বাংলাদেশে শিশু অধিকার–আসুন শিশুদের অধিকারের গুচ্ছমালা জেনে নেই

বাংলাদেশে শিশু অধিকার

বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ। এখানে সকল নাগরিকের অধিকার রয়েছে, যার মধ্যে শিশুরাও অন্তর্ভুক্ত। শিশুরা হলো দেশের ভবিষ্যৎ। তাদের সুস্থভাবে বেড়ে ওঠা ও বিকাশের জন্য তাদের অধিকারগুলি রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশে শিশু অধিকার রক্ষার জন্য বেশ কিছু আইন ও নীতিমালা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • জাতীয় শিশু নীতি ২০১১
  • শিশু আইন ১৯৭৪
  • শিশু বিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭
  • শিশু শ্রম (নির্মূলকরণ ও সুরক্ষা) আইন ২০১৬
  • শিশু যৌন নির্যাতন (প্রতিরোধ ও দমন) আইন ২০০০

এই আইন ও নীতিমালাগুলি শিশুদের জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রের অধিকার রক্ষা করে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • বেঁচে থাকার অধিকার
  • উন্নত জীবনযাত্রার অধিকার
  • শিক্ষার অধিকার
  • স্বাস্থ্যসেবার অধিকার
  • খেলাধুলা ও বিনোদনের অধিকার
  • সুরক্ষার অধিকার
  • মত প্রকাশের অধিকার
  • ভোটাধিকার

শিশুদের অধিকারের গুচ্ছমালা

বাংলাদেশে শিশুদের অধিকারের গুচ্ছমালা নিম্নরূপ:

  • বেঁচে থাকার অধিকার: প্রত্যেক শিশুর বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। তাদেরকে সুস্থ ও নিরাপদ পরিবেশে বেড়ে ওঠার সুযোগ দিতে হবে।
  • উন্নত জীবনযাত্রার অধিকার: প্রত্যেক শিশুর একটি উন্নত জীবনযাত্রার অধিকার রয়েছে। তাদেরকে পর্যাপ্ত খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবা পেতে হবে।
  • শিক্ষার অধিকার: প্রত্যেক শিশুর শিক্ষার অধিকার রয়েছে। তাদেরকে বিনামূল্যে প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগ দিতে হবে।
  • স্বাস্থ্যসেবার অধিকার: প্রত্যেক শিশুর স্বাস্থ্যসেবার অধিকার রয়েছে। তাদেরকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা পেতে হবে।
  • খেলাধুলা ও বিনোদনের অধিকার: প্রত্যেক শিশুর খেলাধুলা ও বিনোদনের অধিকার রয়েছে। তাদেরকে খেলাধুলা ও বিনোদনের জন্য সুযোগ দিতে হবে।
  • সুরক্ষার অধিকার: প্রত্যেক শিশুর সুরক্ষার অধিকার রয়েছে। তাদেরকে শোষণ, নির্যাতন ও নিপীড়ন থেকে রক্ষা করতে হবে।
  • মত প্রকাশের অধিকার: প্রত্যেক শিশুর মত প্রকাশের অধিকার রয়েছে। তাদেরকে তাদের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা দিতে হবে।
  • ভোটাধিকার: ১৮ বছরের বেশি বয়সী শিশুদের ভোটাধিকার রয়েছে। তারা নির্বাচনে ভোট দিতে পারে।

শিশু অধিকার রক্ষায় করণীয়

বাংলাদেশে শিশু অধিকার রক্ষার জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি নেওয়া যেতে পারে:

  • আইন ও নীতিমালাগুলির প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
  • শিশু অধিকার সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
  • শিশুদের জন্য সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।
  • শিশুদের অধিকার রক্ষায় সরকার, বেসরকারি সংস্থা ও জনসাধারণের মধ্যে সমন্বয় করতে হবে।

শিশুরা হলো দেশের ভবিষ্যৎ। তাদের সুস্থভাবে বেড়ে ওঠা ও বিকাশের জন্য তাদের অধিকারগুলি রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সকলে মিলে শিশু অধিকার রক্ষায় ভূমিকা রাখতে পারি।

জাতিসংঘ স্বীকৃতি শিশু অধিকার

জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদ (সিআরসি) হল একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তি যা শিশুদের নাগরিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, স্বাস্থ্য এবং সাংস্কৃতিক অধিকার নির্ধারণ করে। এটি ১৯৮৯ সালের ২ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়েছিল এবং ১৯৯০ সালের ২ সেপ্টেম্বর কার্যকর হয়েছিল। সিআরসি হল সবচেয়ে ব্যাপকভাবে অনুমোদিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তি, ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে ১৯১টি দেশ এটি অনুমোদন করেছে।

সিআরসি-তে বর্ণিত শিশু অধিকারগুলি নিম্নরূপ:

  • বেঁচে থাকার অধিকার: প্রত্যেক শিশুর বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। তাদেরকে সুস্থ ও নিরাপদ পরিবেশে বেড়ে ওঠার সুযোগ দিতে হবে।
  • উন্নত জীবনযাত্রার অধিকার: প্রত্যেক শিশুর একটি উন্নত জীবনযাত্রার অধিকার রয়েছে। তাদেরকে পর্যাপ্ত খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবা পেতে হবে।
  • শিক্ষার অধিকার: প্রত্যেক শিশুর শিক্ষার অধিকার রয়েছে। তাদেরকে বিনামূল্যে প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগ দিতে হবে।
  • স্বাস্থ্যসেবার অধিকার: প্রত্যেক শিশুর স্বাস্থ্যসেবার অধিকার রয়েছে। তাদেরকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা পেতে হবে।
  • খেলাধুলা ও বিনোদনের অধিকার: প্রত্যেক শিশুর খেলাধুলা ও বিনোদনের অধিকার রয়েছে। তাদেরকে খেলাধুলা ও বিনোদনের জন্য সুযোগ দিতে হবে।
  • সুরক্ষার অধিকার: প্রত্যেক শিশুর সুরক্ষার অধিকার রয়েছে। তাদেরকে শোষণ, নির্যাতন ও নিপীড়ন থেকে রক্ষা করতে হবে।
  • মত প্রকাশের অধিকার: প্রত্যেক শিশুর মত প্রকাশের অধিকার রয়েছে। তাদেরকে তাদের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা দিতে হবে।
  • ভোটাধিকার: ১৮ বছরের বেশি বয়সী শিশুদের ভোটাধিকার রয়েছে। তারা নির্বাচনে ভোট দিতে পারে।

জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ হল শিশুদের অধিকার রক্ষার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আইনি দলিল। এটি শিশুদের অধিকার সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং শিশুদের অধিকার রক্ষার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকার এবং অন্যান্য সংস্থাগুলিকে অনুপ্রাণিত করেছে।

বাংলাদেশ ১৯৯০ সালে জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ অনুমোদন করে। সনদের বিধানগুলিকে বাস্তবায়নের জন্য, বাংলাদেশ সরকার বেশ কিছু আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • জাতীয় শিশু নীতি ২০১১
  • শিশু আইন ১৯৭৪
  • শিশু বিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭
  • শিশু শ্রম (নির্মূলকরণ ও সুরক্ষা) আইন ২০১৬
  • শিশু যৌন নির্যাতন (প্রতিরোধ ও দমন) আইন ২০০০

এই আইন ও নীতিমালাগুলি শিশুদের অধিকার রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তবে, বাংলাদেশে শিশু অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা এখনও রয়েছে। শিশু যৌন নির্যাতন, শিশু শ্রম, শিশু বিবাহ এবং শিশু নির্যাতন এই ধরনের লঙ্ঘনের মধ্যে রয়েছে।

বাংলাদেশে শিশু অধিকার রক্ষায় আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। এর জন্য, নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি নেওয়া যেতে পারে:

বাংলাদেশে শিশু অধিকার পরিস্থিতি

১৯৯০ সালের ২৬ শে জানুয়ারি জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদের মূল দলিলটি সদস্য রাষ্ট্রসমূহের স্বাক্ষরের জন্য উন্মুক্ত করা হলে প্রথম দিনই বাংলাদেশ এতে স্বাক্ষর করে ।  ১৯৯০ সালের ৩রা আগস্ট বাংলাদেশ এই সনদের বাস্তবায়নের রাষ্ট্রীয় অঙ্গীকার করে ।

দারিদ্র অশিক্ষা অসচেতনতা ইত্যাদির কারণে শিশুরা তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়,  কোনো কোনো  সময় তারা নিম্ন নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার হয় । তাই শিশুদের নিরাপত্তা কল্যাণ ও বিকাশ তথা শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশ সরকার  একটি জাতীয় শিশু নীতি প্রণয়ন করেছে ।

  মাতৃপিতৃহীন ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য বিশেষ সুরক্ষা কার্যক্রম, নারী ও শিশু প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ।  উল্লেখ্যযোগ্য উদ্যোগগুলো হচ্ছে-

 শিশুর  অপুষ্টি দূরীকরণ

সকল শিশুর স্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণ

◉  অন্ধত্ব নির্মূল করার জন্য সকল শিশুকে বিনামূল্য ভিটামিন এ ক্যাপসুল প্রদান ।

  সবার জন্য শিক্ষা কর্মসূচি আওতায় সকল শিশুর জন্য বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ ।

জবরদস্তিমূলক ভারি ও চৌকিপূর্ণ কাজে শিশুদের ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ ।

◉  পথ শিশু ও বিপথগামী শিশুদের বিকাশে ব্যবস্থা গ্রহণ ।

 নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন করা ।

পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন করা

◉  নারী ও শিশু পাচার প্রতিরোধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়ন করা ।

◉  সুবিধা বঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী শিশুদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি প্রদান ইত্যাদি ।

তবে শিশু অধিকার বাস্তবায়নের প্রয়োজন ব্যাপক সচেতনতা ।  সর্বোপরি শিশুদের মধ্যে শিশু অধিকার সম্পর্কে ব্যাপক আগ্রহ সচেতনতা ও চাহিদা সৃষ্টি করতে পারা ।

শিশু যখন জন্মগ্রহণ করে,  তখন সে একান্তই ইন্দ্রিসর্বস্ব প্রাণী থাকে । ধীরে ধীরে সে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমাজের উপযুক্ত সদস্য হিসাবে বেড়ে ওঠে ।  শিশুর বেড়ে ওঠা শুরু হয় পরিবার থেকে । 

পরিবারের গণ্ডি পার হয়ে শিশুকে নতুন নতুন পরিবেশের সঙ্গেও খারাপ খাওয়াতে হয় ।  নতুন পরিবেশ পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে চলার প্রতিক্রিয়ার নাম সামাজিকীকরণ ।

তবে সমাজে বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে শিশুর বিভিন্ন ধরনের বাধা বা প্রতিবন্ধকতা ও রয়েছে ।  এসব প্রতিবন্ধকতার উত্তরণ অতি জরুরী,  অন্যথায়  ভীতিকর মানসিক বৈকল্য নিয়ে শিশুদেরকে বেড়ে উঠতে হবে । 

এ অধ্যায় আমরা সমাজে শিশুর বেড়ে উঠা ও বেড়ে উঠার ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সম্পর্কে জানব ।

সমাজে আমরা বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠি । সামাজিক জীব হিসেবে পরিচিত লাভ করি ।  সেটা আমাদের সামাজিক শিক্ষা ।  শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে  সমাজের নিয়ম-নীতি মূল্যবোধ বিশ্বাস আদর্শ ইত্যাদি । 

যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমরা সামাজিক শিক্ষা আয়ত্ত করে সমাজে উপযুক্ত সদস্য হিসাবে জানিনা প্রতিষ্ঠিত  হই তাকে সামাজিকীকরণ বলে ।  সামাজিকীকরণ একটি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া । 

শিশুর জন্মের পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত এ প্রক্রিয়া চলতে থাকে । শিশু যখন জন্মগ্রহণ করে তখন শিশু প্রাথমিক অভাব পূরণ করে তার মা । এ কারণে মা শিশু অনুকরণীয় আদর্শে পরিণত হয় । 

কিছুকাল পরে শিশু বাবা সহ অন্যান্য মানুষের উপস্থিতি উপলব্ধি করে এবং তার সামাজিক সম্পর্কের গণ্ডি আরো বিস্তৃত হয় ।  পরবর্তীকালে শিশু প্রতিবেশী  সমবয়সী খেলা ও পড়ার সাথী ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন বাহনের মাধ্যমে সামাজিক জীবে পরিণত হয় ।

এভাবে শিশু আদর্শ মূল্যবোধ রীতিনীতি দায়িত্ব-কর্তব্য  সহনশীলতা ইত্যাদি গুণাবলী   অবাও করে সামাজিক জীব হিসাবে ভূমিকা পালনে উৎসাহিত হয় ।

