নোবেল পুরস্কার বিজয়ী বাঙালিদের তালিকা
বছর | বিভাগ | বিজয়ী |
---|---|---|
১৯১৩ | সাহিত্য | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর |
১৯৯৮ | অর্থনীতি | অমর্ত্য সেন |
২০০৬ | শান্তি | ড. মুহাম্মদ ইউনূস |
২০১৯ | অর্থনীতি | অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় |
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন একজন বাঙালি কবি, লেখক, গীতিকার, সুরকার, চিত্রশিল্পী, নাট্যকার, দার্শনিক, শিক্ষাবিদ এবং সমাজ সংস্কারক। তিনি বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব এবং আধুনিক বাংলা সাহিত্যের জনক।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৬১ সালের ৭ই মে কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ব্রাহ্ম পরিবারের সন্তান ছিলেন। তার পিতা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন একজন ব্রাহ্ম ধর্মীয় নেতা এবং ব্রাহ্ম সমাজের প্রতিষ্ঠাতা।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার সাহিত্যকর্মের জন্য বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি বাংলা সাহিত্যে গদ্য, কবিতা, নাটক, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, গান, উপন্যাস এবং ইতিহাস রচনা করেছেন। তার উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মের মধ্যে রয়েছে “গীতাঞ্জলি”, “শেষের কবিতা”, “নৌকাডুবি”, “চোখের বালি”, “সোনার তরী”, “ঘরে বাইরে”, “গোরা”, “চতুরঙ্গ”, “জীবনস্মৃতি”, “চিরকালের বাঙালি” ইত্যাদি।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনি প্রথম ভারতীয় এবং এশিয়ার প্রথম ব্যক্তি যিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
অমর্ত্য সেন
অমর্ত্য সেন হলেন একজন বাঙালি অর্থনীতিবিদ এবং দার্শনিক। তিনি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন, দারিদ্র্য ও অভাব, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, লিঙ্গ সমতা এবং রাজনীতির ক্ষেত্রে একজন বিশেষজ্ঞ।
অমর্ত্য সেন ১৯৩৩ সালের ১৭ই নভেম্বর কলকাতার এক বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স থেকে অর্থনীতিতে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন।
অমর্ত্য সেন তার “অর্থনীতিতে সুযোগের ন্যায়সঙ্গত বন্টন” ধারণার জন্য বিখ্যাত। তিনি দারিদ্র্য ও অভাব দূরীকরণে সরকারের ভূমিকা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের উপর জোর দেন।
অমর্ত্য সেন ১৯৯৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনি দ্বিতীয় ভারতীয় এবং প্রথম বাঙালি যিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস
ড. মুহাম্মদ ইউনূস হলেন একজন বাঙালি অর্থনীতিবিদ এবং সমাজকর্মী। তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা এবং গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনিশিয়েটিভের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৪০ সালের ২৮শে জুন বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার মুন্সিরহাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার “সক্রিয় দারিদ্র্য বিমোচন” ধারণার জন্য বিখ্যাত। তিনি গরিব মানুষকে ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানের মাধ্যমে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার জন্য কাজ করেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনি তৃতীয় ভারতীয় এবং প্রথম বাঙালি যিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
কতজন বাঙালি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন
১৯০১ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত মোট ৪ জন বাঙালি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। তারা হলেন:
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (সাহিত্য, ১৯১৩)
- অমর্ত্য সেন (অর্থনীতি, ১৯৯৮)
- ড. মুহাম্মদ ইউনূস (শান্তি, ২০০৬)
- অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় (অর্থনীতি, ২০১৯)
এছাড়াও, ১৩ জন বাঙালি নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছেন। তারা হলেন:
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৯১০, ১৯১১, ১৯১২, ১৯১৩)
- অমর্ত্য সেন (১৯৯৭, ১৯৯৮, ১৯৯৯, ২০০০, ২০০১, ২০০২, ২০০৩, ২০০৪, ২০০৫, ২০০৬, ২০০৭, ২০০৮, ২০০৯, ২০১০, ২০১১, ২০১২, ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫, ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯)
- ড. মুহাম্মদ ইউনূস (২০০৫, ২০০৭, ২০০৮, ২০০৯, ২০১০, ২০১১, ২০১২, ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫, ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯)
- অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় (২০১৮, ২০১৯, ২০২০, ২০২১, ২০২২, ২০২৩)
- তসলিমা নাসরিন (১৯৯৩)
- আবুল হাসনাত (২০০৯)
- জগদীশ চন্দ্র বসু (১৯৩০)
- সুভাষ চন্দ্র বসু (১৯৪৩)
- সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় (১৯৮০)
- বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় (১৯৫২)
- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯০১)
বাঙালি নোবেল বিজয়ীদের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলেন প্রথম ভারতীয় এবং এশীয় নোবেল বিজয়ী।
মনোনয়ন প্রাপ্তদের তালিকা
নোবেল পুরস্কার বিজয়ী বাঙালিদের মনোনয়ন প্রাপ্তদের তালিকা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। কিন্তু তিনি ১৯১০, ১৯১১, ১৯১২ এবং ১৯১৩ সালেও মনোনয়ন পেয়েছিলেন।
অমর্ত্য সেন
অমর্ত্য সেন ১৯৯৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। কিন্তু তিনি ১৯৯৭, ১৯৯৯, ২০০০, ২০০১, ২০০২, ২০০৩, ২০০৪, ২০০৫, ২০০৬, ২০০৭, ২০০৮, ২০০৯, ২০১০, ২০১১, ২০১২, ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫, ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮ এবং ২০১৯ সালেও মনোনয়ন পেয়েছিলেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস
ড. মুহাম্মদ ইউনূস ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। কিন্তু তিনি ২০০৫, ২০০৭, ২০০৮, ২০০৯, ২০১০, ২০১১, ২০১২, ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫, ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮ এবং ২০১৯ সালেও মনোনয়ন পেয়েছিলেন।
অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়
অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৯ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। কিন্তু তিনি ২০১৮, ২০১৯, ২০২০, ২০২১, ২০২২ এবং ২০২৩ সালেও মনোনয়ন পেয়েছেন।
তসলিমা নাসরিন
তসলিমা নাসরিন হলেন একজন বাঙালি লেখক, সাংবাদিক এবং নারীবাদী কর্মী। তিনি ১৯৯৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছিলেন।
আবুল হাসনাত
আবুল হাসনাত হলেন একজন বাঙালি লেখক, সাংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মী। তিনি ২০০৯ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছিলেন।
জগদীশ চন্দ্র বসু
জগদীশ চন্দ্র বসু হলেন একজন বাঙালি পদার্থবিদ এবং জীববিজ্ঞানী। তিনি ১৯৩০ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছিলেন।
সুভাষ চন্দ্র বসু
সুভাষ চন্দ্র বসু হলেন একজন বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতা। তিনি ১৯৪৩ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছিলেন।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় হলেন একজন বাঙালি কবি, লেখক এবং সাহিত্যিক। তিনি ১৯৮০ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছিলেন।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় হলেন একজন বাঙালি ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার এবং সাহিত্যিক। তিনি ১৯৫২ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছিলেন।
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় হলেন একজন বাঙালি ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার এবং সাহিত্যিক। তিনি ১৯০১ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছিলেন।