প্রমথ চৌধুরী

প্রমথ চৌধুরীর উপাধি কি?

প্রমথ চৌধুরীর উপাধি ছিল “বীরবল”। তিনি একজন প্রাবন্ধিক, কবি ও ছোটগল্পকার ছিলেন। তিনি বাংলা গদ্যে চলিত রীতির প্রবর্তক হিসাবে বিখ্যাত। সবুজপত্র পত্রিকা সম্পাদনার মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যে চলিতরীতি প্রবর্তন করেন। এছাড়া বাংলা সাহিত্যে প্রথম বিদ্রূপাত্মক প্রবন্ধ রচনা করেন। ছোটগল্প ও সনেট রচনাতেও হিসেবেও তার বিশিষ্ট অবদান রয়েছে। তিনি সবুজপত্র এবং বিশ্বভারতী পত্রিকা সম্পাদনা করেন।

প্রমথ চৌধুরী তার বিদ্রূপাত্মক রচনাগুলির জন্য “বীরবল” উপাধিতে ভূষিত হন। তিনি তার রচনাগুলিতে সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি ও কুসংস্কারকে ব্যঙ্গ করেছিলেন। তার বিদ্রূপাত্মক রচনাগুলি অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল।

প্রমথ চৌধুরীর উপাধি “বীরবল” তাকে বাংলা সাহিত্যে একজন অনন্য লেখক হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

প্রমথ চৌধুরীর শিক্ষাজীবন ছিল?

প্রমথ চৌধুরী ছিলেন একজন শিক্ষিত ব্যক্তি। তিনি কলকাতা হেয়ার স্কুল থেকে এন্ট্রান্স ও সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে এফ এ পাস করেন। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দে বিএ (অনার্স) দর্শন, ১৮৯০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে প্রথম শ্রেণীতে এমএ ডিগ্রী লাভ করেন এবং পরে ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য বিলাত যান।

তিনি বিলাতে তিন বছর ব্যারিস্টারি পড়ার পর দেশে ফিরে আসেন এবং আইন ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু তিনি আইন ব্যবসায় মনোযোগ দিতে পারেননি। তিনি সাহিত্য চর্চায় মনোনিবেশ করেন।

প্রমথ চৌধুরীর শিক্ষাজীবন ছিল অত্যন্ত সফল। তিনি উচ্চশিক্ষা লাভ করেছিলেন এবং একজন শিক্ষিত ব্যক্তি হিসেবে গড়ে উঠেছিলেন। তার শিক্ষাজীবন তার সাহিত্যচর্চায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

প্রমথ চৌধুরীর শিক্ষাজীবনের উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলি নিম্নরূপ:

- কলকাতা হেয়ার স্কুল থেকে এন্ট্রান্স ও সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে এফ এ পাস করেন।

- প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দে বিএ (অনার্স) দর্শন, ১৮৯০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে প্রথম শ্রেণীতে এমএ ডিগ্রী লাভ করেন।

- বিলাতে তিন বছর ব্যারিস্টারি পড়ার পর দেশে ফিরে আসেন

প্রমথ চৌধুরীর শিক্ষাজীবন বাংলা সাহিত্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তার শিক্ষাজীবন তাকে একজন সফল সাহিত্যিক হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করেছিল।

প্রমথ চৌধুরীর প্রবন্ধ গ্রন্থের নাম

প্রমথ চৌধুরী ছিলেন একজন প্রাবন্ধিক, কবি ও ছোটগল্পকার। তিনি বাংলা গদ্যে চলিত রীতির প্রবর্তক হিসাবে বিখ্যাত। তার প্রবন্ধগুলির মধ্যে রয়েছে:

তেল-নুন-লাকড়ী (১৯০৬)
বীরবলের হালখাতা (১৯১৬)
নানাকথা (১৯১৯)
ভাষার কথা
আমাদের শিক্ষা (১৯২০)

এই প্রবন্ধগুলিতে তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন, যেমন:

সাহিত্য
শিক্ষা
সমাজ
রাজনীতি
ধর্ম
দর্শন

প্রমথ চৌধুরীর প্রবন্ধগুলি তার বিদ্রূপাত্মক ও ব্যঙ্গাত্মক লেখার জন্য বিখ্যাত। তিনি তার প্রবন্ধগুলিতে সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি ও কুসংস্কারকে তুলে ধরেছেন। তার প্রবন্ধগুলি বাংলা সাহিত্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।

প্রমথ চৌধুরীর প্রবন্ধ গ্রন্থগুলির মধ্যে তেল-নুন-লাকড়ী সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। এই গ্রন্থে তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিদ্রূপাত্মক ও ব্যঙ্গাত্মক প্রবন্ধ রচনা করেছেন। এই গ্রন্থটি বাংলা সাহিত্যে একটি যুগান্তকারী গ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত হয়।

প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যভাবনা ও ভাষাদর্শ

প্রমথ চৌধুরী ছিলেন একজন সৃজনশীল সাহিত্যিক ও ভাষাবিদ। তিনি বাংলা গদ্যে চলিত রীতির প্রবর্তক হিসাবে বিখ্যাত। তার সাহিত্যভাবনা ও ভাষাদর্শ বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।