সমাজজীবনে  সামাজিকীকরণের প্রভাব অনেক ।  এ প্রক্রিয়া শিশুকে সামাজিক মানুষে  পরিণত করে ।  সুস্থ ও সুন্দরভাবে বিকশিত হতে অযোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে সহায়তা করে । 

শিশুকে সমাজের দায়িত্বশীল সদস্যে পরিণত হতে এবং সমাজের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সহায়তা করে ।  শিশুকে সমাজের প্রত্যাশা অনুযায়ী আচরণ করতেও শেখায় । 

যেমন-  আমাদের সমাজ প্রত্যাশা করে নারী পুরুষ সকলেই একে অন্যের কাজে সাহায্য সহযোগিতা করবে । এ কাজে আমরা অভ্যস্ত হলে সমাজে প্রত্যাশা অনুযায়ীই আচরণ করা হবে । 

সামাজিকরণ শিশুর জীবনে প্রয়োজনীয় দক্ষতার ও বিকাশ ঘটায় ।  অর্জিত দক্ষতা কাজে লাগিয়ে শিশুনির জীবনের অনেক ঝুঁকি ও সমস্যা মোকাবেলা করতে পারে ।

সামাজিককরণের মাধ্যমে ও এর গুরুত্ব

সামাজিকীকরণ হল একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি সমাজের সদস্য হয় এবং সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য আচরণ, মূল্যবোধ, রীতিনীতি, বিশ্বাস এবং ধারণাগুলি শিখে। সামাজিকীকরণ ব্যক্তির আচরণ, চিন্তাভাবনা এবং অনুভূতির উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে।

সামাজিকীকরণের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি নিম্নলিখিতগুলি অর্জন করে:

  • সামাজিক দক্ষতা: সামাজিকীকরণের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি অন্যদের সাথে যোগাযোগ, সহযোগিতা এবং সামাজিক সম্পর্কের মতো দক্ষতাগুলি শিখে।
  • সামাজিক নিয়ম ও মূল্যবোধ: সামাজিকীকরণের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি সমাজের নিয়ম ও মূল্যবোধগুলি শিখে এবং সেগুলি মেনে চলতে শেখে।
  • সামাজিক পরিচয়: সামাজিকীকরণের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি তার সামাজিক পরিচয় গড়ে তোলে, যার মধ্যে তার লিঙ্গ, বর্ণ, জাতি, ধর্ম এবং অন্যান্য সামাজিক গোষ্ঠীর পরিচয় অন্তর্ভুক্ত থাকে।

সামাজিকীকরণের গুরুত্ব নিম্নরূপ:

  • সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে: সামাজিকীকরণ ব্যক্তিদেরকে সামাজিক রীতিনীতি, মূল্যবোধ এবং বিশ্বাসগুলি মেনে চলতে শেখায়, যা সমাজের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
  • ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব বিকাশে সহায়তা করে: সামাজিকীকরণ ব্যক্তির আচরণ, চিন্তাভাবনা এবং অনুভূতির উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে, যা ব্যক্তিত্ব বিকাশে সহায়তা করে।
  • সমাজে ব্যক্তির সফলতা নিশ্চিত করে: সামাজিকীকরণের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি সমাজে সফল হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা এবং জ্ঞান অর্জন করে।

সামাজিকীকরণের বিভিন্ন মাধ্যম রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:

  • পরিবার: পরিবার হল সামাজিকীকরণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। পরিবারের মাধ্যমে শিশুরা তাদের প্রথম সামাজিক শিক্ষা পায়।
  • বন্ধু: বন্ধুরা সামাজিকীকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। বন্ধুদের সাথে মিথস্ক্রিয়া করার মাধ্যমে শিশুরা সামাজিক দক্ষতা এবং নিয়ম শিখে।
  • শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হল সামাজিকীকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিশুরা সামাজিক মূল্যবোধ এবং নিয়ম শিখে।
  • গণমাধ্যম: গণমাধ্যম হল সামাজিকীকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। গণমাধ্যমের মাধ্যমে শিশুরা সামাজিক মূল্যবোধ, রীতিনীতি এবং ধারণাগুলি শিখে।
  • ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হল সামাজিকীকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিশুরা ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং নিয়ম শিখে।

সামাজিকীকরণ একটি জটিল এবং দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। এটি একটি ব্যক্তির জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে ঘটে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *