গলা ব্যথা হলে করণীয় কি
গলা ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা যা অনেকেরই জীবনে একবার না একবার হয়ে থাকে। এটি বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যেমন ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, অ্যালার্জি ইত্যাদি।
গলা ব্যথা হলে কি করবেন:
- গরম তরল পান করুন: মধু মিশ্রিত গরম চা বা সুপ গলাকে শান্ত করে।
- গার্গল করুন: লবণাক্ত পানি দিয়ে গার্গল করা গলাকে পরিষ্কার করে।
- বিশ্রাম নিন: কণ্ঠস্বরকে বিশ্রাম দেওয়া গলা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- আর্দ্রতা বৃদ্ধি করুন: একটি হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করে ঘরের আর্দ্রতা বৃদ্ধি করা গলাকে শান্ত করে।
- দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য এড়িয়ে চলুন: কারণ এগুলি গলায় শ্লেষ্মা বাড়িয়ে দিতে পারে।
- অ্যাসিডিক খাবার এড়িয়ে চলুন: লেবু, কমলা ইত্যাদি অ্যাসিডিক খাবার গলাকে আরও জ্বালাতে পারে।
- ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার করুন: এগুলি গলাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন: শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে পানি পান করুন।
- লজেন্স বা হার্ড ক্যান্ডি চুষুন: এগুলি গলাকে শান্ত করে।
কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন:
- যদি গলা ব্যথা ৫-৭ দিনের মধ্যে না ভাল হয়।
- যদি গিলতে খুব কষ্ট হয়।
- যদি জ্বর, শ্বাসকষ্ট বা গলায় ফোলা দেখা দেয়।
- যদি গলায় সাদা বা হলুদ দাগ দেখা দেয়।
গলা ব্যথার লক্ষণ
গলা ব্যথার সাথে অন্যান্য লক্ষণও দেখা দিতে পারে, যেমন:
- গিলতে কষ্ট
- কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন
- জ্বর
- কাশি
- গলায় ফোলা
- গলায় সাদা বা হলুদ দাগ
গলা ব্যথার চিকিৎসা
গলা ব্যথার চিকিৎসা তার কারণের উপর নির্ভর করে। কিছু ঘরোয়া উপায় গলা ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করতে পারে,এখন গলাব্যথা হলে যা করবেন
যেমন:
- গরম তরল পান: মধু মিশ্রিত গরম চা বা সুপ গলাকে শান্ত করে।
- গার্গল করা: লবণাক্ত পানি দিয়ে গার্গল করা গলাকে পরিষ্কার করে।
- বিশ্রাম: কণ্ঠস্বরকে বিশ্রাম দেওয়া গলা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- আর্দ্রতা বৃদ্ধি: একটি হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করে ঘরের আর্দ্রতা বৃদ্ধি করা গলাকে শান্ত করে।
এই ছবিটি মধু মিশ্রিত গরম চা, লবণাক্ত পানি দিয়ে গার্গল করা ইত্যাদি ঘরোয়া উপায় দেখাবে।
যদি গলা ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা অন্যান্য গুরুতর লক্ষণ থাকে, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। ডাক্তার গলা পরীক্ষা করে এবং প্রয়োজনে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে কারণ নির্ণয় করবেন এবং উপযুক্ত চিকিৎসা দেবেন।
গলায় ইনফেকশনের লক্ষণ কি কি?
গলায় ইনফেকশন হলে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এই লক্ষণগুলি ইনফেকশনের ধরন এবং তীব্রতার উপর নির্ভর করে। সাধারণত গলায় ইনফেকশন হলে নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি দেখা যায়:
- গলা ব্যথা: এটি গলায় ইনফেকশনের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ। গলা ব্যথা হালকা থেকে তীব্র পর্যন্ত হতে পারে এবং গিলতে অসুবিধা হতে পারে।
- জ্বর: ইনফেকশনের কারণে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।
- সর্দি: নাক দিয়ে পানি পড়া, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
- কাশি: শুকনো বা কফযুক্ত কাশি হতে পারে।
- গলার টনসিল ফুলে যাওয়া: টনসিল লাল হয়ে যাওয়া এবং ফুলে যাওয়া।
- গলায় সাদা বা হলুদ দাগ: টনসিলের উপর সাদা বা হলুদ দাগ দেখা দিতে পারে।
- লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া: ঘাড়ের লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া।
- মাথাব্যথা: মাথা ব্যথা হতে পারে।
- শরীর যন্ত্রণা: শরীরের বিভিন্ন জায়গায় যন্ত্রণা হতে পারে।
- ক্ষুধামান্দ্য: খাবার খেতে ইচ্ছা না করা।
- ক্লান্তি: শরীরে অবসাদ বোধ করা।
গলায় ইনফেকশনের কারণ:
গলায় ইনফেকশনের অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে, যেমন:
- ভাইরাস: সর্দি, ফ্লু ইত্যাদি ভাইরাস গলায় ইনফেকশন সৃষ্টি করতে পারে।
- ব্যাকটেরিয়া: স্ট্রেপ থ্রোট একটি সাধারণ ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ যা গলা ব্যথা সৃষ্টি করে।
- অ্যালার্জি: কিছু খাবার, ধুলো, পোকামাকড়ের কামড় ইত্যাদি অ্যালার্জি গলা ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে।
কি করলে গলা ব্যথা কমবে?
