ডেঙ্গু জ্বর: লক্ষণ, কারণ এবং প্রতিরোধের উপায়

ডেঙ্গু জ্বর: লক্ষণ, কারণ এবং প্রতিরোধের উপায়

ডেঙ্গু জ্বর একটি সাধারণ মশাবাহিত রোগ, যা ডেঙ্গু ভাইরাসের কারণে ঘটে। এটি প্রধানত এডিস মশার কামড়ের মাধ্যমে ছড়ায়। বিশ্বজুড়ে বিশেষত দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এটি একটি বড় জনস্বাস্থ্য সমস্যা। সঠিক তথ্য এবং সচেতনতার মাধ্যমে এই রোগ থেকে নিজেকে এবং অন্যদের রক্ষা করা সম্ভব।


ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণসমূহ:

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণগুলো সাধারণত ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার ৪-১০ দিনের মধ্যে প্রকাশ পায়। কিছু সাধারণ লক্ষণ হলো উচ্চ জ্বর হঠাৎ তীব্র জ্বর (১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত)। মাথাব্যথা চোখের পেছনে তীব্র ব্যথা। পেশী ও গাঁটের ব্যথা বিশেষত হাত, পা ও কোমরে ব্যথা অনুভূত হয়।চামড়ায় ফুসকুড়ি জ্বর কমার পর শরীরে লালচে দাগ দেখা দিতে পারে। রক্তক্ষরণ  দাঁতের মাড়ি বা নাক থেকে রক্তপাত হতে পারে। বমি এবং বমি বমি ভাব অনেক সময় ডায়রিয়া ও বমি দেখা দেয়।ডেঙ্গু জ্বর যদি গুরুতর হয়, তবে এটি ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার বা ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে পরিণত হতে পারে, যা প্রাণঘাতী। গুরুতর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে ,শ্বাসকষ্ট ,তীব্র পেট ব্যথা ,রক্তচাপ হ্রাস ,অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কাজ না করা



ডেঙ্গু জ্বরের কারণ

ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি প্রকার (DENV-1, DENV-2, DENV-3, DENV-4) রয়েছে। একবার কোনো এক প্রকার ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা সেই ভাইরাসের জন্য কার্যকরী হয়ে যায়। তবে অন্য প্রকার ভাইরাসে আক্রান্ত হলে রোগের তীব্রতা বাড়তে পারে। এডিস মশার মাধ্যমে এই ভাইরাস মানবদেহে প্রবেশ করে। এডিস ইজিপ্টাই এবং এডিস অ্যালবোপিক্টাস মশা ডেঙ্গুর মূল বাহক। এরা সাধারণত দিনের বেলা কামড়ায় এবং ঘরের ভেতর বা আশেপাশে অবস্থান করে।


ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধের উপায়

ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশার বিস্তার রোধ এবং ব্যক্তিগত সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নে কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা আলোচনা করা হলো মশা নিয়ন্ত্রণ বাড়ির আশেপাশে জমে থাকা পানি সরিয়ে ফেলুন। এডিস মশা সাধারণত জমে থাকা পরিষ্কার পানিতে ডিম পাড়ে। ড্রেন, ফুলের টব, কুলার, টায়ার ইত্যাদি নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন। ব্যক্তিগত সুরক্ষা মশার কামড় থেকে বাঁচতে ফুলহাতা পোশাক পরুন। মশা নিরোধক ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করুন। ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করুন।পরিবেশ সচেতনতা প্রতিবেশীদের সচেতন করুন যাতে তারা জমে থাকা পানি সরিয়ে ফেলে।স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করে মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে অংশ নিন। সরকারি পদক্ষেপ স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা মেনে চলুন। ডেঙ্গু প্রতিরোধে ফগিং বা কীটনাশক ছিটানোর কার্যক্রমে সাহায্য করুন।



