চলচ্চিত্রে অভিষেক করেন। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ছিল “হুলিয়া”। তিনি দ্রুত একজন জনপ্রিয় অভিনেতা হয়ে ওঠেন এবং “দহন”, “ভাঙ্গনের শব্দ শুনি”, “শ্যামল ছায়া”, “জয়যাত্রা”, “অন্তর জ্বালা”, “মাতৃত্ব” ইত্যাদি চলচ্চিত্রে তার অভিনয়ের জন্য প্রশংসিত হন।
ফরীদি তার অভিনয়ের জন্য বেশ কয়েকটি পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি ১৯৮৫ সালে “দহন” চলচ্চিত্রের জন্য বাচসাস পুরস্কার, ১৯৯২ সালে “ভাঙ্গনের শব্দ শুনি”
চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ২০০৪ সালে “মাতৃত্ব” চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং ২০০৫ সালে “অন্তর জ্বালা” চলচ্চিত্রের জন্য মেরিল প্রাইমটাইম অ্যাওয়ার্ডস বাংলাদেশ পেয়েছেন।
ফরীদি ২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। তিনি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন জগতে একজন অমর ব্যক্তিত্ব।
যে কারণে সিনেমায় এসেছিলেন হুমায়ূন ফরীদি
ফরীদি তার অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন। তিনি তার অভিনয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন চরিত্রে নিজেকে মানিয়ে নিতে সক্ষম ছিলেন। তিনি ভালো-মন্দ, হাস্যকর-দুঃখজনক, জটিল-সহজ সব ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তার অভিনয় দর্শকদের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে।
ফরীদি তার অভিনয়ের জন্য অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা অর্জন করেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (মাতৃত্ব), বাচসাস পুরস্কার (সংশপ্তক, শ্যামল ছায়া, মাতৃত্ব), ফিল্মফেয়ার পুরস্কার (সংশপ্তক, শ্যামল ছায়া, মাতৃত্ব), এবং আনন্দলোক পুরস্কার (সংশপ্তক, শ্যামল ছায়া, মাতৃত্ব)।
ফরীদি ২০১২ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতে এক বিরাট শূন্যতা তৈরি হয়।
ফরীদির সিনেমায় আসার কারণ সম্পর্কে তিনি নিজে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “আমি তো মঞ্চ ও টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করছিলাম। কিন্তু আমি মনে করতাম যে চলচ্চিত্র হলো একটি বৃহৎ মাধ্যম।
এখানে আমি আমার অভিনয় দক্ষতা আরও বেশি মানুষের কাছে তুলে ধরতে পারব। তাই আমি চলচ্চিত্রে অভিষেক করি।”ফরীদির সিনেমায় আসার সিদ্ধান্ত ছিল সঠিক।
তিনি তার অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন। তিনি একজন কিংবদন্তি অভিনেতা হিসেবে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
সুবর্ণার প্রেমে হুমায়ুন ফরিদীর পাগলামি
হুমায়ুন ফরিদী ছিলেন একজন জনপ্রিয় অভিনেতা। তিনি তার অভিনয়ের জন্য শুধুমাত্র দর্শকদের মন জয় করেছিলেন না, তার ব্যক্তিত্বের জন্যও তিনি অনেক মানুষের ভালোবাসা অর্জন করেছিলেন। তার জীবনে এমন একজন নারী ছিলেন যার প্রেমে তিনি পাগল হয়েছিলেন। সেই নারীর নাম সুবর্ণা।
হুমায়ুন ফরিদী সুবর্ণাকে প্রথম দেখেছিলেন ১৯৭০ সালে। তখন তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে পড়াশোনা করছিলেন। সুবর্ণা ছিলেন তার এক সহপাঠী। প্রথম দেখাতেই সুবর্ণাকে দেখে ফরিদী মুগ্ধ হয়েছিলেন।
ফরিদী সুবর্ণাকে প্রপোজ করেছিলেন। কিন্তু সুবর্ণা তখন ফরিদীকে ভালোবাসতেন না। তিনি ফরিদীকে শুধুমাত্র একজন ভালো বন্ধু হিসেবেই দেখতেন। ফরিদী সুবর্ণাকে প্রত্যাখ্যান করলেও তার প্রেমে পাগল হয়েছিলেন।
ফরিদী সুবর্ণাকে প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন যে তিনি তার যোগ্য। তিনি তার অভিনয়ের মাধ্যমে সুবর্ণাকে মুগ্ধ করতে চেয়েছিলেন। ফরিদীর অভিনয়ের প্রতিভা দেখে সুবর্ণা ধীরে ধীরে তার প্রতি আকৃষ্ট হতে শুরু করেন।
১৯৮০ সালে ফরিদী এবং সুবর্ণা বিয়ে করেন। তাদের বিয়েতে অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। কারণ ফরিদী তখন একজন অখ্যাত অভিনেতা ছিলেন। কিন্তু সুবর্ণা ফরিদীর প্রতি তার ভালোবাসার কারণে তাকে বিয়ে করেছিলেন।
ফরিদী এবং সুবর্ণা একসাথে সুখে শান্তিতে বসবাস করতেন। কিন্তু ১৯৯০ সালে সুবর্ণা মারা যান। ফরিদী সুবর্ণাকে হারিয়ে খুবই ভেঙে পড়েছিলেন। তিনি তার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সুবর্ণাকে ভুলতে পারেননি।
হুমায়ুন ফরিদী এবং সুবর্ণা প্রেমের এক অমর গল্প। তাদের প্রেমের গল্প আজও অনেক মানুষের হৃদয়ে গেঁথে আছে।
হুমায়ুন ফরিদী সুবর্ণাকে ভালোবাসার জন্য অনেক কিছু করেছিলেন। তিনি সুবর্ণাকে প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন যে তিনি তার যোগ্য। তিনি তার অভিনয়ের মাধ্যমে সুবর্ণাকে মুগ্ধ করতে চেয়েছিলেন। ফরিদীর ভালোবাসা ছিল প্রকৃত এবং অকৃত্রিম। তিনি সুবর্ণাকে সারা জীবন ভালোবেসেছেন।
হুমায়ুন ফরিদী এবং সুবর্ণা প্রেমের এক অমর গল্প। তাদের প্রেমের গল্প আজও অনেক মানুষের হৃদয়ে গেঁথে আছে।
হুমায়ুন ফরীদি সম্পর্কে অজানা ১২ তথ্য
হুমায়ুন ফরীদি ছিলেন একজন জনপ্রিয় অভিনেতা। তিনি তার অভিনয়ের জন্য শুধুমাত্র দর্শকদের মন জয় করেছিলেন না, তার ব্যক্তিত্বের জন্যও তিনি অনেক মানুষের ভালোবাসা অর্জন করেছিলেন। তার জীবন সম্পর্কে অনেক তথ্যই জানা যায়। তবে তার সম্পর্কে কিছু তথ্য রয়েছে যা অনেকেরই অজানা।
হুমায়ুন ফরীদি সম্পর্কে অজানা ১২ তথ্য:
- হুমায়ুন ফরীদির নামের ‘ফরীদি’ অংশটুকু উনার মা ফরিদা ইসলামের নাম থেকে নেওয়া।
- মঞ্চে প্রথম অভিনয় করেন মাদারীপুরে, নাটকের নাম ছিল ‘মুখোশ যখন খুলবে’।
- ইন্টারমিডিয়েট পাশের পর হুমায়ুন ফরীদি ৫ বছর পড়াশোনা না করে ঘুরে বেড়িয়েছেন।
- হুমায়ুন ফরীদির প্রথম থিয়েটার দলের নাম ঢাকা থিয়েটার।
- হুমায়ুন ফরীদির পছন্দের খাবার ছিল মাংস ভুনা, ডাল, ভাত, এবং রুটি।
- হুমায়ুন ফরীদির পছন্দের গান ছিল “ওরে ওরে জীবন আমার”।
- হুমায়ুন ফরীদির পছন্দের রং ছিল কালো।
- হুমায়ুন ফরীদির পছন্দের চলচ্চিত্র ছিল “পপি”।
- হুমায়ুন ফরীদির পছন্দের অভিনেতা ছিলেন আলমগীর।
- হুমায়ুন ফরীদির পছন্দের অভিনেত্রী ছিলেন শাবানা আজমি।
- হুমায়ুন ফরীদির পছন্দের খেলা ছিল ফুটবল।
হুমায়ুন ফরীদির জীবনের কিছু অজানা ঘটনা:
- হুমায়ুন ফরীদির অভিনয় জীবন শুরু হয়েছিল মঞ্চে। তিনি ১৯৭৮ সালে ঢাকা থিয়েটারে যোগ দেন এবং বেশ কয়েকটি নাটকে অভিনয় করেন।
- হুমায়ুন ফরীদি চলচ্চিত্রে অভিষেক করেন ১৯৮৪ সালে। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ছিল “ভাঙ্গনের শব্দ শুনি”।
- হুমায়ুন ফরীদি তার অভিনয়ের জন্য বেশ কয়েকটি পুরস্কার পেয়েছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (মাতৃত্ব), বাচসাস পুরস্কার (সংশপ্তক, শ্যামল ছায়া, মাতৃত্ব), ফিল্মফেয়ার পুরস্কার (সংশপ্তক, শ্যামল ছায়া, মাতৃত্ব), এবং আনন্দলোক পুরস্কার (সংশপ্তক, শ্যামল ছায়া, মাতৃত্ব)।
- হুমায়ুন ফরীদি ২০১২ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
হুমায়ুন ফরীদি ছিলেন একজন গুণী অভিনেতা। তার অভিনয় দক্ষতা এবং ব্যক্তিত্বের জন্য তিনি আজও দর্শকদের মনে বেঁচে থাকবেন।