প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যভাবনার মূল বৈশিষ্ট্য হল বাস্তবতাবোধ। তিনি বাস্তব জীবনের ঘটনা ও চরিত্রকে তার সাহিত্যকর্মে তুলে ধরেছেন। তিনি সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি ও কুসংস্কারকে তার সাহিত্যকর্মে ব্যঙ্গ করেছেন।

প্রমথ চৌধুরীর ভাষাদর্শের মূল বৈশিষ্ট্য হল সহজবোধ্যতা ও প্রাঞ্জলতা। তিনি মনে করতেন যে সাহিত্যকে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য ভাষাকে সহজ ও প্রাঞ্জল হতে হবে। তিনি বাংলা গদ্যে চলিত রীতির প্রবর্তন করে এই ধারণাকে বাস্তবায়ন করেছিলেন।

প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যভাবনা ও ভাষাদর্শ বাংলা সাহিত্যে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছিল। তিনি বাংলা সাহিত্যকে আরও প্রগতিশীল ও জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন।

প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যভাবনা ও ভাষাদর্শের মূল বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপ:

বাস্তবতাবোধ: প্রমথ চৌধুরী বাস্তব জীবনের ঘটনা ও চরিত্রকে তার সাহিত্যকর্মে তুলে ধরেছেন। তিনি সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি ও কুসংস্কারকে তার সাহিত্যকর্মে ব্যঙ্গ করেছেন।
সহজবোধ্যতা ও প্রাঞ্জলতা: প্রমথ চৌধুরী মনে করতেন যে সাহিত্যকে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য ভাষাকে সহজ ও প্রাঞ্জল হতে হবে। তিনি বাংলা গদ্যে চলিত রীতির প্রবর্তন করে এই ধারণাকে বাস্তবায়ন করেছিলেন।
নবত্ব ও বৈচিত্র্য: প্রমথ চৌধুরী তার সাহিত্যকর্মে নতুনত্ব ও বৈচিত্র্য এনেছেন। তিনি বাংলা সাহিত্যে নতুন বিষয় ও নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রবর্তন করেছেন।

প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যভাবনা ও ভাষাদর্শ বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তিনি বাংলা সাহিত্যকে আরও প্রগতিশীল ও জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন।

প্রমথ চৌধুরীর জন্ম

প্রমথ চৌধুরী ১৮৬৮ সালের ২৩শে জুন কলকাতার জোড়াসাঁকোতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবারের সন্তান ছিলেন। তার পিতা ব্রজমোহন চৌধুরী ছিলেন একজন আইনজীবী এবং মাতা জ্ঞানদানন্দিনী দেবী ছিলেন একজন বিশিষ্ট সমাজকর্মী।

প্রমথ চৌধুরীর শিক্ষাজীবন ছিল অত্যন্ত সফল। তিনি কলকাতা হেয়ার স্কুল থেকে এন্ট্রান্স ও সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে এফ এ পাস করেন। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দে বিএ (অনার্স) দর্শন, ১৮৯০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে প্রথম শ্রেণীতে এমএ ডিগ্রী লাভ করেন এবং পরে ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য বিলাত যান।

বিলাতে তিন বছর ব্যারিস্টারি পড়ার পর দেশে ফিরে আসেন এবং আইন ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু তিনি আইন ব্যবসায় মনোযোগ দিতে পারেননি। তিনি সাহিত্য চর্চায় মনোনিবেশ করেন।

প্রমথ চৌধুরী ১৯৪১ সালের ২৭শে জুন কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।

প্রমথ চৌধুরীর জন্ম ও মৃত্যুর তারিখ নিম্নরূপ:

- জন্ম: ২৩শে জুন, ১৮৬৮

প্রমথ চৌধুরীর মৃত্যু

প্রমথ চৌধুরী ১৯৪৬ সালের ২ সেপ্টেম্বর কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। তিনি শান্তিনিকেতনে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার মৃত্যুর কারণ ছিল হৃদরোগে আক্রান্ত।

প্রমথ চৌধুরীর মৃত্যু বাংলা সাহিত্যের জন্য একটি বড় ক্ষতি। তিনি বাংলা গদ্যে চলিত রীতির প্রবর্তক হিসাবে বিখ্যাত। তিনি বাংলা সাহিত্যে একাধারে প্রাবন্ধিক, কবি, ছোটগল্পকার, সম্পাদক ও ভাষাবিদ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।

প্রমথ চৌধুরীর মৃত্যুতে বাংলা সাহিত্যের একটি সমৃদ্ধ অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটে। তিনি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে একজন অমর ব্যক্তিত্ব হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

প্রমথ চৌধুরীর মৃত্যুর তারিখ হল ২ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৬।

প্রমথ চৌধুরীর মৃত্যুর কারণ:

প্রমথ চৌধুরী ছিলেন একজন হৃদরোগী। তিনি ১৯৪৬ সালের ২ সেপ্টেম্বর শান্তিনিকেতনে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ২ সেপ্টেম্বর সকালে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং পরবর্তীতে মারা যান।

প্রমথ চৌধুরীর মৃত্যুর প্রভাব:

প্রমথ চৌধুরীর মৃত্যুর পরবর্তী ঘটনা:

প্রমথ চৌধুরীর মৃত্যুর পর তার মরদেহ শান্তিনিকেতনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে ঠাকুর পরিবারের পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।

প্রমথ চৌধুরীর মৃত্যুর পর বাংলা সাহিত্যে চলিত রীতি আরও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তার সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে তিনি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান অর্জন করেছিলেন।