নিম গাছ একটি বহুবর্ষজীবী মাঝারি ধরনের চিরহরিৎ বৃক্ষ। এটি ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড এবং চীন সহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশে পাওয়া যায়। নিম গাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং 15 থেকে 20 মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে।
এর বাকল গাঢ় বাদামী এবং অমসৃণ। গাছের পাতা যৌগিক এবং প্রতিটি পাতায় 10 থেকে 17টি পত্রক থাকে। পত্রকগুলি 6 থেকে 8 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। নিম ফুল ছোট এবং হলুদ রঙের হয়। ফলগুলি শুকনো এবং বাদামী রঙের হয়।
নিম গাছের অনেকগুলি বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:
- ঔষধি গুণাবলী: নিম গাছের বিভিন্ন অংশ ঔষধি গুণে ভরা। পাতা, বাকল, ফল এবং বীজ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
- পরিবেশগত গুণাবলী: নিম গাছ পরিবেশের জন্য উপকারী। এটি বায়ু দূষণ কমাতে এবং মাটির উর্বরতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
- অর্থনৈতিক গুণাবলী: নিম গাছ একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সম্পদ। এর কাঠ, ফল এবং বীজ বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়।
নিম গাছের কিছু অজানা তথ্য হল:
- নিম গাছকে “একুশ শতকের বৃক্ষ” বলা হয়। এর কারণ হল নিমের ঔষধি, পরিবেশগত এবং অর্থনৈতিক গুণাগুণ।
- নিম গাছকে “পবিত্র বৃক্ষ”ও বলা হয়। হিন্দুধর্মে, নিম গাছকে ভগবান বিষ্ণুর সাথে যুক্ত করা হয়।
- নিম গাছের পাতা এবং ফলের গন্ধে মশা এবং অন্যান্য পোকামাকড় তাড়ানো যায়।
- নিম গাছের পাতায় অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
- নিম গাছের বাকল থেকে নিম তেল তৈরি করা হয়। নিম তেল বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়, যার মধ্যে রয়েছে ত্বক ও চুলের যত্ন, কীটনাশক এবং ঔষধ।
নিম গাছ একটি বহুলমুখী গাছ যা বিভিন্ন উপায়ে উপকারী। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঔষধি, পরিবেশগত এবং অর্থনৈতিক সম্পদ।
কেউ ছালটা ছাড়িয়ে নিয়ে সিদ্ধ করছে ।
পাতাগুলো ছিঁড়ে ছিলে পিছে কেউ !
কেউবা ভাজছে গরম তেলে ।
খোস দাদ হাজাা চুলকানিতে লাগাবে ।
চর্ম রোগের ও অব্যর্থ মহৌয়ধ ।
কচি পাতাগুলো খায়ও অনেকে ।
এমনি কাঁচাই ….
যকৃতের পক্ষে ভারী উপকার ।
কচি ডালগুলো ভেঙ্গে চিবোয় কত লোক …দাঁত ভালো থাকে । কবিরাজরা প্রশংসায় পঞ্চমুখ । বাড়ির পাশে গজালে বিজ্ঞরা খুশি হন ।
বলে– নিমের হাওয়া ভালো থাক কেটো না ।
কাটে না, কিন্তু যত্ন করে না ।
শান দিয়ে বাঁধিয়ে ও দের কেউ- সে আর এক আবর্জনা ।
হঠাৎ একদিন একটা নতুন ধরনের লোক এলো ।
সুগন্ধিদৃষ্টিতে চেয়ে রইল নিমগাছের দিকে । ছাল তুললে না, পাতা ছিড়লে না, ডাল ভাঙলে না, মুগ্ধদৃষ্টিতে চেয়ে রইল শুধু ।
বলে উঠল– বাহ কি সুন্দর পাতাগুলি …কী রূপ ! থোকা থোকা ফুলেরই বা বা কী বাহার…এক ঝাঁক নক্ষত্র নেমে এসেছে যেন নীল আকাশ থেকে সবুজ সায়রে ।
বাহ-খানিক্ষণ চেয়ে থেকে চলে গেল ।
কবিরাজ নয়, কবি
নিমগাছটার ইচ্ছে করতে লাগলো লোকটার সঙ্গে চলে যায় । কিন্তু পারলে না । মাটির ভেতরে শিকড় অনেক দূরে চলে গেছে । বাড়ির পেছনে আবর্জনার স্টূপের মধ্যেই দাঁড়িয়ে রইল সে । ওদের বাড়ির গৃহকর্ম– নিপুণা লক্ষ্মীউটার ঠিক এক দশা ।
বালক এখানে নিমগাছের বালক; শিলে পেষা–নিম গাছের পাতা শিলপাটায় বেটে তা থেকে রস বের করা হয়; গরম তেলে ভাজা –নিমপাতা গরম তেলে ভাজলে মচমচে এবং তা খেতে খানিকটা উপাদেয় হয়;
খোস দাদ– লাগাবে –চুলকানির স্থানে লেপন করবে; অর্থাৎ –যা বিফল হবে না পাতাগুলো খায়াও— নিমেরকচিপাতা খেলে মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে;
শান দিয়ে বাঁধানো –এখানে ইট ও সিমেন্ট দিয়ে বাধানো বোঝাচ্ছে; কবিরাজ-–যিনি গাছগাছালি পরিশোধন করে মনুষ্যরোগের চিকিৎসা করেন কবি– যিনি কবিতা লেখেন , সৌন্দর্যের পূজারী; শিকড় অনেক দূর চলে গেছে প্রতিকাশ্রয়ে বর্ণিত ।
নিম গাছের শিকড় মাটির গভীরে প্রবেশ করে এবং চারিদিকে বিস্তৃত হয় । লক্ষ্মী বউটার প্রতিক যেহেতু নিমগাছ সেহেতু নিমগাছের শিকড়ের সঙ্গে বউয়ের সংসারের জালে চারিদিকে আবদ্ধ হওয়াকে বোঝানো হয়েছে ।