টনসিল হলে কোন খাবার খাবেন না? সহজ সমাধান।

টনসিল হলে কোন খাবার খাবেন না? সহজ সমাধান।

টনসিল হলে খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনা জরুরি। টনসিল হলো গলা এবং মুখের পিছনের অংশে থাকা একটি লিম্ফ নোড যা সংক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তৈরি করে। কিন্তু এটি সংক্রমিত হলে গলা ব্যথা, জ্বর এবং খাবার গিলতে কষ্ট হতে পারে। টনসিলের সমস্যায় কিছু খাবার এড়িয়ে চলা এবং কিছু খাবার খাওয়ার মাধ্যমে দ্রুত আরাম পাওয়া সম্ভব।

যে খাবারগুলো এড়িয়ে চলবেন

১. ঝাল ও মসলা জাতীয় খাবার:
টনসিল সংক্রমণের সময় ঝাল বা মসলা জাতীয় খাবার গলা আরও বেশি জ্বালাপোড়া করতে পারে। এই ধরনের খাবার এড়িয়ে চলুন।

২. ঠান্ডা খাবার ও পানীয়:
আইসক্রিম, কোল্ড ড্রিংক, ঠান্ডা পানি বা যেকোনো ঠান্ডা খাবার গলার প্রদাহ বাড়িয়ে দিতে পারে।

৩. শুকনো ও শক্ত খাবার:
বিস্কুট, টোস্ট, চিপস বা শুকনো ও শক্ত ধরনের খাবার গলায় আটকে গিয়ে ব্যথা বাড়াতে পারে

  1. অ্যাসিডিক খাবার:
    লেবু, টমেটো, আচার জাতীয় খাবার গলার ব্যথা আরও বাড়াতে পারে।

৫. তেলে ভাজা খাবার:
তেলে ভাজা খাবার যেমন পুরি, সিঙ্গারা বা ফাস্ট ফুড গলার অস্বস্তি ও প্রদাহ বাড়িয়ে দিতে পারে।

যে খাবারগুলো উপকারী

১. গরম পানীয় বা স্যুপ:
মুরগির স্যুপ, গরম ভেষজ চা বা লেবুর জল হালকা গরম করে পান করলে গলায় আরাম পাওয়া যায়।

২. মধু:
মধুতে প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান আছে। এটি গলায় আরাম দেয় এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করে।

৩. নরম ও সহজপাচ্য খাবার:
খিচুড়ি, ওটমিল, নরম ভাত বা সেদ্ধ সবজি টনসিলের সময় সহজে গিলে খাওয়া যায় এবং গলা কম বিরক্ত হয়।

৪. গরম লবণ পানি দিয়ে গার্গল:
এটি ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে কার্যকর। দিনে ২-৩ বার গরম লবণ পানি দিয়ে কুলি করুন।

৫. দই ও প্রোবায়োটিক খাবার:
প্রোবায়োটিকসমৃদ্ধ খাবার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং সংক্রমণ কমায়। তবে দই বেশি ঠান্ডা হয়ে গেলে তা এড়িয়ে চলুন।

৬. ফল ও ফলের রস:
কলা, পাকা পেঁপে বা আপেলের মতো নরম ফল টনসিলের জন্য ভালো। তবে টক ফল বা ফলের রস এড়িয়ে চলুন।

টনসিল হলে খাবার নিয়ম কী খাবেন এবং কী এড়াবেন?

টনসিল (টনসিলাইটিস) হলে সঠিক খাবার নির্বাচন ও কিছু খাবার এড়িয়ে চলা সুস্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি সাধারণত গলার টনসিলের প্রদাহের কারণে হয়, যা ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ফলে হতে পারে। নিচে টনসিল হলে কী খাবেন এবং কী এড়াবেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

টনসিল হলে কী খাবেন:

১. তরল ও নরম খাবার:

টনসিল হলে গলার ব্যথা ও অস্বস্তি কমাতে নরম ও সহজপাচ্য খাবার খাওয়া উপকারী।

  • সুপ: মুরগি বা সবজির স্যুপ গলা শীতল রাখতে সাহায্য করে।
  • দই: ঠান্ডা দই গলার প্রদাহ কমাতে সহায়ক।
  • ফল ও সবজির স্মুদি: সহজে খাওয়া যায় এবং এতে ভিটামিন ও মিনারেল পাওয়া যায়।
  • ওটস ও সেমাই: নরম ও সহজে হজমযোগ্য।

২. হালকা গরম পানীয়:

হালকা গরম চা বা পানীয় গলা শীতল করে এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।

  • মধু মেশানো গরম পানি: এটি প্রদাহ কমাতে ও গলা নরম করতে কার্যকর।
  • আদা চা: প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান রয়েছে।

৩. প্রচুর পানি পান:

শরীরের আর্দ্রতা ধরে রাখতে এবং গলার শুষ্কতা এড়াতে প্রচুর পানি পান করুন।

৪. ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার:

ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করতে ভিটামিন সি-এর উৎস যেমন কমলালেবু, মাল্টা, এবং লেবুর রস উপকারী।

৫. শীতল খাবার:

গলা ব্যথা কমাতে কিছু শীতল খাবার উপকারী হতে পারে, যেমন:

  • ঠান্ডা আইসক্রিম (অতিরিক্ত নয়)।
  • ফ্রোজেন ফলের পিউরি।

টনসিল হলে কী এড়াবেন:

১. মসলাদার খাবার:

মশলা, চিলি, বা ঝালযুক্ত খাবার গলার প্রদাহ বাড়াতে পারে।

২. কড়া ও শক্ত খাবার:

খাবার গলতে গেলে টনসিলের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে, যা ব্যথা বাড়ায়। যেমন:

  • শক্ত রুটি বা টোস্ট।
  • বাদাম বা চিপস।

৩. অ্যাসিডিক খাবার ও পানীয়:

লেবু, আনারস, বা অম্লীয় ফলের রস গলার ব্যথা আরও বাড়াতে পারে।

৪. অতিরিক্ত ঠান্ডা খাবার:

যদিও শীতল খাবার আরাম দিতে পারে, তবে খুব বেশি ঠান্ডা খাবার এড়ানো উচিত কারণ এটি সংক্রমণ বাড়াতে পারে।

৫. ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল:

ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল শরীরকে ডিহাইড্রেট করতে পারে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে।

৬. প্রক্রিয়াজাত খাবার:

ফাস্ট ফুড বা প্যাকেটজাত খাবারে থাকা অতিরিক্ত লবণ ও রাসায়নিক গলার সমস্যা বাড়াতে পারে।

টনসিলের সময় এড়িয়ে চলুন এই ১০টি খাবার

টনসিল সমস্যা বা টনসিলাইটিস হলো টনসিল নামক লিম্ফয়েড টিস্যুর প্রদাহ। এটি সাধারণত ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে ঘটে। এই অবস্থায় গলা ব্যথা, গিলতে কষ্ট, জ্বর এবং ক্লান্তি দেখা দিতে পারে। টনসিল সমস্যার সময় খাদ্যাভ্যাসের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া জরুরি, কারণ কিছু খাবার এই অবস্থাকে আরও খারাপ করতে পারে। এখানে টনসিল সমস্যার সময় এড়িয়ে চলা উচিত ১০টি খাবার তুলে ধরা হলো:

১. ঠান্ডা পানীয় ও আইসক্রিম

ঠান্ডা পানীয় এবং আইসক্রিম টনসিলের প্রদাহকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। এগুলি গলার টিস্যুকে ঠান্ডা করে রক্ত প্রবাহ কমিয়ে দেয়, যা আরোগ্য প্রক্রিয়া ধীর করে।

২. তেলেভাজা ও চর্বিযুক্ত খাবার

তেলেভাজা খাবার যেমন পেঁয়াজু, সিঙ্গারা বা চিপস গলা শুষ্ক করে এবং প্রদাহ বাড়ায়। এ ছাড়া চর্বিযুক্ত খাবার হজমের উপর চাপ ফেলে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে।

৩. মশলাযুক্ত খাবার

ঝাল এবং অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার টনসিলের সংবেদনশীল টিস্যুকে আরও জ্বালাপোড়া করে তোলে। এই ধরনের খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।

৪. খুব বেশি গরম খাবার বা পানীয়

গরম খাবার বা পানীয় গলার টিস্যুকে আরও সংবেদনশীল করে তোলে এবং প্রদাহ বাড়ায়। তাই হালকা গরম খাবার বা পানীয় গ্রহণ করা উচিত।

৫. টক জাতীয় ফল ও রস

টক ফল যেমন কমলা, লেবু, বা আনারস টনসিলের সংক্রমণকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। এগুলোর মধ্যে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড গলার টিস্যুকে জ্বালাপোড়া করতে পারে।

৬. চকোলেট ও মিষ্টি

চকোলেট এবং অন্যান্য মিষ্টিজাতীয় খাবার গলার ভেতরে জীবাণুর বৃদ্ধি বাড়াতে পারে। এর ফলে সংক্রমণ আরও গুরুতর হতে পারে।

৭. কার্বনেটেড ড্রিঙ্কস

সফট ড্রিঙ্কস বা কার্বনেটেড ড্রিঙ্কস গলার টিস্যুকে শুষ্ক করে তোলে এবং প্রদাহ বাড়ায়। এ ধরনের পানীয় একেবারেই এড়িয়ে চলা উচিত।

৮. অতিরিক্ত লবণাক্ত খাবার

লবণাক্ত খাবার যেমন প্রক্রিয়াজাত স্ন্যাকস বা প্যাকেটজাত খাবার গলা শুষ্ক করে এবং প্রদাহ আরও তীব্র করতে পারে।

৯. কাঁচা সবজি ও ফল

টনসিলের সময় কাঁচা সবজি বা শক্ত খাবার চিবাতে কষ্ট হতে পারে এবং গলার টিস্যুতে চাপ সৃষ্টি করে। তাই রান্না করা বা নরম খাবার বেছে নেওয়া উচিত।

১০. দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য

দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য গলায় শ্লেষ্মা তৈরি করে, যা গিলতে কষ্ট বাড়ায়। তাই টনসিল সমস্যার সময় এ ধরনের খাবার এড়ানো ভালো।

টনসিলের ব্যথা কমাতে কোন খাবার খাবেন না?

টনসিলের ব্যথা হলে কিছু খাবার এড়িয়ে চলা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো ব্যথা বাড়াতে বা আরামদায়ক না হতে পারে। এছাড়া কিছু সাধারণ পরামর্শ ও খাদ্যাভ্যাস টনসিলের ব্যথা থেকে আরাম পেতে সাহায্য করতে পারে। এখানে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

টনসিলের ব্যথায় এড়িয়ে চলা উচিত যে খাবারগুলো

১. মশলাদার ও ঝাল খাবার
ঝাল এবং অতিরিক্ত মশলাদার খাবার টনসিলের সংবেদনশীল টিস্যুকে আরো বেশি উত্তেজিত করতে পারে।
উদাহরণ: মরিচ, গরম মশলা দিয়ে রান্না করা খাবার।

২. গরম ও অতিরিক্ত ঠান্ডা পানীয়
অতিরিক্ত গরম চা বা কফি এবং খুব ঠান্ডা পানীয় টনসিলের জন্য আরামদায়ক নয়। গরম পানীয় গলা পোড়ার অনুভূতি দিতে পারে, আর ঠান্ডা পানীয় সংক্রমণ বাড়াতে পারে।

৩. কড়া তেলযুক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার
এই ধরনের খাবার গলায় আটকে গিয়ে টনসিলের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
উদাহরণ: পেঁয়াজু, সিঙারা, বা চিপস।

  1. শুকনো বা শক্ত খাবার
    শক্ত এবং শুকনো খাবার টনসিলকে আঘাত করতে পারে, যা ব্যথা বাড়ায়।
    উদাহরণ: কড়কড়ে বিস্কুট, পপকর্ন।
  2. অ্যালকোহল ও কার্বনেটেড ড্রিঙ্কস
    অ্যালকোহলিক পানীয় এবং কোলা জাতীয় পানীয় গলায় শুষ্কতার সৃষ্টি করে, যা আরামদায়ক নয়।

টনসিলের ব্যথা কমাতে সহায়ক খাদ্যাভ্যাস

১. কুসুম গরম পানীয়
কুসুম গরম পানি, মধু মিশ্রিত গরম চা, বা আদা দিয়ে তৈরি গরম পানীয় ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

২. নরম এবং সহজে গিলে খাওয়া যায় এমন খাবার
নরম এবং তরল খাবার টনসিলের চাপ কমাতে কার্যকর।
উদাহরণ: খিচুড়ি, পুডিং, স্যুপ।

৩. দই এবং দুধের পণ্য
ঠান্ডা দই গলার ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। তবে অতিরিক্ত ঠান্ডা খাবেন না।

৪. ফল ও সবজির রস
তাজা ফলের রস, বিশেষ করে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ রস (যেমন: কমলা, লেবু) শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

৫. মধু এবং লেবু মিশ্রিত পানীয়
মধুর প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণাবলী এবং লেবুর ভিটামিন সি সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করে।

টনসিল ব্যথা কমানোর অন্যান্য ঘরোয়া টিপস

  • গার্গল করা
    কুসুম গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে দিনে ২-৩ বার গার্গল করুন। এটি সংক্রমণ কমায় এবং ব্যথা প্রশমিত করে।
  • আরামদায়ক পরিবেশ বজায় রাখা
    ধূমপান ও ধুলোময় পরিবেশ এড়িয়ে চলুন।
  • পর্যাপ্ত বিশ্রাম
    শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে যথেষ্ট ঘুম এবং বিশ্রাম নিন।

যখন ডাক্তার দেখানো প্রয়োজন

টনসিলের ব্যথা যদি কয়েক দিনেও না কমে বা সঙ্গে নিচের উপসর্গগুলো দেখা দেয়, তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন:

  • গলায় পুঁজ জমে যাওয়া।
  • উচ্চ জ্বর।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top