তথ্য প্রযুক্তি কী? তথ্য প্রযুক্তির সুবিধা গুলো জেনে নিন

বর্তমান পৃথিবীটা হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তির পৃথিবী। কথাটা যে সত্যি সেটা খুবই সহজেই প্রমাণ পাওয়া যায়। আজ থেকে এক যুগ আগে কারো কোন তথ্যের প্রয়োজন হলে মানুষের বই খুলে দেখত- এখন আর কেউ সেটা করে না। যখন কারো তথ্যের প্রয়োজন হয় সে কম্পিউটারের সামনে বসে।

বিজ্ঞান বিষয়ক লেখার জন্য তাকে ২০০৪ সালে বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার দেওয়া হয়। তার রচিত গ্রন্থের মধ্যে আমি তমু , বৃষ্টি ঠিকানা প্রজেক্ট নেবুলা নিঃসঙ্গ গ্রহচারী নিঠু ও তার বন্ধুরা ক্রমিয়াম অরণ্য ও দিপু নম্বর টু উল্লেখ্যযোগ্য।

কী বোর্ডে দুই একটা টোকা দেয়, মাওসে কয়েকবার ক্লিক করে। সাথে সাথে তথ্য চোখের পলকে তার কাছে চলে আসে- তথ্যটি পাশে রাস্তা থেকে এসেছে নাকি পৃথিবীর অন্যপাশ থেকে এসেছে সেটা আজকাল কেউ জানতেও চায় না।

জানার প্রয়োজনও নেই। কারণ পুরো পৃথিবীটা এখন সবার হাতের মুঠো চলে  এসেছে। এই অসাধারণ ব্যাপারটি সম্ভব হয়েছে  তথ্য প্রযুক্তিএকটা  বিপ্লবের কারণে। তথ্যপ্রযুক্তি নামে সারা পৃথিবীতে যে ঘটেছে তার পিছনে যে যন্ত্রটি কাজ করছে তার নাম ডিজিটাল কম্পিউটার।

ভেতরটা ইলেকট্রনিক প্রক্রিয়া করার জন্য সম্ভাব্য সব সিগন্যাল ব্যবহার করা হয় বলে এর নাম ডিজিটাল কম্পিউটার  আমাদের বর্তমান পৃথিবী এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এখন খুব কম লোকই খুঁজে পাওয়া যাবে যার জীবনকে কোন না কোন ভাবে কম্পিউটার স্পর্শ করেনি।

হিসাব নিকাশ করতে কম্পিউটারের দরকার হয়, ব্যবসাপাতিতে কম্পি উটার দরকার হয়, এমনকি শিল্প সাহিত্য বা বিনোদন করতেও আজকাল কম্পিউটারের দরকার হয়। ১৯৭৭ সালে ভয়ে জার ১ আর ২ নামে।

দুটো মহাকাশযান  সৌর জগতে তাদের যাত্রা শুরু করেছিল।সৌরজগৎ পাড়ি দেবার সময় মহাকাশযান দুটো গ্রহ গুলোর পাশে দিয়ে গিয়েছে এবং যাবার সময় সেই গ্রহগুলো সম্প র্কে পাঠিয়েছে। ছোট একটি যন্ত্র হয়েও পৃথিবীর গবেষকদের কাছে সবচেয়ে বেশি তত্ত্ব পাঠানোর  কৃতিত্বটুকু  ভয়েজার মহাকাশযান গুলোকে দেওয়া হয়।

এই চমকপ্রদো কৃতিত্ব টুকুর পিছনে ছিল একটা কম্পিউটার,যেটি ভয়েজার মহা কাশ যানকে সৌরজগতে বেতর দিয়ে উড়িয়ে নিয়ে  গেছে।

তথ্যসংগ্রহ করেছে এবংনিখুঁতভাবে সেই তথ্য পৃথিবীতে পাঠিয়েছে। কেউ যেন মনে না করে যে হয়ে যার মহাকাশযানের কম্পিউটার বুঝি ছিল অসাধারণ কোন কম্পিউটার। বস্তুত সেগুলো ছিল খুবই সাধারণ  কম্পিউটার ,সত্যি কথা বলতে কি আমরা এখন যে কম্পিউটার ব্যবহার করি তার তুলনায় ১৯৭৭ সালে সেই কম্পিউটার ছিল প্রায় একটা খেলনার মতো ।

তারপরেও সেটিও সাধ্য সাধন করেছিল, কারণ বিজ্ঞানীরা পৃথি বীতে বসে যখন যেভাবে প্রয়োজন তখন সেভাবে  প্রো গ্রাম করে কম্পিউটারটিতে পাঠাতেন।

কম্পিউটার টি ও তাই যখন যেরকম প্রয়োজন সেভাবে তার দায়িত্ব পালন করত। অন্য যে কোন যন্ত্র থেকে সে কারণে কম্পিউটার আলাদা এবং এটাই কম্পিউটারের সবচেয়ে বড় শক্তি। একটা কম্পিউ টারকে কোন কাজে ব্যবহার করা হবে সেটা নির্ভর করে মানুষের ওপরে।