ডেঙ্গু জ্বর সম্পর্কে ১০টি তথ্য জেনে নিন

ডেঙ্গু জ্বর একটি মশাবাহিত রোগ, যা ডেঙ্গু ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট। এটি সাধারণত এডিস ইজিপ্টাই এবং এডিস এলবোপিকটাস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। ডেঙ্গু সম্পর্কে জেনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমূহ:

কারণ

ডেঙ্গু জ্বর একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা ডেঙ্গু ভাইরাস মাধ্যমে হয়। এই ভাইরাসটি মানুষের মধ্যে এডিস মশা (Aedes aegypti এবং Aedes albopictus) দ্বারা ছড়ায়। ডেঙ্গুর প্রধান কারণগুলো হলো ডেঙ্গু ভাইরাস সংক্রমণ ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি স্ট্রেন (DENV-1, DENV-2, DENV-3, DENV-4) রয়েছে। এদের যেকোনো একটির সংক্রমণেই ডেঙ্গু জ্বর হতে পারে। এডিস মশার কামড়সাধারণত এডিস মশা সকালে এবং সন্ধ্যায় বেশি সক্রিয় থাকে। অপর্যাপ্ত পরিচ্ছন্নতা বাড়ি ও আশেপাশে জমে থাকা পানি এডিস মশার প্রজননের জন্য উপযুক্ত স্থান তৈরি করে। বর্জ্য বা আবর্জনার সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে মশার বিস্তার বেড়ে যায়। আবহাওয়া ও পরিবেশ উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়া ডেঙ্গু মশার বংশবৃদ্ধির জন্য আদর্শ। বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি দেখা যায়।

প্রাথমিক লক্ষণ

উচ্চ তাপমাত্রার জ্বর (১০৪°F বা তার বেশি) তীব্র মাথাব্যথা চোখের পেছনে ব্যথা পেশি ও জয়েন্টে ব্যথা (তাই একে “ব্রেকবোন ফিভার”ও বলা হয়) ত্বকে লালচে ফুসকুড়ি অত্যন্ত ক্লান্তি ও দুর্বলতা অগ্রসর লক্ষণ (ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার বা ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে পরিণত হলে) নাক, মুখ বা মাড়ি থেকে রক্তপাত ত্বকের নিচে রক্তক্ষরণ (বেগুনি বা লালচে দাগ) রক্তচাপ কমে যাওয়া বমি বমি ভাব বা রক্তবমি পেটের ব্যথামলদ্বারের মাধ্যমে রক্তপাত

হেমোরেজিক ডেঙ্গু (Hemorrhagic Dengue)

হেমোরেজিক ডেঙ্গু হলো ডেঙ্গু ভাইরাসের একটি গুরুতর রূপ যা রক্তক্ষরণ, রক্তচাপের পতন এবং সম্ভাব্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষতি ঘটাতে পারে। এটি সাধারণত ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার (DHF) নামে পরিচিত এবং সাধারণ ডেঙ্গু জ্বর থেকে অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।

লক্ষণ উচ্চ জ্বর (১০৪°F বা তার বেশি) রক্তক্ষরণের লক্ষণ ত্বকে লাল দাগ বা র‍্যাশ নাক বা মাড়ি থেকে রক্তপাত মল বা বমিতে রক্তের উপস্থিতি প্লেটলেট সংখ্যা হ্রাস রক্ত জমাট বাঁধার ক্ষমতা কমে যায়। পেট ব্যথা এবং বমি মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান হওয়ার প্রবণতা (লো ব্লাড প্রেশারের কারণে)। প্লাজমা লিকেজ এটি শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলিতে ক্ষতি করতে পারে।

