ডিবির হাওর
ডিবির হাওর জুড়ে লাল শাপলার সমারোহ দেখা যায়। প্রতি বছর জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসে হাওরে লাল শাপলার সমারোহ ঘটে। এই সময় হাওরকে লাল শাপলার বিছানায় পরিণত হয়। লাল শাপলার সৌন্দর্য যেকোনো দর্শনার্থীকে মুগ্ধ করে।
ডিবির হাওরে শাপলার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণী রয়েছে। এখানে বিভিন্ন ধরনের পাখিও দেখা যায়। হাওরে নৌকা ভ্রমণের মাধ্যমে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
ডিবির হাওর ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে ভালো সময় হলো জুন-আগস্ট মাস। এই সময় হাওরে লাল শাপলার সমারোহ দেখা যায়।
ডিবির হাওর ভ্রমণের জন্য সিলেট শহর থেকে সিএনজি অটোরিকশা বা বাস যোগে জৈন্তাপুর উপজেলায় যেতে হয়। জৈন্তাপুর উপজেলায় থেকে ডিবির হাওর মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
হাকালুকি হাওর
সিলেট জেলার দর্শনীয় হাকালুকি হাওর বাংলাদেশের বৃহত্তম হাওর। এটি এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম মিঠাপানির জলাভূমি। এর আয়তন ১৮,১১৫ হেক্টর, তন্মধ্যে শুধুমাত্র বিলের আয়তন ৪,৪০০ হেক্টর। এটি মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা, কুলাউড়া, এবং সিলেট জেলার ফেঞ্চুগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ এবং বিয়ানীবাজার জুড়ে বিস্তৃত।
হাকালুকি হাওরের নামকরণ নিয়ে নানা জনশ্রুতি রয়েছে। একটি জনশ্রুতি অনুযায়ী, বহু বছর পূর্বে ত্রিপুরার মহারাজা ওমর মানিক্যের সেনাবাহিনীর ভয়ে বড়লেখা উপজেলার কুকি দলপতি হাঙ্গর সিং জঙ্গলপূর্ণ ও কর্দমাক্ত এক বিস্তীর্ণ এলাকায় ‘লুকি দেয়’ অর্থাৎ লুকিয়ে থাকে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে কালক্রমে ওই এলাকার নাম হয় ‘হাকালুকি’ বা ‘হাঙ্গর লুকি’। আরেকটি জনশ্রুতি অনুযায়ী, প্রায় দুই হাজার বছর আগে প্রচন্ড এক ভূমিকম্পে ‘আকা’ নামে এক নৃপতি ও তার রাজত্ব মাটির নিচে সম্পূর্ণ তলিয়ে যায়। কালক্রমে এই তলিয়ে যাওয়া নিম্নভূমির নাম হয় ‘আকালুকি’ বা ‘হাকালুকি’।
হাকালুকি হাওরের বিশাল জলরাশির মূল প্রবাহ হলো জুরী এবং পানাই নদী। এই জলরাশি হাওরের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত কুশিয়ারা নদী দিয়ে প্রবাহিত হয়। বর্ষাকালে হাওর সংলগ্ন এলাকা পাবিত হয়ে বিশাল রূপ ধারন করে। এই সময় পানির গভীরতা হয় ২-৬ মিটার।
হাকালুকি হাওরে প্রায় ৮০-৯০টি ছোট, বড় ও মাঝারি বিল রয়েছে। প্রায় সারাবছরই বিলগুলিতে পানি থাকে। উলেখযোগ্য বিলসমূহ হলো: চাতলা বিল, চৌকিয়া বিল, ডুলা বিল, পিংলার কোণা বিল, ফুটি বিল, তুরাল বিল, তেকুনি বিল, পাওল বিল, জুয়ালা বিল,
হাকালুকি হাওর পরিযায়ী পাখির জন্য বিখ্যাত। শীতকালে এখানে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি আসে। এই সময় হাওরকে পরিযায়ী পাখির বিচরণে মুখর হয়ে ওঠে।
হাকালুকি হাওর বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সম্পদ। হাওরের বিস্তীর্ণ এলাকায় ধান, গম, আউশ, পাট, তিল, সরিষা ইত্যাদি ফসল চাষ হয়। এছাড়াও, হাওরে মাছ চাষ করা হয়।
হাকালুকি হাওর বাংলাদেশের একটি অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক হাওর ভ্রমণে আসে। হাওরে নৌকা ভ্রমণের মাধ্যমে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
হাকালুকি হাওর ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে ভালো সময় হলো মার্চ-এপ্রিল মাস। এই সময় হাওরে পাখি ও ফুলের সমারোহ দেখা যায়।
হাকালুকি হাওর ভ্রমণের জন্য সিলেট শহর থেকে সিএনজি অটোরিকশা বা বাস যোগে কুলাউড়া উপজেলায় যেতে হয়। কুলাউড়া উপজেলায় থেকে হাকালুকি হাওর মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
হাকালুকি হাওরের কিছু বিশেষ আকর্ষণ হলো:
- বিশাল জলরাশি ও বিস্তীর্ণ এলাকা
- পরিযায়ী পাখির বিচরণ
- বিভিন্ন ধরনের ফুল ও উদ্ভিদ
- নৌকা ভ্রমণের সুযোগ
হাকালুকি হাওর ভ্রমণের মাধ্যমে আপনি বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্য উপভোগ করতে পারবেন।