জুঁই ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম
জুঁই ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম Jasminum। এটি অলিভ পরিবারের (Oleaceae) সদস্য। জুঁই ফুলের প্রায় ২০০ টি প্রজাতি রয়েছে। এটি ইউরেশিয়া, অস্ট্রেলেশিয়া এবং ওশেনিয়ার মতো উষ্ণ অঞ্চলে পাওয়া যায়। জুঁই ফুলের সুগন্ধের জন্য এটি খুবই জনপ্রিয়। জুঁই ফুল থেকে আতর, প্রসাধনী, ওষুধ ইত্যাদি তৈরি করা হয়।
বাংলাদেশে চাষ করা জুঁই ফুলের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হল Jasminum sambac। এটি সাদা ফুলের জুঁই নামেও পরিচিত। এই প্রজাতির জুঁই ফুলের সুগন্ধ সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও, বাংলাদেশে Jasminum officinale, Jasminum auriculatum, Jasminum grandiflorum ইত্যাদি প্রজাতির জুঁই ফুলও চাষ করা হয়।
সঠিক ও সহজ জুঁই ফুল চাষ পদ্ধতি
জমি তৈরি
জুঁই ফুল চাষের জন্য উর্বর, দোআঁশ বা বেলে দোআঁশ মাটি সবচেয়ে ভালো। মাটিতে ভালোভাবে জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকতে হবে। জমি তৈরি করার সময় প্রতি বর্গমিটারে ১০ কেজি গোবর সার, ৫০০ গ্রাম টিএসপি সার এবং ২৫০ গ্রাম এমওপি সার মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।
চারা রোপণ
জুঁই ফুলের চারা সাধারণত বীজ থেকে উৎপাদন করা হয়। বীজ থেকে চারা তৈরি করতে হলে প্রথমে বীজ ছড়িয়ে দিয়ে মাটি চাপা দিয়ে দিতে হবে। বীজ গজানোর জন্য ২৫-৩০ দিন সময় লাগে। চারা ২৫-৩০ সেমি লম্বা হলে তা রোপণ করা যায়। চারা রোপণের সময় প্রতিটি গাছের জন্য ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
সেচ
জুঁই ফুলের চারা রোপণের পর প্রথম সপ্তাহে প্রতিদিন সেচ দিতে হবে। এরপর মাটির আর্দ্রতা দেখে সেচ দিতে হবে। গ্রীষ্মকালে প্রতিদিন সেচ দিতে হবে। শীতকালে সেচের পরিমাণ কমাতে হবে।
সার প্রয়োগ
জুঁই ফুলের গাছকে ভালোভাবে বেড়ে উঠতে এবং ফুল ধরতে নিয়মিত সার প্রয়োগ করতে হবে। চারা রোপণের পর প্রতিমাসে ১ কেজি গোবর সার, ১০০ গ্রাম টিএসপি সার এবং ৫০ গ্রাম এমওপি সার মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। ফুল ফোটার সময় প্রতি মাসে ২ কেজি গোবর সার, ২০০ গ্রাম টিএসপি সার এবং ১০০ গ্রাম এমওপি সার মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।
আগাছা দমন
জুঁই ফুলের চারা রোপণের পর আগাছা দমন করতে হবে। আগাছা গাছের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করে এবং রোগ-বালাইয়ের আক্রমণ ঘটায়। তাই আগাছা দেখা দিলে তা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তুলে ফেলতে হবে।
ছাঁটাই
জুঁই ফুলের গাছকে সুন্দর এবং স্বাস্থ্যকর রাখতে ছাঁটাই করতে হবে। গাছের শুকনো, রোগাক্রান্ত এবং অপ্রয়োজনীয় ডালপালা ছাঁটাই করতে হবে। ছাঁটাই করলে গাছের নতুন কুঁড়ি গজায় এবং ফুলের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
রোপণ থেকে ফুল ফোটে কতদিন লাগে
জুঁই ফুলের চারা রোপণের পর থেকে ফুল ফোটে প্রায় ৬ মাস সময় লাগে। জুঁই ফুল সারা বছর ধরে ফোটে। তবে গ্রীষ্মকালে ফুলের সংখ্যা বেশি হয়।
জুঁই ফুলের চাষের কিছু টিপস
- জুঁই ফুলের গাছকে ভালোভাবে বেড়ে উঠতে ও ফুল ধরতে পূর্ণ সূর্যের আলো প্রয়োজন। তাই গাছ রোপণের সময় এমন জায়গা নির্বাচন করতে হবে যেখানে সূর্যের আলো ভালোভাবে পড়ে।
- জুঁই ফুলের গাছকে রোগ-বালাইয়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে মাঝে মাঝে কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে।