একজন মানুষ যত সৃজনশীল হবে কম্পিউটা রের কাজকর্ম হবে তত চমক প্রদ। কম্পিউটার ব্যবহার করে যে অসংখ্য কাজ করা যায় তার একটি হচ্ছে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, যেখানে কম্পিউটার কে একটা সাথে  জুড়ে দেওয়া হয়।

কেউ যেন মনে না করে, এতে শুধু একটা ঘরের কয়েটা  কম্পিউটার কিংবা। একটা প্রতিষ্ঠানে কয়টা কম্পিউটার জুড়ে দেওয়া হয়। আসলে সারা পৃথিবীর লক্ষ্য লক্ষ্য কম্পিউটারকে একসাথে জুড়ে দিয়ে বিশাল একটা নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছে।

সেটা ঠিকভাবে করার জন্য তথ্য বিনিময় ৭২যোগাযোগের নতুন নতুন প্রযুক্তি গড়ে উঠেছে। তার একটি হচ্ছে ফাইবার অপটিক যেখানে চুলের মতো শুকনো একটা কাচের টন্তুর ভেতর দিয়ে পাঠানো যায়। সবচেয়ে চমকপ্রদ ব্যাপার হচ্ছে তথ্যটা বৈদ্যুতিক সংকেত হিসেবে যায় না। 

সেটা যার আলো হিসেবে। সেই আলো কিন্তু দৃশ্যমান আলো নয় । সেটি  অবলাল আলো,আমরা তাই চোখে সেটা দেখতে ও পাই না। ফাইবার অপটিক প্রযুক্তির সাথে ব্যবহার করার জন্য বড় রকমারি প্রযুক্তি গড়ে উঠেছে এবং সবকিছু মিলিয়ে এখন রয়েছে পৃথিবীর জোড়া বিশাল কম্পিউটার নেটওয়ার্ক।

সারা পৃথিবীর লক্ষ লক্ষ কম্পিউটার একসাথে জুড়ে দেওয়া র পর সেটা দিয়ে অনেক কিছুই কথা সম্ভব । কিছু করা হয়ে ছে কিছু করা হচ্ছে কি করা যাবে সেটা নিয়ে পৃথিবী সৃজন শীল মানুষেরা সব সময় চিন্তা করছে।

পৃথিবী ঘোড়া ভিসা নেটওয়ার্ক এর একটা ব্যবহারের কথা আমরা মোটামুটি সবাই শুনেছি এটি হচ্ছে ইন্টারনেট।সাধারণ তথ্যের জন্য এখন ইন্টারনেটে কোনো বিকল্প  নেই। মানুষ তার দৈনন্দিন জীবনের সব খবর টবর ইন্টারনেট থেকে নেয়।

শুধু সে বাস ট্রেন বাপ প্লেনের সময়সূচী ইন্টারনেটে পাওয়া যায় তা নয় সেগুলোর টিকেটও ইন্টারনেটে কেনা যায়। পৃথি বীর বেশিরভাগ মানুষ এখন সত্যিকারের খবরের কাগজ না পড়ে ইন্টারনেটে খবর পড়ে। গবেষণার জার্নাল এখন ইন্টার নেটে প্রকাশ করা  হয়।

কেনাকাটার সবচেয়ে বড় পদ্ধতি এখন ইন্টারনেট ঘিরে গড়ে উঠেছে। বিজ্ঞাপন বা নির্বাচনে প্রচারণার জন্য এখন ইন্টারনেটের চাইতে ভালো কোন উপায়  নেই। অর্থাৎ এক কথায় বলা যায় সরল কিংবা জটিল সব কিংবা কঠিন গুরুত্বপূর্ণ কিংবা তুচ্ছ সব কাজই এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে করা হচ্ছে।

যত দিন যাচ্ছে এর ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং মোটামুটি   নিন্দিত্ততভাবে বলা যায়, যারা ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন তারা জোর কদমে ছুটে বলা পৃথিবীর সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না।

দেখতে দেখতে তারা পিছিয়ে পড়ছে। পৃথিবী জোড়া লক্ষ লক্ষ কম্পিউটার নেটওয়ার্কের উপর নির্ভর করে। শুধু যে ইন্টারনেটে তথ্য বিনিময় করে উঠেছে তা নয়, বিজ্ঞানী এবং গণিতবিদরা সেটাকে গবেষণার কাজে ব্যবহার করে ন।

একটা ছোট কম্পিউটার ছোট একটা কাজ করতে পারে কিন্তু লক্ষ লক্ষ কম্পিউটারকে যদি এক সাথে করা হয় তা হলে তারা বিশাল কাজ করে ফেলতে পারে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রাইম সংখ্যায় ভাবে খুঁজে বের করা হয়েছে। কম্পিউ- টার যখন ব্যবহার করা হয়।

না তখন অলস হয়ে বসে না থেকে বিজ্ঞানী কিংবা গণিতবিদদের বড় বড় সমস্যা সমাধানের কাজে লেগে যেতে পারে।এটি হচ্ছে মাত্র একটি উদাহরণ আরো অনেক উদাহরণ আছে এবং সবচেয়ে বড় কথা ভবিষ্যতে আরো সুন্দর আরো চমকপ্রদ উদ উদাহরণ আসবে সে ব্যাপারে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই।

কম্পিউটার কথাটি বলা হলেই আমাদের চোখের সামনে কম্পিউটারে যে ছবিটি বেছে ওঠে তা হলো- টেলিভিশনের মত মনিটর, কিবোর্ড, চৌকনো বাক্সের মতো সি পি ইউ। কিন্তু সেটাই কম্পিউটার একমাত্র রূপ নয়।

আজকাল ব্যাটারি চালিত ল্যাপটপ চলে  এসেছে। সেটা ব্যাগে নিয়ে চলাফেরা করা যায় । আবার বিশাল আকারের সুপার কম্পিউটার রয়েছে যেটাকে শীতল রাখার জনেই রীতিমতো দক্ষযজ্ঞের আয়োজন করতে হয় । যে রকম বড় কম্পিউটা র রয়েছে ঠিক সেরকম ছোট কম্পিউটার রয়েছে।

যেগুলো মোবাইল টেলিফোন ক্যামেরা ফ্রিজ ওভেন কিংবা লিফট এর মত দৈনন্দিন ব্যবহারই জিনিসের মাঝে বসানো আছে। আমরা আলাদাভাবে কম্পিউটারকে দেখি না, কিন্তু সেটা আমা দের চোখের আড়ালে অসংখ্য যন্ত্রপাতি।

মোহাম্মদ জাফর ইকবালের জন্ম ১৯৫২ সালে সিলেট শহরে । তার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা জেলায়। তিনি হুমায়ুন আহ মেদ অনুজ।তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের পড়াশোনা করেছেন।

যুক্তরাস্টে দীর্ঘ ১৮ বছর থেকে তিনি দেশে ফিরে শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে যোগ দেন। তিনি শিশু কিশোরদের জন্য লেখালেখি  করেন।

কে সচল করে রাখছে। এক সময় টেলিফোন ছিল একটা বুদ্ধিহীন কথা বলা এবং শোনার যন্ত্র।এখন আর তা নয় মোবাইল টেলিফোন রীতিমতো বুদ্ধিমান যন্ত্র । এমন অনেক মোবাইল টেলিফোন আছে সেটা একই সাথে টেলিফোন রেডিও টেলি ভিশন ক্যামেরা ট্যাব রেকর্ডার ক্যালকুলেটর জিপিএস এবং ছোটখাটো একটা কম্পিউটার।

আমরা এটা হাতে নিয়ে যেখানে খুশি যেতে পারি , যে কোন রকম তথ্য সংগ্রহ করতে পারি । তথ্য সংরক্ষণ করতে পারি এবং তথ্য বিনিময় করতে পারি।

কিছুদিন আগেও সেটা অল্প বিজ্ঞানের মত ছিল এখন পুরোপুরি বাস্তব। যারা ইতিহাস পড়েছে তারা জানে। আজ থেকে প্রায় ২০০ বৎসর আগের পৃথিবীতে শিল্প বিপ্লব হয়েছিল।যারা সেই শিল্প বিপ্লবে অংশ নিয়েছিল তারা পৃথিবীটা কে শাসন করেছ- অনেক সময় শোষণ করেছে।

এ মুহূর্তে বি শিল্প বিপ্লবেরে মতো গুরুত্বপূর্ণ একটা বিপ্লব হচ্ছে যেটাকে আমরা বলছি তথ্যপ্রযুক্তি বিপ্লব। বলার অপেক্ষা রাখে না , যারা এই তথ্য প্রযুক্তির বিপ্লবে অংশ নেবে তারা পরবর্তী পৃথিবী কে শাসন করবে।

আমরা শিল্পবিপ্লবে  অংশ নিতে পারিনি বলে বাইরের দেশ আমাদের শাসন শোষণ করছে। আমরা আবার সেটা হতে দিতে পারি না। এই নতুন তথ্য প্রযুক্তির বিপ্লবে আমাদের অংশ নিতেই  হবে।

সে দায়িত্বটা পালন করতে হবে নতুন প্রজন্মকে যারা নতুন বাংলাদেশের  নেতৃত্ব  দেবে জ্ঞানে বিজ্ঞানে এবং প্রযুক্তিতে তারা ঠিকভাবে লেখাপড়া করবে অন্য সব বিষয়ের সাথে।

সাথে গণিত এবং ইংরেজিতে ও সমান দক্ষ হয়ে  উঠবে, কম্পিউটারের সাথে পরিচিত হবে। শেখার একটা মাধ্যমে হিসেবে ব্যব হার করবে , নিজেদের সৃজনশীল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে। তারা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ বিজ্ঞানী এবং প্রযুক্তিবিদ হিসে বে গড়ে ওঠে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে তুলতে সাহায্য করবে ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *