কারক
বাক্যে ক্রিয়াপদের সঙ্গে নামপদের যে সম্পর্ক তাকে কারক বলে। বাক্যের অর্থ বোঝার জন্য কারক সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন।
কারকের প্রকারভেদ
বাংলা ভাষায় কারক ছয় প্রকার। যথা:
- কর্তৃকারক
- কর্মকারক
- করণকারক
- সম্প্রদান কারক
- অপাদান কারক
- অধিকরণ কারক
কর্তৃকারক
বাক্যে ক্রিয়া সম্পাদনকারী পদকে কর্তৃকারক বলে। যেমন:
- **আমি **বই পড়ি।
- **ছেলেরা **ফুটবল খেলে।
কর্মকারক
বাক্যে ক্রিয়া সম্পাদনের ফলে যে পদ প্রভাবিত হয় তাকে কর্মকারক বলে। যেমন:
- **আমি **বই পড়লাম।
- **ছেলেরা **ফুটবল খেলল।
করণকারক
বাক্যে ক্রিয়া সম্পাদনে যার সাহায্য নেওয়া হয় তাকে করণকারক বলে। যেমন:
- **আমি **পেন্সিল দিয়ে লিখি।
- **ছেলেরা **বল দিয়ে খেলে।
সম্প্রদান কারক
বাক্যে ক্রিয়া কারো জন্য সম্পাদিত হয় তাকে সম্প্রদান কারক বলে। যেমন:
- **আমি **মাকে চিঠি দিলাম।
- **ছেলেরা **শিক্ষককে ফুল দিল।
অপাদান কারক
বাক্যে ক্রিয়া থেকে কিছু দূরে সরে যায় তাকে অপাদান কারক বলে। যেমন:
- **আমি **ঘর থেকে বের হলাম।
- **ছেলেরা **স্কুল থেকে ছুটি পেল।
অধিকরণ কারক
বাক্যে ক্রিয়া কোন স্থান, কাল, উপায়, পরিমাণ, সম্বন্ধ ইত্যাদির সাথে সম্পর্কিত হয় তাকে অধিকরণ কারক বলে। যেমন:
- **আমি **ঘরে **বসে **পড়ছি।
- **ছেলেরা **কাল **স্কুলে **যাবে।
বিভক্তি
বাক্যস্থিত একটি শব্দের সঙ্গে অন্য শব্দের অন্বয় সাধনের জন্য শব্দের সঙ্গে যে সকল বর্ণ যুক্ত হয় তাদের বিভক্তি বলে। যেমন:
- **আমি **বই পড়ি।
- **ছেলেরা **ফুটবল খেলে।
বিভক্তির প্রকারভেদ
বাংলা ভাষায় বিভক্তি সাত প্রকার। যথা:
- প্রথমা বিভক্তি
- দ্বিতীয়া বিভক্তি
- তৃতীয়া বিভক্তি
- চতুর্থী বিভক্তি
- পঞ্চমী বিভক্তি
- ষষ্ঠী বিভক্তি
- সপ্তমী বিভক্তি
প্রথমা বিভক্তি
বাক্যে কর্তৃকারক পদকে প্রথমা বিভক্তি যুক্ত হয়। যেমন:
- **আমি **বই পড়ি।
- **ছেলেরা **ফুটবল খেলে।
দ্বিতীয়া বিভক্তি
বাক্যে কর্মকারক, সম্প্রদান কারক, অপাদান কারক, অধিকরণ কারক পদকে দ্বিতীয়া বিভক্তি যুক্ত হয়। যেমন:
- **আমি **বই **পড়লাম।
- **আমি **মাকে **চিঠি দিলাম।
- **আমি **ঘর থেকে **বের হলাম।
- **আমি **ঘরে **বসে **পড়ছি।
তৃতীয়া বিভক্তি
বাক্যে করণকারক পদকে তৃতীয়া বিভক্তি যুক্ত হয়। যেমন:
- **আমি **পেন্সিল দিয়ে **লিখি।
চতুর্থী বিভক্তি
বাক্যে সম্পত্তিবাচক বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনামপদকে চতুর্থী বিভক্তি যুক্ত হয়। যেমন:
- **আমার **বই।
- **সুন্দর **বাড়ি।
- **সে **যার?
পঞ্চমী বিভক্তি
বাক্যে কাল, পরিমাণ, উপায়, সম্বন্ধ ইত্যাদির সাথে সম্পর্ক
কারক প্রশ্ন উত্তর
১/ প্রশ্নঃ আধার শব্দের অর্থ কি ?
উত্তর স্থান
২/ প্রশ্নঃ সম্বন্ধ কারক সাথে এই কারক ক্রিয়ার সাথে সম্পর্ক কি?
উত্তর পরোক্ষ
৩/ প্রশ্নঃ কর্তা যা দ্বারা ক্রিয়া সম্পাদন করে, তাকে বলে ?
উত্তরঃকরণকারক
৪/ প্রক্রিয়ার সঙ্গে কোন পদের সম্পর্ককে কারক বলে ?
উত্তর বিশেষ্য ও অনুসর্গ
৫/ প্রশ্নকারকে সাধারণত কি দ্বারা যুক্ত হয়
উত্তর অনুসর্গ দ্বারা যুক্ত হয়
৬/ প্রশ্ন কর্তা কারকে স্যার দারুন তো কি দ্বারা যুক্ত হয় না
উত্তর বিভক্তি দ্বারা যুক্ত হয় না
৭/ প্রশ্ন বেগম রোকিয়া সমাজে নানা রকম অন্তরটা ও গোঁড়ামি ও কুসংস্কার কে কি ভাষায় সমালোচনা করে গেছেন।
উত্তর তীব্র ভাষায়
৮/ প্রশ্ন বসন্তে ফুল ফোটে’ -‘বসন্তে’ কোন কারক?
উত্তর অধিকরণ কারক
৯/ প্রশ্নঃ কোনটি অধিকরণ কারকে শূন্য বিভক্তির উদাহরণ?
উওরঃ বাবা বাড়ি নেই
১০/ প্রশ্নঃ ‘ব্যায়ামে শরীর ভাল হয়’ -বাক্যে ব্যায়ামে শব্দটি কোন কারকে কোন্ বিভক্তি?
উওরঃ করণ কারকে সপ্তমী
১১/ প্রশ্নঃ ক্রিয়া পদের সাথে সম্বন্ধযুক্ত পদকে কি বলে?
উওরঃ কারক
১৩/ প্রশ্নঃ অনেক বৈয়াকরণ কোন কারক স্বীকার করেন না ?
উওরঃসম্প্রদান
১৪/ প্রশ্নঃ‘ঘরেতে ভ্রমর এল গুণগুণিয়ে’- ঘরেতে কোন কারক?
উওরঃ অধিকরণে ৭মী
১৫/ প্রশ্নঃ অনেক বৈয়াকরণ কোন কারক স্বীকার করেন না ?
উওরঃ সম্প্রদান
বিভক্তি প্রশ্ন উত্তর
বাক্যর শব্দগুলোর নির্দিষ্ট বিন্যাস থাকে। বিন্যাসই সমগ্র বাক্যর অর্থ স্পষ্ট করে দেয়। দেখা যায়, বাক্যর যথাযথ অর্থ জ্ঞাপনের জন্য বাক্যস্থিত নাম শব্দগুলোর সঙ্গে কখনো কখনো বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি যুক্ত হয়ে থাকে।
এই বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি নাম বিভক্তি। বাংলা বাক্যর পদগুলোর পারস্পরিক সম্পর্কের টিতে কারক নির্দেশের জন্য এই বিভক্তিগুলোর সবিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।
অনেক সময় বিভক্তির প্রয়োজন পড়ে না পুনা। বিভক্তি না থাকলে শূন্য বিভক্তি (০ ) ধরে নিতে হয় যেমনঃ
সন্ধ্যায় আকাশে চাঁদ উঠেছে।
প্রশ্ন বিভক্তি কয় প্রকার ও কি কি ?
উত্তর বিভক্তি দুই প্রকার যথা; ১ শব্দ বিভক্তি ২ নাম বিভক্তি।
প্রশ্ন ভিক্ষুককে ভিক্ষা দাও ?
উত্তর (ভিক্ষুক+কে ) ।
ধাতু বা ক্রিয়াপদের সঙ্গে যেসব বিভক্তি যুক্ত হয় তাদেরকে কি বলে ?
উত্তর তাদেরকে শব্দ বিভক্তি বলে ।
প্রশ্ন শব্দ বিভক্তি কত প্রকার ?
উত্তর সাত প্রকার।
প্রশ্ন বাংলায় অনেক ক্ষেত্রেই বিভক্তিহীন পদ পাওয়া যায় এই অনুপস্থিত বিভক্তি কে কি বলা হয় ?
উত্তর শুন্য ( ০ ) বিভক্তি বলা হয়।