- জুঁই ফুলের ফুল মরার সাথে সাথে তা কেটে ফেলতে হবে। এতে নতুন কুঁড়ি গজাতে সাহায্য হয়।
জুঁই ফুলের চাষের উপকারিতা
- জুঁই ফুলের সুগন্ধ মনকে শান্ত করে এবং প্রশান্তি দেয়।
- জুঁই ফুল থেকে আতর, প্রসাধনী, ওষুধ ইত্যাদি তৈরি করা হয়।
- জুঁই ফুলের চাষ করে বাড়তি আয় করা যায়।
সার প্রয়োগ ও পরিচর্যা
সার প্রয়োগ
জুঁই ফুলের গাছকে ভালোভাবে বেড়ে উঠতে এবং ফুল ধরতে নিয়মিত সার প্রয়োগ করতে হবে। চারা রোপণের পর প্রতিমাসে ১ কেজি গোবর সার, ১০০ গ্রাম টিএসপি সার এবং ৫০ গ্রাম এমওপি সার মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। ফুল ফোটার সময় প্রতি মাসে ২ কেজি গোবর সার, ২০০ গ্রাম টিএসপি সার এবং ১০০ গ্রাম এমওপি সার মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।
গোবর সার: গোবর সার হল একটি জৈব সার যা জুঁই ফুলের গাছের বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গোবর সার মাটিকে উর্বর করে তোলে এবং গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
টিএসপি সার: টিএসপি সার হল একটি রাসায়নিক সার যা জুঁই ফুলের গাছের সালফার এবং ফসফরাসের চাহিদা পূরণ করে। সালফার গাছের বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং ফসফরাস গাছের শিকড়ের বৃদ্ধি ও ফুল ও ফলের উৎপাদন বাড়ায়।
এমওপি সার: এমওপি সার হল একটি রাসায়নিক সার যা জুঁই ফুলের গাছের পটাশিয়ামের চাহিদা পূরণ করে। পটাশিয়াম গাছের বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং ফুল ও ফলের উৎপাদন বাড়ায়।
সার প্রয়োগের পদ্ধতি
সার প্রয়োগের সময় গাছের গোড়া থেকে প্রায় ১ ফুট দূরত্বে সার ছড়িয়ে দিতে হবে। এরপর সার মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। সার প্রয়োগের পর গাছের গোড়ায় পানি দিতে হবে।
পরিচর্যা
জুঁই ফুলের গাছকে ভালোভাবে বেড়ে উঠতে এবং ফুল ধরতে নিম্নলিখিত পরিচর্যা প্রয়োজন:
- পানি সেচ: জুঁই ফুলের গাছকে নিয়মিত পানি সেচ দিতে হবে। গ্রীষ্মকালে প্রতিদিন পানি সেচ দিতে হবে। শীতকালে মাটির আর্দ্রতা দেখে পানি সেচ দিতে হবে।
- আগাছা দমন: জুঁই ফুলের গাছের চারপাশে আগাছা জন্মাতে দেওয়া যাবে না। আগাছা গাছের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করে এবং রোগ-বালাইয়ের আক্রমণ ঘটায়। তাই আগাছা দেখা দিলে তা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তুলে ফেলতে হবে।
- ছাঁটাই: জুঁই ফুলের গাছকে সুন্দর এবং স্বাস্থ্যকর রাখতে ছাঁটাই করতে হবে। গাছের শুকনো, রোগাক্রান্ত এবং অপ্রয়োজনীয় ডালপালা ছাঁটাই করতে হবে। ছাঁটাই করলে গাছের নতুন কুঁড়ি গজায় এবং ফুলের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
- রোগ-বালাই দমন: জুঁই ফুলের গাছকে রোগ-বালাইয়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে মাঝে মাঝে কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে।
- ফুল কর্তন: জুঁই ফুল ফোটার পর তা মরার সাথে সাথে কেটে ফেলতে হবে। এতে নতুন কুঁড়ি গজাতে সাহায্য হয়।
জুঁই ফুলের চাষের কিছু টিপস
- জুঁই ফুলের গাছকে ভালোভাবে বেড়ে উঠতে ও ফুল ধরতে পূর্ণ সূর্যের আলো প্রয়োজন। তাই গাছ রোপণের সময় এমন জায়গা নির্বাচন করতে হবে যেখানে সূর্যের আলো ভালোভাবে পড়ে।
- জুঁই ফুলের গাছকে রোগ-বালাইয়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে মাঝে মাঝে কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে।
- জুঁই ফুলের ফুল মরার সাথে সাথে তা কেটে ফেলতে হবে। এতে নতুন কুঁড়ি গজাতে সাহায্য হয়।