মশার সক্রিয়তা

মশার সক্রিয়তা প্রধানত নির্ভর করে আবহাওয়া, তাপমাত্রা, আর্দ্রতা এবং দিনের সময়ের উপর। নিচে মশার সক্রিয়তার কিছু সাধারণ কারণ ও সময় উল্লেখ করা হলো সময় ভোর ও সন্ধ্যা মশারা সাধারণত এই সময় সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে। এই সময়গুলোতে সূর্যের আলো কম থাকে, যা মশার চলাফেরার জন্য সুবিধাজনক। রাত কিছু প্রজাতির মশা রাতে বেশি সক্রিয় থাকে, যেমন কিউলেক্স মশা।আবহাওয়া মশারা গরম ও আর্দ্র পরিবেশ পছন্দ করে। বর্ষাকালে মশার সংখ্যা বেশি বাড়ে কারণ এই সময় পানিতে ডিম পাড়ার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়। শুষ্ক ও ঠান্ডা আবহাওয়ায় মশার সক্রিয়তা কমে যায়। তাপমাত্রা মশারা সাধারণত ২০–৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় বেশি সক্রিয় থাকে।

জলাভূমি ও স্থির পানি যেখানে স্থির পানি রয়েছে, যেমন ডোবা, নর্দমা বা ফুলের টবে জমে থাকা পানি, সেখানে মশা বেশি পাওয়া যায় আবহাওয়া মশারা গরম ও আর্দ্র পরিবেশ পছন্দ করে। বর্ষাকালে মশার সংখ্যা বেশি বাড়ে কারণ এই সময় পানিতে ডিম পাড়ার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়। শুষ্ক ও ঠান্ডা আবহাওয়ায় মশার সক্রিয়তা কমে যায়। তাপমাত্রা মশারা সাধারণত ২০–৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় বেশি সক্রিয় থাকে। জলাভূমি ও স্থির পানিযেখানে স্থির পানি রয়েছে, যেমন ডোবা, নর্দমা বা ফুলের টবে জমে থাকা পানি, সেখানে মশা বেশি পাওয়া যায়। আলো ও ছায়া সরাসরি সূর্যের আলোতে মশারা কম সক্রিয় থাকে। তাই গাছপালা, ঘন ছায়াযুক্ত জায়গা, এবং ঘরের অন্ধকার স্থানে তাদের উপস্থিতি বেশি দেখা যায়।


মশা প্রতিরোধের উপায়

বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার রাখা।জমে থাকা পানি ফেলে দেওয়া। মশার জাল ব্যবহার করা। মশা তাড়ানোর ক্রিম বা স্প্রে ব্যবহার করা।ডেঙ্গু প্রতিরোধে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ অনুসরণ করা যেতে পারে। নিচে ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য কিছু কার্যকর পরামর্শ দেওয়া হলো জমে থাকা পানি অপসারণপরিষ্কার পানিতে এডিস মশা ডিম পাড়ে, তাই বাড়ির আশেপাশে যেসব স্থানে পানি জমে থাকতে পারে, সেগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করুন।ফুলের টব, পানির পাত্র, পুরনো টায়ার, ক্যান বা বোতলের মতো স্থানে পানি জমতে দেবেন না। মশার বিস্তার রোধ করা মশারি ব্যবহার করুন, বিশেষত ঘুমানোর সময়। জানালা এবং দরজায় নেট লাগিয়ে মশার প্রবেশ ঠেকান। দিনে এবং রাতে মশা তাড়ানোর স্প্রে বা কয়েল ব্যবহার করুন।পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা বাসা ও আশপাশ পরিষ্কার রাখুন। ময়লা-আবর্জনা দ্রুত সরিয়ে ফেলুন। নালা-নর্দমা পরিষ্কার রাখুন যাতে পানি জমতে না পারে।

