১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ছিল পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালি জাতির স্বাধীনতা অর্জনের জন্য সংঘটিত একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। এই যুদ্ধের প্রয়োজনীয়তা ছিল নিম্নরূপ:
স্বাধীনতা অর্জন: পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিরা দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে বঞ্চিত ছিল। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করলেও পাকিস্তানি সামরিক সরকার তা অস্বীকার করে। এর ফলে বাঙালিদের মধ্যে স্বাধীনতার দাবি জোরালো হয়ে ওঠে। ২৫শে মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পর বাঙালিরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
সাম্য ও সমতার প্রতিষ্ঠা: পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিরা পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকদের দ্বারা বৈষম্যের শিকার ছিল। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালিরা স্বাধীনতার পাশাপাশি সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সাম্য ও সমতার প্রতিষ্ঠারও লক্ষ্য অর্জন করে।
জাতীয় ঐক্য ও সংহতির প্রসার: মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিরা এক জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ হয়। এই ঐক্য ও সংহতি বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ: মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি লাভ করে। এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মুক্তিযুদ্ধ ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা। এই যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।