ফয়েজ লেক ৩৩৬ একর জমির উপর অবস্থিত। এই লেকটি পাহাড়ের এক শীর্ষ থেকে আরেক শীর্ষের মধ্যবর্তী একটি সংকীর্ণ উপত্যকায় আড়াআড়ি ভাবে বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে সৃষ্ট।
বাঁধটি চট্টগ্রাম শহরের উত্তর দিকের পাহাড় শ্রেণীর থেকে নেমে আসা পানির প্রবাহের দিক পরিবর্তনের মাধ্যমে এই লেকটিকে সৃষ্টি করেছে। ভূ-তাত্ত্বিকভাবে এইসব পাহাড় শ্রেণী দুপিটিলা স্তর সমষ্টির শিলা দ্বারা গঠিত। ফয়েজ হ্রদের পাশেই আছে চট্টগ্রাম শহরের সবচেয়ে উঁচু পাহাড় বাটালি পাহাড়।
পাহাড়তলী রেলস্টেশনের দক্ষিণ কোল ঘেঁষে আরেকটি কৃত্রিম হ্রদ রয়েছে। ফয়েজ হ্রদ তৈরির পূর্বে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ১৯২০ সালে এটি খনন করে।
ফয়েজ লেক চট্টগ্রামের একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। এখানে দর্শনার্থীরা নৌকা ভ্রমণ, সাইকেল চালানো, এবং বাটালি পাহাড়ে আরোহণের সুযোগ পায়। লেকের চারপাশে রয়েছে সুন্দর সবুজ গাছপালা এবং ফুলের বাগান। লেকের পানিতে জলজ উদ্ভিদ এবং প্রাণীর বিচরণ লক্ষ্য করা যায়।
ফয়েজ লেকের কিছু উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল:
- এটি চট্টগ্রামের বৃহত্তম কৃত্রিম হ্রদ।
- এটি চট্টগ্রাম শহরের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে একটি।
- এটি একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত স্থান।
- এটি একটি জীববৈচিত্র্যপূর্ণ এলাকা।
ফয়েজ লেক চট্টগ্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। এটি চট্টগ্রামের পর্যটন শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
ভয়েজ লেকে কি আছে
ফয়েজ লেকে অনেক কিছু আছে। এখানে কিছু উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে:
- সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য: ফয়েজ লেকের চারপাশে রয়েছে সুন্দর সবুজ গাছপালা এবং ফুলের বাগান। লেকের পানি পরিষ্কার এবং স্বচ্ছ। পাহাড়ের গায়ে ছোট ছোট ঝর্ণা লেকের পানিতে মিশে মনোরম পরিবেশ তৈরি করেছে।
- জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র: ফয়েজ লেক চট্টগ্রামের একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থী এই লেকটিতে ঘুরতে আসেন। এখানে নৌকা ভ্রমণ, সাইকেল চালানো, এবং বাটালি পাহাড়ে আরোহণের সুযোগ রয়েছে।
- জীববৈচিত্র্যপূর্ণ এলাকা: ফয়েজ লেক একটি জীববৈচিত্র্যপূর্ণ এলাকা। লেকের পানিতে বিভিন্ন ধরনের জলজ উদ্ভিদ এবং প্রাণী বাস করে। লেকের চারপাশে বিভিন্ন ধরনের পাখি দেখা যায়।
ফয়েজ লেক চট্টগ্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। এটি চট্টগ্রামের পর্যটন শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
ফয়েজ লেকের টিকিটের মূল্য এবং প্রবেশ মূল্য
ফয়েজ লেকের টিকিটের মূল্য এবং প্রবেশ মূল্য
ফয়েজ লেকে প্রবেশের জন্য জনপ্রতি টিকিট মূল্য ৩০০ টাকা। এছাড়া আপনি যদি সকল রাইড + একটি আইসক্রিম ফ্রি পেতে চান তাহলে ফয়েজ লেকের প্রবেশ টিকিটের মূল্য ৩৫০ টাকা। (নৌকা যাত্রা এবং বাম্পার কার ব্যতিত)।