ডেঙ্গুর চিকিৎসা

ডেঙ্গু জ্বর একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা এডিস মশার কামড়ের মাধ্যমে ছড়ায়। ডেঙ্গুর কোনো নির্দিষ্ট ওষুধ নেই, তবে সঠিক যত্ন ও উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসার মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। ডেঙ্গুর চিকিৎসায় করণীয়গুলো নিচে দেওয়া হলো প্রাথমিক চিকিৎসা পর্যাপ্ত বিশ্রাম রোগীকে সম্পূর্ণ বিশ্রাম নিশ্চিত করতে হবে। শরীরের পানিশূন্যতা রোধ: ডেঙ্গু হলে শরীরের পানির চাহিদা বেড়ে যায়। তাই রোগীকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি, ওরস্যালাইন, ডাবের পানি, ফলের রস ইত্যাদি দিতে হবে। প্যারাসিটামল: জ্বর ও ব্যথা কমানোর জন্য প্যারাসিটামল ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে কোনোভাবেই অ্যাসপিরিন বা আইবুপ্রোফেন জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা যাবে না, কারণ এগুলো রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়ায়।

ডেঙ্গুর পরীক্ষা ও সনাক্তকরণ

ডেঙ্গু জ্বর সনাক্ত করার জন্য কয়েকটি নির্দিষ্ট পরীক্ষার মাধ্যমে রোগটি নিশ্চিত করা যায়। ডেঙ্গু পরীক্ষাগুলো সাধারণত রোগের লক্ষণ দেখা দেওয়ার পর চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী করা হয়। নিচে ডেঙ্গু পরীক্ষার ধরণ এবং সেগুলোর প্রাসঙ্গিক তথ্য দেওয়া হলো NS1 অ্যান্টিজেন টেস্ট উপযোগিতা ডেঙ্গু জ্বরের প্রথম ৫ দিনেই এই পরীক্ষা করা যায়। এটি ডেঙ্গু ভাইরাসের প্রোটিন (NS1) সনাক্ত করে। উপকারিতা দ্রুত ফলাফল পাওয়া যায় এবং সংক্রমণ প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা সম্ভব। ডেঙ্গু অ্যান্টিবডি টেস্ট (IgM এবং IgG) IgM অ্যান্টিবডি টেস্ট রোগের দ্বিতীয় সপ্তাহে বা সংক্রমণের ৪-৫ দিন পর থেকে এটি কার্যকর হয়।

IgG অ্যান্টিবডি টেস্ট পুরোনো বা পূর্বের সংক্রমণ সনাক্ত করতে সহায়তা করে।উপকারিতা সংক্রমণের ধাপ নির্ধারণে কার্যকর। RT-PCR টেস্ট উপযোগিতা ডেঙ্গু ভাইরাসের জিনগত উপাদান শনাক্ত করে। এটি অত্যন্ত নির্ভুল এবং ডেঙ্গুর প্রাথমিক পর্যায়ে করা হয়। উপকারিতা ভাইরাসের সুনির্দিষ্ট ধরন শনাক্ত করা যায়। CBC (Complete Blood Count) লক্ষ্য রক্তের প্লাটিলেট সংখ্যা ও হেমাটোক্রিট মাত্রা পর্যবেক্ষণ করা হয়। কারণ ডেঙ্গু জ্বরে প্লাটিলেটের সংখ্যা কমে যেতে পারে, যা রোগের জটিলতা নির্ধারণে সহায়ক।

পরীক্ষার সময় এবং পরামর্শ

  • ডেঙ্গুর লক্ষণ যেমন জ্বর, মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা, শরীরে লাল দাগ বা র‍্যাশ দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে পরীক্ষা করা উচিত।

গুরুতর ডেঙ্গুর চিকিৎসা

  1. হাসপাতালে ভর্তি: রোগী যদি গুরুতর অবস্থায় চলে যায় (যেমন রক্তচাপ কমে যাওয়া, প্রচণ্ড পেটব্যথা, শ্বাসকষ্ট, অথবা রক্তক্ষরণ) তবে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।
  2. রক্তের পরীক্ষা: প্লাটিলেট কাউন্ট এবং হেমাটোক্রিট মনিটর করা প্রয়োজন।
  3. আইভি ফ্লুইড: গুরুতর ক্ষেত্রে শরীরে তরলের ভারসাম্য বজায় রাখতে স্যালাইন বা আইভি ফ্লুইড দেওয়া হয়।
  4. রক্ত সঞ্চালন: যদি প্লাটিলেট খুব কমে যায় বা রক্তক্ষরণ বেশি হয়, তবে রক্ত সঞ্চালনের প্রয়োজন হতে পারে।

