ইলিশের বৈজ্ঞানিক নাম Tenualosa ilisha। এটি Clupeidae পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। ইলিশের দেহ চাপা ও পুরু। এর রঙ রুপালি। ইলিশের গড় আকার 20-25 সেন্টিমিটার। তবে, 60 সেন্টিমিটার পর্যন্ত ইলিশের দেখা মেলে।
ইলিশ একটি শীঘ্র বর্ধনশীল মাছ। এটি সাধারণত 1-2 বছরে পরিণত হয়। ইলিশের প্রধান খাবার হলো প্ল্যাঙ্কটন।
ইলিশের প্রজনন মৌসুম হলো সেপ্টেম্বর-অক্টোবর। এ সময় ইলিশ সমুদ্র থেকে নদীতে উঠে আসে ডিম ছাড়ার জন্য। ইলিশের ডিম থেকে পোনা বের হয়ে নদীর জলে বেড়ে ওঠে।
ইলিশের অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম। এটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি পণ্য। ইলিশের চাষের মাধ্যমে বহু মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে।
ইলিশের পুষ্টিগুণও অনেক। এটি প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন ও ভিটামিনের একটি ভালো উৎস।
বাঙালির রসনায় ইলিশের স্থান অতুলনীয়। ইলিশ ভাজা, ভাঁপা ইলিশ, সরষে ইলিশ, ইলিশের ঝোল, ইলিশের শুটকি ইত্যাদি বাঙালির ঐতিহ্যবাহী খাবার।
ইলিশ বাংলাদেশের পরিবেশ ও অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। ইলিশের সংরক্ষণ ও উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের প্রয়োজন।
ইলিশের গুরুত্ব
ইলিশের গুরুত্ব নিম্নরূপ:
- অর্থনৈতিক গুরুত্ব: ইলিশ বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি পণ্য। ইলিশের চাষের মাধ্যমে বহু মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে।
- খাদ্যগুরুত্ব: ইলিশ প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন ও ভিটামিনের একটি ভালো উৎস।
- পরিবেশগত গুরুত্ব: ইলিশ নদীর জলের গুণমান উন্নত করে এবং মাছ-জলজ প্রাণীর বৈচিত্র্য রক্ষায় সহায়তা করে।
ইলিশের সংরক্ষণ
ইলিশের সংরক্ষণের জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে:
- জাটকা সংরক্ষণ: জাটকা হলো ইলিশের ছোট আকারের পোনা। জাটকা রক্ষার মাধ্যমে ইলিশের ভবিষ্যত প্রজন্ম রক্ষা করা যায়।
- ইলিশের অবৈধ শিকার বন্ধ করা: ইলিশের অবৈধ শিকার বন্ধ করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
- ইলিশের চাষ বৃদ্ধি করা: ইলিশের চাষ বৃদ্ধির মাধ্যমে ইলিশের সরবরাহ বাড়ানো সম্ভব।
ইলিশ বাংলাদেশের জাতীয় সম্পদ। ইলিশের সংরক্ষণ ও উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা আমাদের জাতীয় সম্পদকে রক্ষা করতে পারি।
ইলিশ মাছের জীবন রহস্য আবিষ্কার করেন কে?
ইলিশ মাছের জীবন রহস্য আবিষ্কার করেন বাংলাদেশের দুই দল বিজ্ঞানী। একটি দলের নেতৃত্বে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হাসিনা খান। অন্য দলের নেতৃত্বে ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক সামছুল আলম।
এই দুই দল পৃথকভাবে গবেষণা করে ২০১৮ সালের ৮ সেপ্টেম্বর ইলিশের পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্স আবিষ্কার করেন। এই আবিষ্কারের মাধ্যমে ইলিশের জীবনের নানা রহস্য উন্মোচিত হয়। যেমন, ইলিশের প্রজনন মৌসুম, ইলিশের আবাসস্থল, ইলিশের খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়।
এই আবিষ্কারের ফলে ইলিশের টেকসই আহরণ ও উৎপাদন নিশ্চিত করা সহজ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।