সী ওয়ার্ল্ডে প্রবেশের জন্য মোট ৪০০, ৫০০, এবং ৬০০ টাকার তিনটি প্যাকেজ রয়েছে। এই ৩ টি প্যাকেজ থেকে আপনি আপনার পছন্দ মত প্যাকেজ গ্রহন করে সী ওয়ার্ল্ডে প্রবেশ করতে পারবেন।
সী ওয়ার্ল্ডের প্যাকেজগুলোর বিস্তারিত মূল্য নিম্নরূপ:
৪০০ টাকার প্যাকেজ:
- প্রবেশ মূল্য
- ওয়াটার কোস্টার
- ওয়াটার স্লাইড
- ওয়াটার গান
- ওয়াটার থ্রিলার
- ওয়াটার টার্ন
- ওয়াটার ব্রেকডাউন
- ওয়াটার বুলেট
৫০০ টাকার প্যাকেজ:
- প্রবেশ মূল্য
- ওয়াটার কোস্টার
- ওয়াটার স্লাইড
- ওয়াটার গান
- ওয়াটার থ্রিলার
- ওয়াটার টার্ন
- ওয়াটার ব্রেকডাউন
- ওয়াটার বুলেট
- ওয়াটার স্পিনার
- ওয়াটার স্কাইড্রাইভার
৬০০ টাকার প্যাকেজ:
- প্রবেশ মূল্য
- ওয়াটার কোস্টার
- ওয়াটার স্লাইড
- ওয়াটার গান
- ওয়াটার থ্রিলার
- ওয়াটার টার্ন
- ওয়াটার ব্রেকডাউন
- ওয়াটার বুলেট
- ওয়াটার স্পিনার
- ওয়াটার স্কাইড্রাইভার
- ওয়াটার স্প্রিংকলার
- ওয়াটার ওয়াইল্ড
ফয়েজ লেক এবং সী ওয়ার্ল্ডের টিকিট অনলাইনে অথবা ফয়েজ লেকের টিকিট কাউন্টারে কেনা যাবে।
ফয়েজ লেক যাওয়ার উপায়
ঢাকা থেকে ফয়েজ লেক যাওয়ার উপায়
ঢাকা থেকে ফয়েজ লেক যাওয়ার জন্য তিনটি উপায় রয়েছে:
- সড়কপথে: ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন পরিবহনের বাস ছেড়ে যায়। সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে সৌদিয়া, গ্রিনলাইন, সিল্ক লাইন, সোহাগ, বাগদাদ এক্সপ্রেস, ইউনিক প্রভৃতি পরিবহনের এসি বাস চট্টগ্রাম যায়
- । ভাড়া ৮৫০-১১০০ টাকা। আর এস আলম, সৌদিয়া, ইউনিক, শ্যামলী, হানিফ, ঈগল প্রভৃতি পরিবহনের সাধারণ বাসে ভাড়া ৪০০-৫০০ টাকা।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের দূরত্ব প্রায় ৩০০ কিলোমিটার। বাসের মাধ্যমে চট্টগ্রাম পৌঁছাতে প্রায় ৬-৭ ঘন্টা সময় লাগে। চট্টগ্রাম শহরে পৌঁছানোর পর, সিএনজি বা রিকশায় চড়ে ফয়েজ লেক যেতে পারবেন।
- রেলপথে: ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন ট্রেন ছেড়ে যায়। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে চট্টগ্রাম মেইল, ঊষা, মহানগর প্রভৃতি ট্রেন চট্টগ্রাম যায়। ভাড়া ২৫০-৫০০ টাকা।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের দূরত্ব প্রায় ৩০০ কিলোমিটার। ট্রেনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম পৌঁছাতে প্রায় ৭-৮ ঘন্টা সময় লাগে। চট্টগ্রাম শহরে পৌঁছানোর পর, সিএনজি বা রিকশায় চড়ে ফয়েজ লেক যেতে পারবেন।
- বিমানে: ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ছেড়ে যায়। বিমানে করে চট্টগ্রাম পৌঁছাতে প্রায় ১ ঘন্টা সময় লাগে।
চট্টগ্রাম শহরে পৌঁছানোর পর, সিএনজি বা রিকশায় চড়ে ফয়েজ লেক যেতে পারবেন।
চট্টগ্রাম থেকে ফয়েজ লেক যাওয়ার উপায়
চট্টগ্রামের যেকোনো প্রান্ত থেকে সিএনজি বা রিকশায় চড়ে ফয়েজ লেক যেতে পারবেন। ফয়েজ লেকের প্রবেশ মূল্য ৩০০ টাকা।
ফয়েজ লেকের ভেতরের রাইডগুলোতে চড়তে চাইলে আলাদা করে টিকিট কাটতে হবে।
ট্রেনে ফয়েজ লেক যাওয়ার উপায়
ঢাকা থেকে ফয়েজ লেক যাওয়ার জন্য ট্রেন হল সবচেয়ে সুবিধাজনক উপায়। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন ট্রেন ছেড়ে যায়। চট্টগ্রাম পৌঁছাতে প্রায় ৭-৮ ঘন্টা সময় লাগে।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে ফয়েজ লেক যেতে সিএনজি বা রিকশায় চড়তে হবে। ফয়েজ লেকের প্রবেশ মূল্য ৩০০ টাকা।
ফয়েজ লেকের ভেতরের রাইডগুলোতে চড়তে চাইলে আলাদা করে টিকিট কাটতে হবে।
ট্রেনে ফয়েজ লেক যাওয়ার জন্য যেসব ট্রেনগুলো উপযুক্ত সেগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- চট্টগ্রাম মেইল (৭০১): ঢাকা থেকে রাত ৯:৩০ মিনিটে ছেড়ে যায়, চট্টগ্রাম পৌঁছায় পরদিন সকাল ৬:৩০ মিনিটে। ভাড়া ২৫০-৩০০ টাকা।
- ঊষা (৭০৩): ঢাকা থেকে রাত ১১:০০ মিনিটে ছেড়ে যায়, চট্টগ্রাম পৌঁছায় পরদিন সকাল ৮:০০ মিনিটে। ভাড়া ২৫০-৩০০ টাকা।
- মহানগর (৭০৫): ঢাকা থেকে রাত ১১:৩০ মিনিটে ছেড়ে যায়, চট্টগ্রাম পৌঁছায় পরদিন সকাল ৮:৩০ মিনিটে। ভাড়া ৩০০-৩৫০ টাকা।
ট্রেনের টিকিট অনলাইনে অথবা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের কাউন্টার থেকে কেনা যাবে।
ট্রেনে ফয়েজ লেক যাওয়ার জন্য কিছু টিপস:
- ট্রেনের টিকিট আগে থেকেই কেটে নিন, বিশেষ করে যদি আপনি ছুটির দিনে ভ্রমণের পরিকল্পনা করেন।
- ট্রেনে উঠার আগে আপনার যাবতীয় জিনিসপত্র ভালো করে গুছিয়ে নিন।
- ট্রেনে খাবার এবং পানীয় সঙ্গে রাখুন।
- ট্রেনে চলাকালীন সময়ে আপনার স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখুন।
আশা করি এই তথ্যগুলো আপনার কাজে লাগবে।
বিমানে অথবা আকাশ পথে ফয়েজ লেক যাওয়ার উপায়
ঢাকা থেকে ফয়েজ লেক যাওয়ার জন্য বিমান হল সবচেয়ে দ্রুত এবং সুবিধাজনক উপায়। ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ছেড়ে যায়। বিমানে করে চট্টগ্রাম পৌঁছাতে প্রায় ১ ঘন্টা সময় লাগে।
চট্টগ্রাম শহরে পৌঁছানোর পর, সিএনজি বা রিকশায় চড়ে ফয়েজ লেক যেতে পারবেন। ফয়েজ লেকের প্রবেশ মূল্য ৩০০ টাকা।
ফয়েজ লেকের ভেতরের রাইডগুলোতে চড়তে চাইলে আলাদা করে টিকিট কাটতে হবে।
বিমানে ফয়েজ লেক যাওয়ার জন্য যেসব এয়ারলাইন্সগুলো উপযুক্ত সেগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- বাংলাদেশ বিমান
- ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স
- বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স
- নভো এয়ার
বিমানের টিকিট অনলাইনে অথবা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাউন্টার থেকে কেনা যাবে।
বিমানে ফয়েজ লেক যাওয়ার জন্য কিছু টিপস:
- বিমানের টিকিট আগে থেকেই কেটে নিন, বিশেষ করে যদি আপনি ছুটির দিনে ভ্রমণের পরিকল্পনা করেন।
- বিমানে উঠার আগে আপনার যাবতীয় জিনিসপত্র ভালো করে গুছিয়ে নিন।
- বিমানে খাবার এবং পানীয় সঙ্গে রাখুন।
- বিমানে চলাকালীন সময়ে আপনার স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখুন।
আশা করি এই তথ্যগুলো আপনার কাজে লাগবে।