মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ ভাস্কর্য বলতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের স্মরণে নির্মিত ভাস্কর্যগুলিকে বোঝায়। এই ভাস্কর্যগুলি বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ ভাস্কর্যগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:
- সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ: এই স্মৃতিসৌধটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্মৃতিসৌধ। এটি ১৯৮২ সালে নির্মিত হয়। এই স্মৃতিসৌধটিতে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে একটি অগ্নিশিখার প্রতিকৃতি রয়েছে।
- শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ: এই স্মৃতিসৌধটি ১৯৭২ সালে নির্মিত হয়। এই স্মৃতিসৌধটিতে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে একটি স্তম্ভ রয়েছে।
- অপরাজেয় বাংলা: এই ভাস্কর্যটি ১৯৭৯ সালে নির্মিত হয়। এই ভাস্কর্যটিতে এক নারীর প্রতিকৃতি রয়েছে, যিনি পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রতীক।
- জাগ্রত চৌরঙ্গী: এই ভাস্কর্যটি ১৯৭৩ সালে নির্মিত হয়। এই ভাস্কর্যটিতে এক যুবকের প্রতিকৃতি রয়েছে, যিনি পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রতীক।
এই ছাড়াও, বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে আরও অনেক মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ ভাস্কর্য রয়েছে। এই ভাস্কর্যগুলি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ ভাস্কর্যগুলির মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষ তাদের মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাসকে স্মরণ করে এবং শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুর এর মুজিবনগর প্রবাসী সরকার শপথ গ্রহণ করে। এই ঘটনা কে হৃদয় স্মরণীয় করে রাখতে 1987 সালের ১৭এপ্রিল এখানে উদ্বোধন করা হয় মুজিবনগর স্মৃতিসৌধ। স্মৃতিসক্তির ডিজাইন এর নকশাকরেন তপতি তানভীর করিম।
শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ 
শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ ঢাকা মিরপুরের অবস্থিত। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনী নির্বিচারে এদেশের সূর্যসন্তানদের হত্যা করে।
১৯৭২ সালের ২২ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর সৌধটিউদ্বোধন করেন। এর স্থ-পতি মোস্তফা হারুন কুদ্দুস হিলি।
রায়েরবাজার বৌদ্ধভূমি সৃতিসৌধ 
ঢাকা শহরের পশ্চিমে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাদে পাশে এই চিঠিপত্রটি অবস্থিত
১৯৭১ সালে ১৪ ডিসেম্বর দেশে প্রখ্যাত সন্তান দের হত্যা করে এই স্থানে পলিটেকটো ইটের ভাটার পশ্চাতে ফেলে রাখা হয়েছিল।
এই সকল সূর্যসন্তানদের স্মরণে ইটের ভাটার আদলে এই স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়। এইসব বুদ্ধি ছিলেন ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ও জামি আল সাফি।
শিক্ষা অনির্বাণ এবং শিক্ষার্থী ও চিরন্তন 
শিক্ষা অনিবার বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধেরস্মৃতিস্তস্ত।যুদ্ধে আত্মসৎকার স্বর্গকারী সৈনিকদের রিতিকে জাতির জীবনে চির উজ্জ্বল করে রাখার জন্য এই স্মৃতিস্তস্ত সার্বক্ষণিকভাবে শিক্ষা প্রজ্জলন করে রাখা হয়।
ঢাকা সেনানিবাস এলাকায় একটি অবস্থিত। এর স্থাপত্য পরিকল্পনা করেছে ঢাকা ডিজাইন ডেভেলপমেন্ট সেন্টর।
শিক্ষা চিরন্তন রাজধানী ঢাকা সরোয়ারদী উদ্যানে অবস্থিত একটি স্মরণ স্থাপনা।১৯৭১সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই স্থানটিতে দাঁড়ি- য়ে ঐতিহাসিক এর সাত মার্চের ভাষণ প্রদান করেন।
জাগ্রতী চৌরঙ্গী 
মহান মুক্তিযুদ্ধের অসামান্য আত্মত্যাগের স্মরণে নির্মিত ভাস্কর্য জাগ্রত চৌরঙ্গী। শিল্পী আব্দুর রাজ্জাক জাগ্রত চৌরঙ্গী ভাস্কর্য।১৯৭১ সালে একটি নির্মাণ করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণায় নির্মিত এটি প্রথম ভাস্কর্য। জয়দেবপুর চৌরাস্তার সড়ক দ্বীপে দৃষ্টিনন্দন স্থাপিত্কর্মটিস্থাপন করা হয়।
অপরাজয়ের বাংলা 
ওপরাজয়ের বাংলা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে উপস্থিত একটি ভাস্কর্য। একটি নির্মাণ করেন মুক্তিযোদ্ধা ভাস্কর্য সৈয়দ আব্দুল্লাহ খালেদ।
কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাংলা নারী পুরুষের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ ও বিজয়ের প্রতীক এই ভাস্কর্য। ১৯৭৩ সালে ভাস্কর্যটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়।১৯৭৯ সালে এর উদ্বোধন করা হয়। ৬ ফুট বেদির নির্মিত এ ভাস্কর্যটির উচ্চতা ১২ ফুট।
স্বোপারজীত স্বাধীনতা 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসির সড়কদ্বীপে রয়েছে স্বোপার্জিত স্বাধীনতা (Swoparjito Swadhhinato) ভাস্কর্যটি ।
১৯৮৮ সালের ২৫ মার্চ এ ভাস্কর্যটির উদ্বোধন করা হয়। এ ভাস্কর্যের নির্মাতা চারুকলা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক শামীম শিকদার।
স্বাধীনতা সংগ্রাম 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুলার রোডের সড়কদ্বীপের স্বাধীনতা সংগ্রাম মাস্কর্যটি নির্মিত হয়েছে।
এটি বাংলাদেশের সর্ব বৃহত্তম ভাস্কর্য। ১৯৯৯ সালের ৭ মার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন।
এ ভাস্কর্যের নির্মাতা শামীম সিকদার। বাঙালির ইতিহাসে ৫২র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা আন্দোলন পর্যন্ত সমস্ত বীরত্বকে ধারণ করে তৈরি করা হয়েছে এ ভাস্কর্য ।
সংশপ্তক 
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৯০ সালে ২৬ শে মার্চ নির্মিত হয়েছিল স্মরক ভাস্কর্য স্বয়ংশপ্তক।
এ ভাস্কর্যের মাধ্যমে পুটিয়ে তোলা হয়েছে যুদ্ধে শত্রুর আঘাতে এক হাত এক পা হারিয়েও রাইফেল হাতের লয়ে যাচ্ছেন দেশ মাতৃকার বীরসন্তান।
যুদ্ধে পরাজয় নিশ্চিত জেনেও লড়ে যান যে অকুতোভয় বীর সেই য়ংশপ্তক।কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে সামনে এক পায়ে ভর করে দাঁড়িয়ে আছে ভাস্কর্যটি। এ ভাস্কর্য লিখেছেন হামিদুজ্জামান খান।
শাবাশ বাংলাদেশ
শাবাশ বাংলাদেশ বাংলাদেশের স্মৃতিবিজড়িত ভাস্কর্যগুলোর মধ্যে অন্যতম। এটি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম ভাস্কর্য।
এই ভাস্কর্যটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থিত। এই স্থপতি শিল্পী নিতুন কুন্ডু ১৯৯২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি শহীদ জননী জাহানারা ইমাম ভাস্কর্যটির উদ্বোধন করেন ।
বিজয়–৭১
মহান মুক্তি সংগ্রামে বাংলার সর্বস্তরের মানুষের স্বয়ংসঙ্কর্ত অংশগ্রহণের মূর্ত প্রতীক ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য বিজয়-৭১।
বিখ্যাত ভাস্কর্য শিল্পী শ্যামল চৌধুরী তত্ত্বাবধানে ২০০০ সালে ভাস্কর্যটির নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়।
বিজয় কেতন 
ঢাকা সেনানিবাসে অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের নাম বিজয় কেতন। এর মূল্ ফটকে অবস্থিত ভাস্কর্যটির নামও বিজয় কেতন।
মুক্তিযোদ্ধার মূর্তি; এদের একজন হলেন বাংলাদেশের পতাকা বাহী নারী।