প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • মশার কামড় এড়াতে মশারি ব্যবহার করুন।
  • বাড়ির আশেপাশে জমে থাকা পানি পরিষ্কার রাখুন।
  • এডিস মশা সক্রিয় থাকে দিনের বেলা, তাই দিনের বেলায় শরীর ঢাকা পোশাক পরুন।

ডেঙ্গুর জনসচেতনতা

ডেঙ্গু একটি মশাবাহিত রোগ, যা এডিস মশার কামড়ে হয়। এই রোগ থেকে বাঁচতে জনসচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডেঙ্গু প্রতিরোধে নিচের বিষয়গুলো মেনে চলা উচিত মশার বংশবিস্তার রোধ করুন ঘরের ভেতর ও বাইরের জমে থাকা পানির পাত্র ফেলে দিন বা পরিষ্কার রাখুন। ফুলের টব, টায়ার, ডাবের খোসা ইত্যাদিতে পানি জমতে দেবেন না। পানির ট্যাংক বা পাত্র ঢেকে রাখুন। নিজেকে সুরক্ষিত রাখুন দিনে ও রাতে মশারি ব্যবহার করুন। গায়ে এমন পোশাক পরুন যা পুরো শরীর ঢেকে রাখে। মশা তাড়ানোর ক্রিম বা স্প্রে ব্যবহার করুন।পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বজায় রাখুন বাড়ির আশেপাশে ঝোপঝাড়, ময়লা, এবং আবর্জনা জমতে দেবেন না।

নিয়মিত ড্রেন এবং নর্দমা পরিষ্কার করুন। ডেঙ্গুর লক্ষণ সম্পর্কে জানুন ডেঙ্গুর সাধারণ লক্ষণগুলো হলো জ্বর (৩-৭ দিন স্থায়ী), তীব্র মাথাব্যথা ,চোখের পেছনে ব্যথা ,গায়ে ব্যথা এবং দুর্বলতা ,ত্বকে লাল দাগ বা র‍্যাশ।ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা দিলে কী করবেন দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। প্রচুর পানি ও তরল খাবার গ্রহণ করুন। জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল নিতে পারেন, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী। জনসচেতনতা বাড়ান পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীদের ডেঙ্গু প্রতিরোধের উপায়গুলো জানিয়ে দিন।স্থানীয় কমিউনিটি বা স্কুলে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কর্মসূচি আয়োজন করুন।


ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে কী করবেন?

যদি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন, তবে নিচের বিষয়গুলো অনুসরণ করুন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। পর্যাপ্ত পানি পান করুন শরীরের পানিশূন্যতা দূর করতে প্রচুর পানি, স্যুপ, এবং ওরস্যালাইন পান করুন। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন শরীরকে শক্তি সঞ্চয় করতে দিন। জ্বর কমানোর ব্যবস্থা প্যারাসিটামল ব্যবহার করুন, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী। অ্যাসপিরিন বা আইবুপ্রোফেন এড়িয়ে চলুন কারণ এগুলো রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়ায়।গুরুতর লক্ষণ দেখা দিলে (যেমন তীব্র পেট ব্যথা, রক্তক্ষরণ) দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হন।


উপসংহার

ডেঙ্গু জ্বর একটি প্রতিরোধযোগ্য রোগ। মশার বিস্তার রোধ, ব্যক্তিগত সচেতনতা এবং সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে এটি প্রতিরোধ করা সম্ভব। নিজে সচেতন হন এবং অন্যদেরও সচেতন করুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top