গলা ব্যথা কমাতে আপনি কিছু ঘরোয়া উপায় ও সতর্কতা অবলম্বন করতে পারেন:
ঘরোয়া উপায়:
- গরম তরল পান করুন: মধু মিশ্রিত গরম চা বা সুপ গলাকে শান্ত করে এবং জ্বালা কমাতে সাহায্য করে।
- গার্গল করুন: লবণাক্ত গরম পানি দিয়ে গার্গল করলে গলা পরিষ্কার হয় এবং ব্যাকটেরিয়া মারা যায়।
- বিশ্রাম নিন: কণ্ঠস্বরকে যতটা সম্ভব বিশ্রাম দিন।
- আর্দ্রতা বৃদ্ধি করুন: একটি হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করে ঘরের আর্দ্রতা বৃদ্ধি করুন।
- মধু চুষুন: মধু গলার জ্বালা কমাতে সাহায্য করে।
- লেবু ও মধু মিশ্রিত পানি পান করুন: লেবু ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এবং মধু অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল।
- আদা চা পান করুন: আদা প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
সতর্কতা:
- ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার করুন: এগুলি গলাকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
- ঠাণ্ডা পানীয় এড়িয়ে চলুন: ঠাণ্ডা পানীয় গলাকে আরও জ্বালাতে পারে।
- অ্যাসিডিক খাবার এড়িয়ে চলুন: লেবু, কমলা ইত্যাদি অ্যাসিডিক খাবার গলাকে আরও জ্বালাতে পারে।
- দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য এড়িয়ে চলুন: কারণ এগুলি গলায় শ্লেষ্মা বাড়িয়ে দিতে পারে।
কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন:
- যদি গলা ব্যথা ৫-৭ দিনের মধ্যে না ভাল হয়।
- যদি গিলতে খুব কষ্ট হয়।
- যদি জ্বর, শ্বাসকষ্ট বা গলায় ফোলা দেখা দেয়।
- যদি গলায় সাদা বা হলুদ দাগ দেখা দেয়।
কখন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে?
গলা ব্যথার জন্য কখন ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত, তা নির্ভর করবে আপনার লক্ষণ এবং অবস্থার উপর। নিচের ক্ষেত্রগুলোতে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন:
- দীর্ঘস্থায়ী গলা ব্যথা: যদি গলা ব্যথা এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে থাকে।
- গিলতে কষ্ট: যদি খাবার বা পানি গিলতে খুব কষ্ট হয়।
- শ্বাস নিতে কষ্ট: যদি শ্বাস নিতে সমস্যা হয় বা শ্বাস নেওয়ার সময় ব্যথা হয়।
- মুখ খুলতে কষ্ট: যদি মুখ খুলতে অসুবিধা হয়।
- উচ্চ জ্বর: যদি জ্বর 101 ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি হয়।
- ঘাড়ে ব্যথা বা শক্ত: যদি ঘাড়ে ব্যথা বা শক্ত অনুভূত হয়।
- কর্ণশূল: যদি কানে ব্যথা হয়।
- সাদা বা হলুদ দাগ: যদি গলায় সাদা বা হলুদ দাগ দেখা দেয়।
- লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া: যদি ঘাড়ের লিম্ফ নোড ফুলে যায়।
- শ্বাসকষ্ট: যদি শ্বাসকষ্ট হয়।
কেন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি?
- গলা ব্যথা অনেক কারণে হতে পারে, যেমন ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, অ্যালার্জি ইত্যাদি। ডাক্তার কারণ নির্ণয় করে উপযুক্ত চিকিৎসা দেবেন।
- কিছু ক্ষেত্রে গলা ব্যথা গুরুতর সমস্যার লক্ষণ হতে পারে, যেমন টনসিলাইটিস, গলায় ক্যান্সার ইত্যাদি।
- ডাক্তার আপনাকে অ্যান্টিবায়োটিক বা অন্যান্য ওষুধ দিতে পারেন যা আপনার ইনফেকশন দ্রুত সারাতে সাহায্য করবে।
ডাক্তার কী করবেন?
- আপনার গলা পরীক্ষা করবেন।
- আপনার লক্ষণ সম্পর্কে জানতে চাইবেন।
- প্রয়োজনে একটি স্ট্রেপ টেস্ট করতে পারেন।
- অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারেন, যেমন রক্ত পরীক্ষা, ইমেজিং টেস্ট ইত্যাদি।
গলা ব্যথা প্রতিরোধ
গলা ব্যথা প্রতিরোধ করার জন্য নিম্নলিখিত ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে:
- হাত পরিষ্কার রাখা: নিয়মিত হাত ধোয়া ভাইরাল সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
- স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ: স্বাস্থ্যকর খাদ্য শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
- ধূমপান পরিহার করা: ধূমপান গলাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং গলা ব্যথার ঝুঁকি বাড়ায়।
- পর্যাপ্ত ঘুম: পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।